৩ মে ২০২৪ / ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১১:৪২/ শুক্রবার
মে ৩, ২০২৪ ১১:৪২ অপরাহ্ণ

ষড়যন্ত্র মোকাবিলার দায়িত্ব ছাত্রলীগকেই নিতে হবে : আব্দুর রহমান

     

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলার দায়িত্ব ছাত্রলীগকেই নিতে হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের সামনে এখন লক্ষ্য একটাই বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলের সামান্যতম অস্তিত্ব এই বাংলার মাটিতে না রাখা। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগ কতৃর্ক আয়োজিত ‘১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জীবনের উপর ১৯ বার হামলা হয়েছে। লক্ষ্য একটাই তাকে চিরতরে বিদায় করে দেয়া। তারই একটি ২১শে আগস্ট। এই হামলায় তারেক জিয়ার হুকুমে গ্রেনেড জ্বালিয়েছেন মুফতি হান্নান। হান্নান আক্ষেপ করে বলেছে তারেকের হুকুমেই গ্রেনেড হামলা হয়েছে। তার হলো যাবজ্জীবন, আমার হলো ফাঁসি! হায় বিচার। ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেককে বাংলার মাটিতে ফিরিয়ে এনে তার ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। সেই লড়াই ছাত্রলীগকে করে যেতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অস্ত্রের রাজনীতি নয় আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী উল্লেখ করে আব্দুর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল, বিএনপি নামে কোনো অশুভ রাজনৈতিক শক্তি যেন না থাকে সেজন্য ছাত্রলীগকে নতুন করে প্রস্তুত হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই- জাতির জনকের খুনের সঙ্গে জিয়া শুধু জড়িতই নন বরং খুনের পরিকল্পনাও ছিল তারই। তার কাছে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের পাঠানো চিঠি থেকে সে কথা আজ স্পষ্ট প্রমাণিত। আব্দুর রহমান বলেন, ৭৫-এ জাতির পিতার হত্যার বিচারের জন্য আমরা সংগ্রাম করেছিলাম। যতদিন পিতার খুনিদের বিচার এই মাটিতে না হবে ততোদিন আমরা ঘরে ফিরে যাব না, যাই নাই। আব্দুর রহমান বলেন, ১৯৭৪ সালে কৃত্রিম দুুর্ভিক্ষ তৈরী করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কাছে গিয়ে ছিলেন। তিনি তখন বাংলার মানুষের জন্য সাহায্য চেয়ে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি আমার বাংলার মানুষকে খাদ্য দাও, আমার বাংলার মানুষকে তুমি সাহায্য কর, আমার বাংলার মানুষকে তুমি কাপড় দাও। তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বলেছিলেন, শেখ মুজিব তোমার বাংলার মানুষকে খাদ্যে ও কাপড়ে পরিপূন্ন করে দেব। তোমার বাংলার মানুষকে অর্থ দিয়ে ভরে দেব। শুধু মাত্র আমার একটি অনুরোধ তোমাকে রাখতে হবে। তোমার সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আমার সামরিক বাহিনীর ঘাটি তৈরীর ব্যবস্থা করে দাও। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার বাংলার মানুষ গরীব হতে পারে, কিন্তু তুমি মনে রেখ, আমার বাংলার দামাল ছেলেরা নয় মাস যুদ্ধ করে এদেশকে স্বাধীন করেছে। আমার বাংলার ছেলেরা বেঁচে থাকতে কোনো দিনও সম্ভব না। এক ইঞ্চি মাটিও তোমাদের মাঝে তোলে দিতে পারি না।’ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমেরিকার সেই ষড়যন্ত্র, সেই দিন পাকিস্তানের পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র সব কিছু মিলে ‘৭৫সালের ১৫ আগস্টের আমার পিতার লাশ ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়ির সামনে ফেলে রেখে ছিল। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার ১৯৮১ সালের ১৭ মে আমাদের দেশে প্রত্যাবর্তন করে। সেই ঘোষণা করেছিলেন এই দেশেই বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করা হবে। সেই বিচারের জন্য তিনিও কয়েকবার হত্যার ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, ‘আমরা শুধু আলোচনা করি সব সময় কিন্তু তা ধারণ করে বাস্তবায়ন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু একদিনেই বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেন নি। বঙ্গবন্ধু ১ দিনেই জাতির পিতা হয়ে উঠেন নি। তিনি তার জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কাটিয়েছিলেন সে সে সময়ের যারা শাসক ও শোষক শ্রেণীর তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জেলখানায়। সব সময় অসহায় ও নির্যাতিত মানুষের পাশে থেকে লড়াই করেছেন। তিনি যা ধারণ করতেন তা বাস্তবায়ন জন্য তিনি তার জীবন দিয়ে হলেও চেষ্টা করতেন। যার ফলশ্রুতিতে তিনি হয়ে উঠেছেন আমাদের বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা।’ শোভন আরো বলেন, ‘১৫ই আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসের সেই কলঙ্কময় দিন যেদিন আমরা হারিয়েছি আমাদের জাতির পিতাকে, আমরা হয়েছি অভিভাবক শূন্য। আজকে এতদিন পরেও বাংলাদেশের অনেক সমস্যা কিন্তু বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন করার পর চার বছরে দেশটিকে ঘুরে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। দেড়শ’র মতো দেশের তিনি স্বীকৃতি নিয়েছেন। জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন, সব মিলিয়ে দেশটিকে একটি জায়গায় দাঁড় করিয়ে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি তাদের চক্রান্তের কারণে আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি। তার নেতৃত্ব দিয়েছে খুনি মোস্তাক ও জিয়াউর রহমান। তারা নিজের ক্ষমতাকে ধারণ করেছিলেন।’

ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীর কাছে আমার অনুরোধ বঙ্গবন্ধুর যা কথা বঙ্গবন্ধুর যা আদর্শ তা মনে-প্রাণে ধারণ করা এবং সে অনুযায়ী পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। এই পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত একদিকে শোষক একদিকে শোষিত আমি শোষিতের পক্ষে আমরা তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে একটি সুন্দর সমাজ গঠন করবো একটি সুন্দর বাংলাদেশ গঠন করবো। আমাদের যে আজকে বঙ্গবন্ধু মুজিববাদ বিষয়টা কি দেশাত্মবোধক থাকতে হবে। মাতৃভূমির প্রতি যে ভালোবাসা অসহায় ও দারিদ্র্যের পাশে দাঁড়ানো। এই মানবিক গুণগুলো আমাদের মাঝে থাকতে হবে।’

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply