২৮ এপ্রিল ২০২৪ / ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১১:২৬/ রবিবার
এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ

মৌলভীবাজারে শেরপুরে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের আলোচনা সভা

     

মহান রুশ বিপ্লবের শততম বার্ষিকী পালন

‘মহান রুশ বিপ্লবের অজেয়-অমর শিক্ষাকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী শ্রমিক শ্রেণি, নিপীড়িত জাতি ও জনগণ ঐক্যবদ্ধ হোন’-এই আহবানে মহান রুশ বিপ্লবের শততম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর শেরপুর আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭ টায় শেরপুর বাইপাস রোডস্থ কার্যালয়ে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন শেরপুর আঞ্চলিক কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া ও ওসমানীনগর উপজেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি অনুকুর বৈদ্য। হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন শেরপুর আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমডি দুলাল আহমেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন শেরপুর আঞ্চলিক কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুজিবুর রহমান ও ফখর আহমেদ, সদস্য মজনু মিয়া, সানকার আহমেদ, আমিন তালুকদার, রাজু মিয়া প্রমূখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন মহান রুশ বিপ্লবের অজেয় ও অমর শিক্ষাকে সামনে রেখে সাম্রাজ্যবাদী অন্যায়যুদ্ধ তথা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিপদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব এবং বাংলাদেশের মত নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী দেশগুলোতে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব জয়যুক্ত করে বিশ্ব বিপ্লব তথা সমাজতন্ত্র-কমিউনিজম প্রতিষ্ঠার সুমহান লক্ষ্য আজ পৃথিবীর সকল শোষিত মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ। ইতিহাসের অমোঘ নিয়ম এবং বর্তমান কঠোর বাস্তবতায় রুশ বিপ্লব তথা সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রাসঙ্গিকতা আরো সামনে আনছে, সামনে আনছে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ ও সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী বিকল্পকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর মহামতি লেনিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার বলশেভিক পার্টি তথা শ্রমিকশ্রেণি বলপ্রয়োগে বুর্জোয়াশ্রেণিকে উৎখাত করে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব জয়যুক্ত করলে পৃথিবীর ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা ঘটে। পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার বিপরীতে জন্ম নেয় সমাজতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা। অতীতের সামাজিক বিপ্লবের মত এক শ্রেণির শোষণের পরিবর্তে আরেক শ্রেণির শোষণ নয়, বরং রুশ বিপ্লব অবসান ঘটালো মানুষ কর্তৃক মানুষকে শোষণ করার সমাজ ব্যবস্থা। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ও বিনির্মাণ প্রক্রিয়া অগ্রসর হওয়ার মধ্যদিয়ে রাশিয়ায় শ্রেণি শোষণ-লুণ্ঠণ, দারিদ্র-বেকারত্বসহ শ্রমিক-কৃষক-জনগণের ৫টি মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা পূরণ হয়। শ্রেণি শোষণের অবসানের শধ্যদিয়ে নিপীড়িত জাতিসত্তাসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার, নারী মুক্তি, শিক্ষা-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতিসহ সাংস্কৃতিক বিপ্লব, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বৈপ্লিবিক পরিবর্তনসহ চিন্তা-চেতনার বৈপ্লবিক রূপান্তরে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠে। রুশ বিপ্লব দুনিয়ার শ্রমিকশ্রেণি, নিপীড়িত জাতি ও জনগণের সামনে মুক্তির আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রথ প্রদর্শন করে।
বক্তারা আরো বলেন মোটা চালের মূল্য ৫০-৫২ টাকায় উঠানোর পর পিয়াজের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াছে। চাল, ডাল, তেল, লবনসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। পাশাপাশি কাঁচাবাজরের শাক সবজির অগ্নিমূল্য জনজীবনে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থার সৃস্টি করছে। তার উপর সরকার বিদ্যুতের পর এখন আবার জ্বালানিতেলের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নিচ্ছে। বৈশ্বিক মূল্য এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির প্রভাব বিবেচনা করে বিদ্যুত ও জ্বালানিতেলের মূল্য কমানো উচিত। ক্ষমতাশীন দল জনজীবনের এই সমস্যাগুলো উপেক্ষা করে প্রভূ সাম্রাজ্যবাদের আশীর্বাদ নিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে এবং সাম্রাজ্যবাদের অপর দালাল ২০ দলীয় জোটও জনজীবনের সমস্যা-সংকটকে পাশ কাটিয়ে যেনতেন উপায়ে প্রভূ সাম্রাজ্যবাদের আশীর্বাদ নিয়ে ক্ষমতা মরিয়া। খুন-গুম-অপহরণ, বিনা বিচারে হত্যা, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, ঘুষ, দুর্নীতি, বেকারত্ব, ব্যাংক-বীমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লুটপাটসহ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবক্ষয় আজ সর্বাত্মক রূপ লাভ করেছে। বক্তারা জনজীবনের সমস্যা-সংকট থেকে সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে মহান রুশ বিপ্লবের অজেয়-অমর শিক্ষাকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী শ্রমিক শ্রেণি, নিপীড়িত জাতি ও জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব এবং বাংলাদেশের মত নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী দেশগুলোতে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পথে অগ্রসর হওয়ার আহবান জানান ।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply