১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১০:৫২/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ১০:৫২ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের চিকিৎসা জগতে মানবতার এক অনন্য ব্যক্তিত্ব ক্যাপ্টেন ডাঃ কমরুজ্জামান চৌধুরী

     

চিত্তপ্রসাদ তালুকদার

২৭ জুলাই। আজ ক্যাপ্টেন ডাঃ কমরুজ্জামান চৌধুরীর ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে বার বার স্মরণ করছি। চট্টগ্রামের রাউজান থানাধীন সুলতানপুর গ্রামে তাঁর জন্ম হয়েছিল ১৯১৪ সালে। বাল্যাবধি অসাধারণ মেধাবী এই ছেলেটি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর চিকিৎসা বিজ্ঞান অধ্যয়নের জন্য কলকতায় গমন করেন। তৎকালীন যুক্ত বাংলায় মেডিকেল কলেজে মফস্বলের ছাত্রদের পক্ষে ভর্তি হওয়া খুব সহজ ছিল না। কমরুজ্জামান ভর্তি হলেন কলকাতার কারমাইকেল মেডিকেল স্কুলে (বর্তমান আর. জি. কর মেডিকেল কলেজ)। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এল.এম.এফ পাশ করে তিনি চট্টগ্রামে ফিরে এসে নিজ গ্রামের পাশর্^বর্তী গহিরা গ্রামে চিকিৎসা কার্যক্রম আরম্ভ করেন। তাঁর উন্নত প্রণালীর চিকিৎসা এবং দরিদ্র জনসাধারণের প্রতি তাঁর মানবিক আচরণের কারণে তিনি অল্পদিনেই গ্রামবাসীর মন জয় করতে সমর্থ হন। একজন জনদরদী এবং দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে চারিদিকে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু, সরকারী চাকরির হাতছানীতে আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন চট্টগ্রাম মেডিকেল স্কুলে প্যাথলজি বিভাগের শিক্ষক পদে তিনি যোগদান করেন।

দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের সময় ১৯৪১ সালে তিনি যুদ্ধে যোগদান করেন এবং সামরিক চিকিৎসক হিসেবে বিভিন্ন স্থানে যেমন মিশর, ইতালী এবং সিরিয়ায় বহু প্রখ্যাত চিকিৎসকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি ক্যাপ্টেন হিসেবে সামরিক চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল স্কুলের পূর্ব পদে ফিরে আসেন। সেখানেও তিনি বেশীদিন চাকরি করেননি। স্বাধীনভাবে তাঁর পেশাগত কাজ চালিয়ে যাওয়ার মানসে তিনি চট্টগ্রাম শহরের সিরাজদ্দৌলা রোডে একটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাব খুলে মানবিক সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তখনও চট্টগ্রাম শহরে সঠিক রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজনে আজকালকার মত যত্রতত্র রোগীর মল, মূত্র, রক্ত, কফ ইত্যাদি পরীক্ষার নিমিত্ত ক্লিনিক গড়ে উঠেনি। সে সময়ে মান সম্মত প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মানুষ তাদের নিজ নিজ চিকিৎসকের পরামর্শে ডাঃ কমরুজ্জামান ক্লিনিকে ছুটে আসত। অর্থ উপার্জন ডাঃ কমরুজ্জামান চৌধুরীর মূল লক্ষ্য ছিল না, আর্তমানবতার সেবাই ছিল তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য। তাই প্রত্যেকটি রোগীর প্রদত্ত রক্ত, মল, মূত্র, কফ্ ইত্যাদি তিনি নিজে পরীক্ষা করে সঠিক রিপোর্ট প্রদান করে রোগীদের সহায়তা করতেন।
যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে সিরাজদ্দৌলা রোডের পার্শ^বর্তী ফতে আলী মাতবর লেনে তিনি একটি পাকা দ্বিতল বাড়ী নির্মাণ করেছিলেন। ঐ বাড়ীতেই তিনি সপরিবারে বাস করতেন। অসাম্প্রদায়িক নিরহঙ্কার এই মানবদরদী লোকটি মহল্লার আপামর জনসাধারণের শ্রদ্ধা সম্মান আকর্ষণ করতে পেরেছেন।
আমার বড় ভাই ডাঃ এস. পি. তালুকদার ছিলেন ১৯৩৯-৪০ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল স্কুলে তাঁর ছাত্র। সে সময়ে তিনি ছুটির সময়ে বাড়ী গেলে তাঁর মুখে তাঁর প্রিয় শিক্ষক ডাঃ কমরুজ্জামান সাহেবের নাম শুনতাম। ১৯৪০ সালের কোন একদিন চট্টগ্রাম শহরে আসলে আমার দাদা আমাকে তাঁর শিক্ষক ডাঃ চৌধুরীকে দেখান। স্যুট টাই পরা সাহেবী পোষাকে সুন্দর মানুষটিকে দেখে আমি খুশী হয়েছিলাম। তখন আমি ছিলাম দশম শ্রেনীর ছাত্র। ষাটের দশকে আমার শিক্ষকতা জীবনে তাঁর সহজ সরল জীবন প্রণালী লক্ষ্য করে আমি মুগ্ধ হয়েছি। একজন খাঁটি মুসলমান হিসেবে তিনি অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি ছিলেন ভ্রাতৃত্ববোধে সমুজ্জ্বল। তাঁর একই মহল্লার আমার বাড়িটি হওয়ায় আমি সবসময়ে তার প্রমাণ পেয়েছি।

তাঁর পিতা মরহুম আবু মোহাম্মদ হামিদ আলী ছিলেন আরবী শিক্ষায় সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী ব্যক্তি। তিনি দেশের বিভিন্ন সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আরবীর শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন এবং ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে হেড মৌলভী হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ কবির চৌধুরী এবং মুনীর চৌধুরীর বাবা ছিলেন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে তাঁর অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র। তিনি আরবীর শিক্ষক হলেও কাব্যচর্চা করতেন। তিনি পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। এরমধ্যে সোহরাব বধকাব্য ও কাশেম বধকাব্য অন্যতম। তিনি চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ কবি নবীন সেনের খুব ঘনিষ্ট ছিলেন। তাঁর মাতা আমেনা বেগমও ছিলেন তদানীন্তন কালের একজন বিদুষী মহিলা এবং স্কুল শিক্ষিকা। ফলে পিতামাতার সদগুণাবলী তাঁর জীবনে প্রতিফলিত হয়েছিল। তিনি রাউজান থানাধীন কদলপুর গ্রামের সখিনা বেগমের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তিনিও ছিলেন একজন আলোকিত মহিলা।

ডাঃ ক্যাপ্টেন কমরুজ্জামান চৌধুরী রাজনীতিতেও ছিলেন একজন সক্রিয় কর্মী। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই তিনি এর সঙ্গে য্ক্তু ছিলেন। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম এম. এ. আজিজ ও মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরীর সাথে ছিল তাঁর ঘনিষ্ট সম্পর্ক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একজন বিশ^¯ত কর্মী হিসেবেও তাঁর পরিচিতি ছিল সর্বত্র। ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধু যখন জেলে ছিলেন তখন তাঁর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিয়েতে ডাঃ ক্যাপ্টেন কমরুজ্জামান চৌধুরী, মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরী ও মরহুম এম. এ. আজিজের সাথে মিলিত হয়ে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে ডাঃ ক্যাপ্টেন কমরুজ্জামান চৌধুরীর পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছি। এছাড়া ১৯৫৪ সালের ঐতিহাসিক প্রাদেশিক নির্বাচনের সময় চট্টগ্রামে যুক্ত ফ্রন্ট নেতাদের চিকিৎসক ছিলেন ডাঃ ক্যাপ্টেন কমরুজ্জামান চৌধুরী।

দেশের সামাজিক কাজকর্মেও ছিল তাঁর ঘনিষ্ট সহযোগ। স্থানীয় কদম মোবারক এতিমখানা এবং দারুল উলুম মাদ্রাসার কার্যকরী পরিষদের সদস্য হিসেবেও তাঁর গঠনমূলক ভূমিকা সর্বজনবিদিত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একজন সংগঠক হিসেবেও তিনি দুর্লভ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। কালুরঘাট থেকে তদানীন্তন রেডিও ষ্টেশনটি মোহরাতে সরিয়ে নেওয়ার অন্যতম কান্ডারী মোহরার জনাব হারুন-অর-রশিদ এবং চক্ষুবিশেষজ্ঞ ডাঃ আবু জাফর সাহেবকে তিনি আশ্রয় দিয়েছিলেন। এছাড়া সে সময়ে যখন শহরবাসীদের অনেকেই ঘরবাড়ী ছেড়ে গ্রামের দিকে চলে যাচ্ছিল তখন তিনি শহরের বাসা ছেড়ে কোথাও না গিয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের মনে সাহস যুগিয়েছিলেন।
তিনি বিশ^াস করতেন প্রয়োজনে শত্রুদের সামনাসামনি মোকাবিলা করতে হবে। এজন্যে শহর ছেড়ে চলে যাওয়াকে তিনি ভুল সিদ্ধান্ত বলে মনে করেছিলেন। তিনি এও মনে করেছিলেন যে প্রতিবেশীদের বিশেষ করে প্রতিবেশী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ফেলে যাওয়া সম্পদ রক্ষা করা তাঁর নৈতিক দায়িত্ব। তাঁর সাহসী ভূমিকার কারণে স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবারের বাড়ীঘর বিহারী দুষ্কৃতিকারীদের লুটপাট থেকে রক্ষা পেয়েছিল। তাঁর বাড়ীর সম্মুখের রা¯তার অপর পাশের্^ অবস্থিত এক হিন্দু প্রতিবেশীর দু’টি বেবী ট্যাক্সি তিনি লুটেরাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন তাঁর অসীম সাহসিকতার কারণে।

ক্যাপ্টেন ডাঃ কমরুজ্জামান ছিলেন একজন পাক্কা মুসলমান। মনে প্রাণে অসাম্প্রদায়িক মানবতাবোধসম্পন্ন এই ব্যক্তিটি আপামর জনসাধারণের শ্রদ্ধা ভালবাসা আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন। তিনি ১৯৫৬ সালে হজ¦ব্রত সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিদ্যোৎসাহী। তাঁর অনুপ্রেরণা এবং অর্থসাহায্যে বহু অসহায় ছাত্র আলোর পথ দেখেছিলেন। হালিশহরের জনপ্রিয় চিকিৎসক ডাঃ এ.বি.এম. নুরুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন লাইব্রেরীয়ান এ.বি.এম শামশুল আলম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ চৌধুরী বি. মাহমুদ ছিলেন তাঁর ভাগিনা। তাঁরা সবাই তাঁর উৎসাহে কাঙ্কিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছিলেন। এছাড়া বহু অসহায় ছাত্রের শিক্ষাব্যয় বহন করে তিনি মহত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন।

ক্যাপ্টেন ডাঃ কমরুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন চার পুত্র এবং পাঁচ কন্যা সন্তানের জনক। এদের প্রত্যেকেই উচ্চশিক্ষিত এবং দেশে বিদেশে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। তাঁর ছেলেমেয়েদের কয়েকজনকে আমি তাঁর বাড়ীতে গিয়ে পড়িয়েছিলাম তাঁর বিশেষ অনুরোধে। তিনি আমাকে কোনদিন নাম ধরে ডাকেন নি। তিনি আমাকে সবসময় ‘বাবা’ বলে সম্বোধন করতেন এবং আমি তাঁর প্রতি ছিলাম অত্যšত শ্রদ্ধাবান।
তাঁর বড় ছেলে আখতারুজ্জামান (সুলাল) চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বি.এ পাশ করলে তিনি তাকে লন্ডন পাঠিয়ে দেন ঈ.অ. পড়ার জন্য। পরবর্তী সময়ে আখতারুজ্জামান দেশে ফিরে এসে ঋ.ঈ.অ. হিসেবে চট্টগ্রামে চার্টার্ড একাউন্টেটস্ প্রতিষ্ঠান ঝ.ঋ.অযসবফ ্ ঈড়. এর একজন চধৎঃহবৎ হিসেবে কাজ শুরু করেন। কয়েক বৎসর পর তিনি আবার লন্ডনে চলে যান। আমি একবার লন্ডন বেড়াতে গেলে আখতারুজ্জামান খবর পেয়ে কবহঃ এ তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন আমাকে। দীর্ঘদিন যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে ও সৌদি আরবে কর্মরত থেকে বর্তমানে তিনি পর্যায়ক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বসবাস করছেন এবং বিভিন্ন সমাজকর্মে সংশ্লিষ্ট থেকে সময় কাটাচ্ছেন।

তাঁর দ্বিতীয় ছেলে প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চৌধুরী (হেলাল) গইঅ করার পর দীর্ঘদিন ইৎরঃরংয ঞড়নধপড় কোম্পানী, চৎড়ফঁপঃরড়হ গধহধমবৎ হিসেবে কাজ করার পর অষ্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান ঞবষবপড়সসঁহরপধঃরড়হ ঈড়সঢ়ধহু ঙচঞটঝ এর উর্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থেকে অবসর গ্রহণ করার পর অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরে বসবাস করছেন।

তাঁর তৃতীয় ছেলে ডঃ আনিসুজ্জামান চৌধুরী (বেলাল) জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ¯œাতকোত্তর শেষে কানাডা থেকে চয.উ করার পর ঝরহমধঢ়ড়ৎব ঘধঃরড়হধষ টহরাবৎংরঃু তে অধ্যাপনা করেন। পরবর্তীতে অষ্ট্রেলিয়ার ডবংঃবৎহ ঝুফহবু টহরাবৎংরঃু তে অর্থনীতির প্রফেসর হিসেবে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করার পর জাতিসংঘে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন এবং টঘ-ঊঝঈঅচ এর অর্থনৈতিক ডিরেক্টর হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। বর্তমানে অবসর সময়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আনিস চৌধুরী নামে নিয়মিত লেখালেখি করে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ হিসেবে এ পর্যন্ত তাঁর বিশটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মানের তাঁর প্রায় একশত গবেষণামূলক প্রবন্ধও রয়েছে।

ক্যাপ্টেন ডাঃ ক্যাপ্টেন কমরুজ্জামান চৌধুরীর চতুর্থ ছেলে আহসানুুজ্জামান চৌধুরী (টিমু) ঋরহব অৎঃং এ মাষ্টার্স ডিগ্রীধারী। বাংলাদেশ থেকে সবজি রপ্তানীর পথ প্রদর্শক। তিনি বাংলাদেশ ঐড়ৎঃরপঁষঃঁৎব ঊীঢ়ড়ৎঃ অংংড়পরধঃরড়হ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

ক্যাপ্টেন ডাঃ ক্যাপ্টেন কমরুজ্জামান চৌধুরীর পাঁচ কন্যার মধ্যে বড়জন কামরুন্নেসা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে ¯œাতকোত্তর করার পর চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজে আমার সহকর্মী অধ্যাপক ও বরেণ্য নাট্যকার এবং কলাম লেখক অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ সাহেবের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। সেই বিবাহে আমি মধ্যস্থতা করেছিলাম। চতুর্থ জামাতাও ছিলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। তিনি ঝুফহবু টহরাবৎংরঃু থেকে চয.উ ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। দ্বিতীয় জামাতা রূপালী ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তৃতীয় জামাতা ঈঁংঃড়সং বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন এবং ছোট জামাতা অষ্ট্রেলিয়ার ঝুফহবু তে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর অন্যান্য কন্যারাও বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ের উচ্চ ডিগ্রীধারী এবং স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। মোটের উপর ক্যাপ্টেন ডাঃ ক্যাপ্টেন কমরুজ্জামান চৌধুরী দম্পতী সমাজে এক আলোকিত পরিবারের জনক-জননী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এহেন সর্বগুণসম্পন্ন এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে হারিয়ে সেদিন সত্যই আমরা এলাকাবাসী একজন জনদরদী চিকিৎসক ও অভিভাবকের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে শোকাতুর হয়ে পড়েছিলাম। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।

লেখক: প্রাক্তন অধ্যাপক, চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply