২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৭:৩৩/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনতার চেতনা মানে কিছু লোক ধনী হওয়া আর কিছু রাস্তা ঘাট আর সেতু নির্মাণ নয় -শামসুল আলম

     

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি

 বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম মাস্টার আনোয়ারা উপজেলার মালঘর গ্রামে ১৯৪২ সালে প্রান্তিক কৃষক পরিবারে জন্ম নেন।  ছয় ভাই দুই বোনের সংসার তাদের। শৈশব ও কৈশোরে অর্থনৈতিক সংকটে ছিলেন বললেন অকপটে। তিনি এও স্বীকার করেন, আমি ভাগ্যবান যে আমার একজন বড় ভাই ছিল। ওই বড়ভাই একজন স্বশিক্ষিত ও সুশিক্ষিত জ্ঞানী ব্যক্তি জালাল আহমেদ যিনি পাক সেনাদের হাতে নিহত হন এবং বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোস্তফা কামালের পিতা।প্রসংগত উল্লেখ্য যে তার লাশও পাওয়া যায়নি।  তিনিই আমাকে একই সাথে রাজনৈতিক, মানসিক এবং  আদর্শগতভাবে গড়ে তোলেন। আমি প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর চট্টগ্রামের বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড থেকে উনিশশো পয়ষট্টি সালে স্নাতক হয়েছি।  ছাত্রজীবন থেকেই সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্হাকে মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ  বলে মনে করি। শিক্ষক থাকাকালীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম।আমার বেশ কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।তন্মধ্যে অনুরণন, ‘তেঁতুল তত্ব’ মুক্তিযুদ্ধে আনোয়ারা উল্লেখযোগ্য। আরেকটি মানব দর্শন প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।

দক্ষিণ চট্টগ্র্রামে সর্বপ্রথম আমার রাইফেল থেকে প্রথম গুলি রাজাকারের বুকে বিস্ফোরিত হয়।আমার গ্রুপে সমগ্র আনোয়ারা থানার  বিভিন্ন গ্রামের লোক অন্তর্ভুক্ত ছিল।এ ছাড়াও পটিয়া ও বর্তমান চন্দনাইশ তৎকালীন দক্ষিণ পটিয়ার লোকজনও  আমার গ্র্রুপে ছিলেন।বিমান বা্হিনীর সার্জেণ্ট মাহি আলমও আমার দলভুক্ত ছিলেন।

  শামসুল আলম মাস্টার ‘পূর্ববাংলা’কে বলেন যে আশা, উদ্দেশ্য ও সুখস্বপ্ন নিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম পূর্ববাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষকতা ছেড়ে সৈনিক হয়ে অস্ত্র হাতে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেমেছিলাম, স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরে এসেও দুঃখ জনকভাবে মেনে নিতে হচ্ছে যে স্বাধীনতার সমৃদ্ধি জনতার ভাগ্যে না জুটলেও এই স্বাধীনতা কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বানিয়ে দিয়েছে । তারা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। অন্যদিকে প্রশাসনিক অব্যবস্থার কারণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অন্ন বস্ত্রের অভাবে অকালে মানুষ মারা যাচ্ছে। সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা প্রবর্তন ছাড়া মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। স্বাধীনতার চেতনা মানে কিছু লোক ধনাঢ্য হওয়া আর কিছু রাস্তা ঘাট আর সেতু নির্মাণ নয় এবং সরকারী সুবিধাভোগী মধ্যস্বত্ব ভোগী জনগণের দুঃখ দূর্দশার অন্যতম কারণ। । অসম্প্রদায়িক সুখী সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হওয়াই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে অবশ্যই সংগ্রাম করতে হবে এবং ‘৭২ সালের  শাসনতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply