জমজমাট রেস্টুরেন্টে ব্যবসা, যাতায়াতে বাড়ছে পরিবহন দর্শনার্থীদের আগমণে মুখরিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
নাছির উদ্দিন
চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত সীতাকুণ্ডে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভুমি গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। সৈকতটির নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মাধুর্যে প্রসারিত হয়ে প্রতিনিয়ত সাড়া ফেলছে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের। লোনা-বালির বাতাসে শরীর ও মনের শিহরণ জাগিয়ে সৈকতটি পর্যটকদের আলিঙ্গনে কাছে টানছে প্রতিনিয়ত। পৌরসদর থেকে ৩ কিলোমিটার পথ ধরে নামার বাজার রোড দিয়ে পশ্চিমে সমুদ্র তীরে বেঁড়িবাঁধ সংলগ্ন কেওড়া বাগানের পাশ ঘেঁষে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতটির অবস্থান। কেওড়া বাগানের পাশ ঘেঁষে ১ কিলোমিটার পথে পা ছোঁয়া মোড়ানো মাটির চেয়ার, মাটি ও ঘাস বেষ্টিত চেয়ারগুলোতে বসলে মনে হয় যেন ফোমে জড়ানো ঘরে সাজানো প্রাকৃতিক সোফা। আবার ঘাঁস বেষ্টিত মাটিগুলো দুর দৃষ্টিতে তাকালে চোখের সামনে ভেসে উঠবে পাহাড়ের ছোট ছোট টিলার মতো মনোরম দৃশ্য। নানাবিদ সৌন্দর্যে আর মাধুর্যে সাজানো মনোমুগ্ধকর গুলিয়াখালী সী-বিচ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মায়ার জালে কাছে টানছে। সৈকতে পর্যটকের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হোটেল রেস্তোরাঁর সংখ্যা, সৈকতমুখী সড়কগুলোতে বাড়ছে যাত্রীবাহী গাড়ী। সম্প্রতি স্ত্রী রাফিকা জান্নাত ও একমাত্র কন্যা তাসবিহকে সাথে নিয়ে সৈকতটি পরিদর্শনে আসেন উপজেলার ২নং বারৈয়াঢালা ইউনিয়নস্থ ছোট দারোগারহাট গ্রামের জান মোহাম্মদ ভূইয়া বাড়ী থেকে আগত দর্শনার্থী আর্কিটেক্ট মোঃ সোহরাব হোসেন সৌরভ। তিনি জানান, সীতাকুণ্ডকে দেশ-বিদেশে মর্যাদার আসনে অলঙ্কিত করেছে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। মনোমুগ্ধকর সৈকতটির সম্ভাবনার সাথে রয়েছে সমস্যাও। এক্ষেত্রে সীতাকুণ্ডে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের লিখনীর মাধ্যমে সি-বীচের উন্নয়ন ও সমস্যাবলী প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের নজরে আনতে হবে। বন্ধুমহলসহ সৈকতটি ঘুরে এসেছেন পৌরসদরস্থ দক্ষিণ ইদিলপুরের বাসিন্দা মানবিক উন্নয়র সংগঠন আলো’র সভাপতি মোঃ হারুন উর রশীদ, সাধারন সম্পাদক মোঃ গোলাম সাদেক ও আমিরাবাদের বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম আরাফাত। তারা জানান, কর্মব্যস্ততার মাঝে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সময় ও সুযোগ খুব একটা হয় না। বন্ধুমহলের আগ্রহে সী-বিচে ঘুরতে এসে মনটা বদলে গেল। অসংখ্য পর্যটকের আগমণে মুখরিত গুলিয়াখালী সি-বীচটি যেন নিজস্ব ঐতিহ্য ফিরে পেয়েছে। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা বখতিয়ান উদ্দিন চৌধুরী জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর গণ-মাধ্যমের প্রচারণায় গুলিয়াখালী সী-বিচে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা, পর্যাপ্ত সেনিটেশন ব্যবস্থা কিংবা আবাসিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সরকারী সহযোগিতা একান্ত অপরিহার্য। কারণ গুলিয়াখালী সী-বিচ কারো ব্যক্তিগত নয়, বরং রাষ্ট্রীয় সম্পদ। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবস্থাপনা, সু-রক্ষা কিংবা উন্নয়নে সরকারী উদ্যোগ একান্ত অপরিহার্য।