সত্যি বলতে আমাদের দেশের আইন-শৃংখলার অবস্থা এবং মানুষের নীতিবোধ খুবই বাজে। খুন, ধর্ষণ, ঘুষ, প্রতারণা, অপ রাজনীতি এগুলো নিত্যদিনের ঘটনা। তবে আমাদের বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে সামাজিক বন্ধন নিয়ম রীতি বিদ্যমান রয়েছে সেটা বিশ্বের অনেক দেশের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। এই দেশ থেকে বাংলাদেশের শেখার অনেক কিছুই আছে। শিক্ষা ব্যবস্থা, যাতায়ত ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্হা অনেক অনেক উন্নত। যেমন, এদেশে করোনা নিয়ন্ত্রন একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে।সাপ্তাহিক পূর্ব বাংলায় একটি সাক্ষাৎকারে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।ডাঃ মিজান আনোয়ারারার বারহাইন ইউনিয়নের কৃতি সন্তান।পেশায় একজন চিকিৎসক। তিনি আরো বলেন- মানবতার সেবাই আমার মুখ্য উদ্দেশ্য তবে গ্রামে একটি স্কুল করতে চাই।সাক্ষাৎকারটি নিম্নে পত্রস্হ করা হলো।

রবিন- আসসালামু আলাইকুম

ডাঃ মিজান- ওয়ালাইকুম সালাম

রবিন- কেমন আছেন আপনি?
ডাঃ মিজান আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি
রবিন- আপনি কতদিন ধরে বিদেশে আছেন? বিদেশ যাপন আর মাতৃভূমিতে থাকা আপনিই ভালো বুঝবেন- দু’টোর ফারাক কেমন?
ডাঃ মিজান বিদেশে আছি প্রায় চার বছর হচ্ছে। এখানে খুব ব্যস্ততায় সময় কেটে যায়, অবসর পেলে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন সাগর পাড়ে যাই, পার্কে যাই। কিন্তু, মাতৃভূমিতে থাকলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা, পরিবার এর সদস্য দের সাথে আড্ডা, আত্ত্বীয় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, তাদের ঘরে রান্না করা বিভিন্ন ধরনের খাবার এবং ঈদ সালামি এগুলো প্রায়শই হতো, যা খুব মিস করি। বিশেষ করে ঈদের আনন্দ খুব খুব মিস করি।
রবিন- আমাদের দেশের আইন-শৃংখলা, নীতিবোধ, সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে বিদেশীরা কী কিছু শিখতে পারে? যদি বলি ওই দেশ থেকে আমাদের শিক্ষণীয় কী আছে?
ডাঃ মিজান- সত্যি বলতে আমাদের দেশের আইন-শৃংখলার অবস্থা এবং মানুষের নীতিবোধ খুবই বাজে। খুন, ধর্ষণ, ঘুষ, প্রতারণা, অপরাজনীতি এগুলো নিত্যদিনের ঘটনা। তবে আমাদের বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যে সামাজিক বন্ধন নিয়ম রীতি বিদ্যমান রয়েছে সেটা বিশ্বের অনেক দেশের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। এই দেশ থেকে বাংলাদেশের শেখার অনেক কিছুই আছে। শিক্ষা ব্যবস্থা, যাতায়ত ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্হা অনেক অনেক উন্নত। যেমন, এদেশে করোনা নিয়ন্ত্রন একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে।
রবিন- বারখাইন ইউনিয়নে জন্ম নেয়ায় আমরা আপনাকে নিয়ে গর্বিত। এই ইউনিয়নকে নিয়ে আপনার ভাবনা কী?
ডাঃ মিজানঃ আমি জানিনা সম্ভ্যব হবে কিনা, তবে আমার ইচ্ছা আছে আমাদের গ্রামে একটি বিদ্যালয় দেয়ার। যদিও সেখানে বেশ কিছু বিদ্যালয় আছে, তবে খুব কম সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভালো রেজাল্ট করে বের হয়ে ভালো অবস্থানে যায়। আমি চেষ্ঠা করবো ভালোমানের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতে। হংকং এর উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার কিছুটা হলেও প্রতিফলন করার চেষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ।
রবিন- বিদেশে আপনি যেভাবে দিন যাপন করছেন, ওখান থেকে আমাদেরকে কী বলার আছে, যা শুনলে আমরা শিক্ষা নিতে পারব?
ডাঃ মিজান- আসলে এই প্রশ্নের উত্তর ইতি মধ্যেই হয়ে গিয়েছে মনে হয়। তারপরও একটি বিষয় হতে পারে যে, যতটুকু সম্ভব স্ত্রী, সন্তান কে সময় দেয়া। বিশেষ করে বাচ্চারা খুব গভীরভাবে আসেপাশের সবকিছু অনুকরণ করে। তাই, বাচ্চাদেরকে আদর্শবান করে গড়ে তুলতে মা-বাবার ভূমিকা অনেক। আমাদের সন্তান কে আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনই চেষ্ঠা করছি সেই শিক্ষা গুলো দিতে। আর আমি এখানে বসেও আমার মা-বাবা, এবং বোনদের সাথে সবসময় যোগাযোগ করি। আমার মনে হয়, আব্বু আম্মু এতে কিছুটা হলেও মনে করে যে, ছেলে আমাদের মধ্যেই আছে।
রবিন- আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? যা বললে আমরাও আপনার পাশে থাকবো কিংবা অনুপ্রেরণা যোগাতে পারবো।
ডাঃ মিজান- আমি একজন ডাক্তার, মানবতার সেবাই আমার মুখ্য উদ্দেশ্য।
রবিন- আপনার সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত চাই। সাথে দুর্লভ ছবিও।
ডাঃ মিজান- প্রাইমারিঃ তৈলারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৬-৮ম শ্রেনীঃ তৈলারদ্বীপ বারখাইন এর্শাদ আলী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়। ৯ম-এস এস সিঃ জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্কুল, খুলনা। এইচ এস সিঃ চট্টগ্রাম সরকারি হাজি মোহাম্মদ মহসীন কলেজ, চট্টগ্রাম। এম বি বি এসঃ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ। বর্তমানে পি এইচ ডি গবেষক হিসেবে হং কং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দেশ বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে ৭ টি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে।
শেয়ার করুনঃ