১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:৪৯/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ২:৪৯ পূর্বাহ্ণ

সীতাকুন্ডে প্লাস্টিক বর্জ্যরে রিসাইক্লিং পরিণত হচ্ছে সম্পদে, বাড়ছে কর্মসংস্থান

     

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি

অযত্নে – অবহেলায় পড়ে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো বিভিন্ন স্থান থেকে কুড়িয়ে রিসাইক্লিং করে পরিণত করা হচ্ছে পন্যে, বাড়ছে কর্মসংস্থান। যত্রতত্র পড়ে থাকা প্লাস্টিক বোতল সহ অন্যান্য বর্জ্য এখন আর পরিবেশের জন্য হুমকি নয়, বরং সম্পদ। প্লাস্টিক বর্জ্যের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে, তেমনি অসংখ্য বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃস্টিতে রাখছে বিশেষ অবদান। সীতাকুণ্ড কৃষির পাশাপাশি একটি শিল্পসমৃদ্ধ এলাকা। এখানে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন নষ্ট করছে পরিবেশ, তেমনি মানুষের ব্যবহারের পর ফেলে দেয়া পন্যের প্লাস্টিকজাত বর্জ্যগুলো পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো একদিকে ক্ষতি করছে ফসলি আবাদী জমির, অন্য দিকে নালা, নর্দমায় জমা হয়ে পানি নিষ্কাশনে সৃষ্টি করছে প্রতিবন্ধকতা। বর্জ্যগুলো নালা-নর্দমায় জমা হয়ে চলাচলরত পানি আটকে পঁচে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ। আর আটকে থাকা দূর্গন্ধযুক্ত পানি পরিণত হচ্ছে মশার প্রজনন আখড়ায়। তাতে মারাত্মক ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য। সীতাকুণ্ডে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন টোকাই/ফেরিওয়ালা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে আড়তদারদের নিকট কেজি মূল্যে বিক্রয় করে নির্বাহ করছে নিজেদের সাংসারিক ব্যয়। আড়তদারদের নিকট খরিদ করে কিছু উদ্যোমী যুবক এসব প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিং করে পণ্যে পরিণত করছে। এমন উদ্যোগী যুবকদের একজন উত্তর বাজারের ব্যবসায়ী উপজেলার দক্ষিণ টেরিয়াইলের বাসিন্দা মোঃ সরোয়ার উদ্দিন। তিনি জানান, শুধুমাত্র ব্যবসায়িক কারণে নয় বরং সুবিধা বঞ্চিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্লাস্টিক পণ্য রিসাইক্লিং প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি। তিনি আরো জানান, প্রতিদিন ১৫-২০ জন ফেরিওয়ালা তার কাছে প্লাস্টিকজাত বর্জ্যগুলো কেজি ৩৫ টাকা মূল্যে বিক্রি করে। তাতে ফেরিওয়ালারা অন্যান্য পণ্য বাদে শুধুমাত্র প্লাস্টিকজাত বর্জ্যে ৪০০-৫০০ টাকা আয় করে। আড়তদার আনোয়ার হোসেন জানান, এসব পন্য আমরা স্থানীয় বাজারসহ সারা দেশে সরবরাহ করছি। তাতে আমাদের নিজস্ব আয়ের পাশাপাশি বাড়ছে কর্মসংস্থান। প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে বেশ কিছু রিসাইক্লিং শিল্প প্রতিষ্ঠান। শেখেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, সীতাকুণ্ড উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু বকর জানান, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। তাতে এক সময় পথে-ঘাটে, নালা-নর্দমা কিংবা খালে-বিলে অযতেœ অবহেলায় পড়ে থাকা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্জ্যগুলো আজ পরিণত হচ্ছে সম্পদে। বাড়ছে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান। পৌর মেয়র বদিউল আলম জানান, ব্যবহার শেষে জমানো প্লাস্টিক সামগ্রীর বর্জ্যের মাধ্যমে বাড়তি আয় সহ কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি খুবই ইতিবাচক। তাতে অপচনশীল প্লাস্টিক বর্জ্য যত্রতত্র নিক্ষেপ না করে বসতবাড়ীতে আলাদা ভাবে সংরক্ষণের অভ্যাস গড়ে উঠাসহ বাড়ছে জনসচেতনতা। জমানো ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্যের বিনিময়ে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কেনা যাবে গৃহে ব্যবহৃত দ্রব্য সামগ্রী। পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে আমাদের প্রকৃতি। পরিচ্ছন্ন থাকবে পানি নিষ্কাশনে ব্যবহৃত ড্রেন, খাল-বিল ও কৃষি জমি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply