১৬ মে ২০২৪ / ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:৫৩/ বৃহস্পতিবার
মে ১৬, ২০২৪ ৫:৫৩ অপরাহ্ণ

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে অক্টোবরে

     

নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ইতোমধ্যে ৯৫ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ কিলোমিটার রেললাইন অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে। এরপর অক্টোবরের মাঝামাঝি এই রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য পটিয়া স্টেশনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ছয়টি বগি ও দুই হাজার ২০০ সিরিজের একটি ইঞ্জিন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন।

এ প্রসঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, ‘১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৯৫ কিলোমিটারে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। বাকি কাজ আগামী ছয় মাসের মধ্যে শেষ হবে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রেললাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হবে। অক্টোবরের মাঝামাঝি এ রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এরপর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে।

প্রকল্প কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পে ৩৯টি বড় সেতু, ২৪২টি কালভার্ট ও ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৯টি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে ছয়টি স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটি স্টেশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। সব কটি স্টেশনে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম।’

পটিয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন  বলেন, ‘গত ১ আগস্ট থেকে কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ শুরু হয়। ৭ আগস্ট থেকে ব্রিজ দিয়ে ট্রেন এবং যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগেই ৬ আগস্ট ছয়টি নতুন বগি এবং একটি দুই হাজার ২০০ সিরিজের ইঞ্জিন আনা হয়। যেগুলো রাখা আছে পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের সামনে।’

তিনি আরও বলেন, কোরিয়া থেকে আনা এসব বগিতে ৬০ জন করে যাত্রী বসতে পারবেন। শিগগিরই এ রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে শুনেছি।

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘রেললাইনের কাজ শেষ পর্যায়ে। অক্টোবরেই আমরা পরীক্ষামূলক ট্রেন চালাবো। তবে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালাতে আরও দুই-তিন মাস সময় লাগবে। প্রাথমিকভাবে এ রুটে দুই জোড়া ট্রেন চলবে। পর্যায়ক্রমে যাত্রীর চাহিদা বিবেচনা করে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। ১০০ কিলোমিটার গতিতে এ রুটে ট্রেন চলাচল করবে।’

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার প্রায় সাত বছর পর ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ এবং সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা।

২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে এশিয়ান ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৯২ কিলোমিটার অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply