আমাদের প্রিয় মায়ের মাতৃভাষা বাংলা আমাদের কাছে খুবই পবিত্র সম্মান ও মর্যাদাকর। পবিত্র এই মাতৃভাষা বাংলা চর্চার মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই ভাষার সম্মান ও মর্যাদা তুলে ধরতে হবে। ভাষার জন্য পৃথিবীতে একমাত্র বাঙালীরাই রাজপথে রক্ত ও প্রাণ বিসর্জন দিয়ে মায়ের ভাষা বাংলাকে রক্ষা করেছে। অমর একুশ সেই মাতৃভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক ইতিহাস। মাতৃভাষা মধুর হোক সকল আঙ্গিনায় এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ সারাদিনব্যাপী বিশাল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে মাতৃভাষা বাংলাকে প্রকৃত চর্চায় বাঙ্গালী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এবং বর্তমান প্রজন্মের সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে “মাতৃভাষা মধুর হোক সর্বআঙ্গিনায়” এই শ্লোগানের উপর অমর একুশের ভাষা শহীদদের স্মরণে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র ও চান্দগাঁও সানোয়ারা আবাসিকস্থ আনন্দ মাল্টিমিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের যৌথ আয়োজনে চট্টগ্রামে বঙ্গ অসম উৎকল ২য় আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৭ অনুষ্ঠিত হল। দেশ বিদেশের কবি সাহিত্যিক গবেষকদের উপস্থিতিতে দিনব্যাপী সম্মেলনে ১ম, ২য় ও ৩য় পর্বে পৃথক পৃথক ভাবে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ হোসেন মুরাদ, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও লেখক মোঃ কামাল উদ্দিন ও চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি সোহেল মুহাম্মদ ফখরুদ-দীন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিখিল ভারত-বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখার সভাপতি ও ভারতের রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার প্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষক ড. সুশীল ভট্টাচার্য। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আনন্দ মাল্টিমিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ ইতিহাস গবেষক মুহাম্মদ ইউনুচ কুতুবী। সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে আলোচনায় অংশনেন প্রখ্যাত কবি ও ছড়াকার সতীশ বিশ্বাস, কবি ও গীতিকার রণজিৎ যশ, সমাজসেবী ও সাহিত্যিক সদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, মরমী সাধক ও শিল্পী নারায়ন কর্মকার, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও কবি মাসুম আহমেদ রানা, কবি ও সাহিত্যিক দীনেশ মন্ডল, কবি-সাহিত্যিক ও গবেষক লুৎফুর রহমান, ইতিহাসবিদ এবিএম ফয়েজ উল্লাহ, কবি ও কথাসাহিত্যিক দীপালী ভট্টাচার্য, কবি মেহেরুন্নেছা রশীদ, প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শিশির বড়–য়া, মরমী কবি ও ইতিহাস গবেষক এস এম সিরাজউদ্দৗলা, সাংবাদিক একেএম আবু ইউসুফ, অর্থনীতিবিদ ও লেখক আবদুর রহিম, কবি আসিফ ইকবাল, স্কাউট লিডার ও শিক্ষাবিদ শাহনেওয়াজ আলী মির্জা, ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক এস এম ওসমান, মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক অমর কান্তি দত্ত, আনন্দ মাল্টিমিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও চট্টগ্রাম নটরডেম স্কুল এন্ড কলেজের সহ-পরিচালক মিসেস ফারজানা নাসরিন, সমাজসেবক ডা. শাহজাহান, সিনিয়র শিক্ষক ভবতোষ সরকার, রাজীব দত্ত, মৌ দত্ত, রোজিনা আকতার ও তানজিন জাহান মেরিন, সৈয়দ সিবলী সাদিক কফিল, সোহেল তাজ, মোহাম্মদ নুরুল আলম, মোঃ আবদুল হালিম, সফিকুল ইসলাম চৌধুরী, স্বপন সেন, বাউল আবদুর রশিদ, হেকিম সিহাব উদ্দিন চৌধুরী প্রমূখ। ঐতিহাসিক ভাষার এই সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য ভারতীয় প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক কবি ড. সুশীল ভট্টাচার্য বলেছেন, “মাতৃভাষা বাংলার জন্য পৃথিবীতে বাঙালিরাই একমাত্র জাতি যারা মায়ের প্রিয়ভাষার রক্ষার জন্য হাসতে হাসতে রাজপথে রক্ত দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। জান্তা পাকিস্তানিদের অস্ত্রের বিরুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালি মায়ের দামাল ছেলেরা কালো রাজপথকে রক্তাক্ত লাল করেছে, তবুও প্রিয় মায়ের বাংলা ভাষা কেড়ে নিতে দেন নি। বাঙালি জাতি হিসেবে এর চাইতে গর্বের আর কি হতে পারে? তিনি আরো বলেন, দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, আজকে বাংলা ভাষাকে নিয়ে বাঙালির ছেলেরাই কটাক্ষ করছে। এটি শুধু দুঃখের নয়, লজ্জারও বটে। আমাদের উচিত প্রত্যেক মাতৃভাষাকে স্ব স্ব অবস্থানে সম্মানের সহিত মর্যাদা অধিষ্ঠিত করা। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মায়ের ভাষাকে মর্যাদার সহিত প্রাধান্য দিতে হবে। বাংলা সাহিত্যকে মর্যাদা ও শ্রীবৃদ্ধির জন্য বাংলা মায়ের প্রকৃত ভাষাকে আরো সুন্দরভাবে এই প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দিতে হবে। তিনি আরো বলেছেন বঙ্গ অসম উৎকল আন্তর্জাতিক এ ভাষা সম্মেলন বাঙালি জাতিকে আজ সমৃদ্ধির পথে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সূতিকাগার মাস্টারদা সূর্যসেনের প্রিয় চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র ও আনন্দ মাল্টিমিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এই আয়োজন সত্যিকার প্রশংসার দাবি রাখে। আজ বাংলাদেশের এই চট্টগ্রামে ১১জন ভারতীয় কবি সাহিত্যিকদের আগমনে বাংলা ভাষা সম্মেলনকে শ্রীবৃদ্ধি করেছে। তিনি আরো বলেন, বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরে বাংলার স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালিকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা দান করেছেন। আমাদের এই বাংলা ভাষায় সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে কবি সাহিত্যিকদের নিরলস পরিশ্রম ও ভূমিকা রাখতে হবে”। ঐতিহ্যমন্ডিত আনন্দ মাল্টিমিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এই আঙিনায় দেশী-বিদেশী অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বরণের পর প্রথমে চা-চক্র, এর পর বাংলাদেশ ও ভারতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সম্মেলনের শুভ সুচনা ও উদ্বোধন ঘোষনা করা হয়। নাতিশীতোষ্ণ বাংলাদেশের শীতের শেষ লগ্নে এবং ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আমাদের চট্টগ্রাম শহরের এই সম্মেলনের প্রশংসা করে অতিথি বক্তব্য রাখেন। সমগ্র পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষা বাংলা আন্দোলন আমরা বাঙালী সমাজ নন্দিত মানুষের কাহিনী তৈরি করেছি। অমর একুশে ফেব্র“য়ারি আমাদের সেই অর্জনকে বারেবারে সামনে নিয়ে আসে। আমাদের এই অর্জন ও ভাষা সাহিত্য বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা এই সম্মেলন সফল একটি উদ্যোগ। চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র আনন্দ মাল্টিমিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে এ আয়োজনের স্থান নির্ধারণ ও সার্বিক সহযোগিতার কারণে এই সম্মেলন সফল হয়েছে। মূল্যবান বাংলা ভাষার উপর আলোচনা, সাহিত্য সংস্কৃতি, কবিতা পাঠ ও প্রাচীন বিলুপ্ত পুঁথিপত্র পাঠের মাধ্যমে আমাদের বাঙালির সাহিত্য সংস্কৃতি আজ নতুন করে জানতে পারলো এই প্রজন্মের সন্তানরা। এই ইতিহাস ভুলার নয়। বাস্তব জীবনের আলোকে আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ছিলাম। কর্মজীবনে শিক্ষকতা পেশাকে গ্রহণ করেছি। আজকের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে আমি সেই ছাত্র জীবনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নতুন করে আবার সবার সম্মুখে তুলে ধরার একটি প্রচেষ্টা হল এই সম্মেলন। আজকে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম (অসমীয়), উড়িষ্যা (উৎকল) এই মাতৃভাষাগুলো রক্ষায় সম্মিলিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের নাম বঙ্গ অসম উৎকল সম্মেলন। বাংলাদেশে ইতিপূর্বে এই সম্মেলন চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের আয়োজনে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল নগরীর ঐতিহাসিক প্রত্যাশী অডিটরিয়ামে। এই সম্মেলন দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রাম আবার। পৃথিবীতে হাজারো জাতির হাজারো ভাষা রয়েছে। আবার এমন পাণ্ডিত্যপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ আছে যাঁদের বিভিন্ন ভাষার উপর দক্ষতা আছে। কিন্তু মনের ভাব মাধুর্যের সাথে প্রকাশ করতে পারে মাতৃভাষার মাধ্যমে। মানুষের সাথে মাতৃভাষার অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে নাডির টান। মানুষের অস্তিত্বের তিনটি পাথেয় হল মাতৃভাষা, দেশের ভাষা, জাতির ভাষা। আর মানুষের অন্যতম অধিকার মাতৃভাষার অধিকার আর এ অধিকার হচ্ছে স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার, নিজের মত কথা বলার অধিকার, জানার অধিকার, বুঝার অধিকার, বুঝাবার অধিকার। তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে মাতৃভাষার ব্যবহারকে মাধুর্য্য করে তুলে প্রতিষ্ঠিত করা প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই আমাদের অবগত হতে হবে মাতৃভাষা সম্পর্কে। ভাষার বিভিন্ন পণ্ডিতগণ বিভিন্নভাবে মাতৃভাষার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা পর্যালোচনা করে বলা যায় মায়ের বুকের দুধ পান করতে করতে মায়ের মুখ থেকে সে ভাষা শিখে মনের ভাব আদান-প্রদান করে বন্ধুবান্ধব, পাড়াপড়শি, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারি তা হচ্ছে মাতৃভাষা অর্থাৎ মায়ের ভাষা। সব ভাষার চেয়ে আপন ভাষা। এ ভাষাতে প্রত্যেকের তার নিজের চিন্তা, চেতনা, ভাবনা সহজ ও সুবিন্যস্তভাবে অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারে। তাইতো ভাষা পণ্ডিত ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ বলেছেন, “মাতৃভাষা মাতৃস্তন্যের ন্যায়। মায়ের স্তন্যদুগ্ধে মাতৃভাষার ভাব দোহন করে মানব জাতি তার মানসিক পুষ্টি লাভ করে।” শিশুর জন্মের পর থেকে যে ভাষার সঙ্গে তার পরিচয় যে ভাষার মাধ্যমে পরিবেশের প্রতিটি স্তরে তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে সে ভাষায় মিশে আছে তার রক্ত মাংসের সাথে। আমরা নিজের জীবনের যোগ্যতা, দক্ষতা, সফলতা, নৈতিক গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব ও চিন্তাধারাকে বিকশিত করতে পারি মাতৃভাষার মধ্য দিয়ে। সার্বিক অর্থে মাতৃভাষার মাধ্যমেই সর্বক্ষেত্রে নিজের হৃদয়বৃত্তকে প্রকাশ করতে পারে। আর মায়ের কাছ থেকে এ ভাষার সূচনা হয় বলে মায়ের সাথে মাতৃভাষার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য।
মহাকবি কায়কোবাদের ভাষায়,
“সব ভাষা মোর মায়ের পাছে
আমার মায়ের মত এত মধুর
কোন ভাষা আর ধরায় আছে।”
যে কোন দেশের শিল্প সংস্কৃতি সভ্যতা ও সাহিত্যের বিকাশ ঘটে, বিকাশ ঘটে সে দেশের মাতৃভাষার মাধ্যমে। তাই মাতৃভাষাই একটি দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। দেশ, জাতি ও সভ্যতা বিকাশের ক্ষেত্রে মাতৃভাষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মাতৃভাষার গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, “আমাদের মধ্যে যাহা কিছু অমর এবং আমাদিগকে যাহা কিছু অমর করিবে, সে সকল মহাশক্তিকে ধারণ করিবার, পোষণ করিবার, প্রকাশ করিবার এবং সর্বত্র প্রকাশ করিবার একমাত্র উপায় সে মাতৃভাষা।” মাতৃভাষা চর্চা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলে। সভ্যতা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে উন্নত করে এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের ক্ষেত্র সমৃদ্ধ করে। অন্যান্য ভাষায় রচিত বইপুস্তক, জ্ঞান-বিজ্ঞান সাহিত্যের সাথে পরিচয় ও পরিচর্যার পদক্ষেপ সৃষ্টি করে। মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশের শ্রেষ্ঠ উপাদান হচ্ছে মাতৃভাষা। কবি তার কবিতার ছন্দ, সাহিত্যিকের সাহিত্যের মাধুর্য্যপূর্ণ ভাষা, লেখক তার রুচিশীল লেখনী পাঠকের কাছে মজাদার (মাধুর্যপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য) করে লিখতে পারেন মাতৃভাষার মাধ্যমে। মাতৃভাষা হচ্ছে নিজের কথা, বার্তা, চিন্তা চেতনা, ভয়-ভালোবাসা ও কল্পনার ভাষা। এ ভষার মাধ্যমেই কেবল নিজেকে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ (করতে পারে) করা যায়। প্রত্যক্ষ বাস্তবতার আনন্দ পাওয়া যায়, প্রকৃত ও সত্যকে অনুভব করা যায়। আত্মবিশ্বাসী হওয়ার শক্তি যোগায়। একটি জনগোষ্ঠীকে মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ রাখার প্রচণ্ড শক্তি রাখে মাতৃভাষা। মানুষের বুদ্ধিদিপ্তকে চিন্তাশক্তিতে রূপান্তর করতে পারে মাতৃভাষা। এ ভাষার প্রতি রয়েছে মানুষের হৃদয় ছোঁয়া আবেগ। এ আবেগই মানুষকে সফলতা এনে দিতে পারে। মাতৃভাষার প্রেরণাই আমাদেরকে উপহার দিয়েছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা। বিশ্বে একমাত্র উদাহরণ মাতৃভাষাকে রক্ষা করার জন্য বাঙালিরা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, শহীদ হয়েছে। যা জাতির জন্য এক বিরাট গৌরব। আর এ গৌরবই মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। যা সারা বিশ্বে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। বর্তমানে আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় এসে ঐতিহ্য পদদলিত হয়ে মাতৃভাষা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। মাতৃভাষা ধ্বংস হওয়ার মানে জাতি ধ্বংস হওয়া, ঐতিহ্য ধ্বংস হওয়া। এ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের ঐতিহ্যকে আমাদের ধরে রাখতে হবে। আমরা যে যেখানে থাকি যে স্তরে থাকি, যে অবস্থানে আছি, সে স্তরে সে অবস্থানে মাতৃভাষাকে সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে মাতৃভাষাকে আরো বেগবান করে তুলতে হবে। সর্বক্ষেত্রে মাতৃভাষার প্রচলন করতে হবে। সর্বশেষে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি সকল আঙিনা ভরে উঠুক মাধুর্য্যপূর্ণ মাতৃভাষা।

শেয়ার করুনঃ