ইউপি নির্বাচন: সাতকানিয়ায় সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ২

গোলাগুলি ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় চলছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। নলুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে তাসিফ নামে ১১ বছরের এক কিশোর ও বাজালিয়া ইউনিয়নে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শুক্কুর নামে একজন। নিহত তাসিফের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে নিহত হন শুক্কুর। অন্যদিকে খাগরিয়া ইউনিয়নও উত্তপ্ত সকাল থেকেই। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যকার গোলাগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। দুটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটকেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুপক্ষ প্রথমে লাঠিসোটা নিয়ে পরে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পরস্পরের উপর চড়াও হয়। চলে গোলাগুলি। দুপক্ষের অনুসারীদের অনেককে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে গুলিবর্ষণ করতে দেখা যায়।
এদিকে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহোরা বলেন, নির্বাচনী সহিংসতায় নলুয়া এবং বাজালিয়ায় দুজন নিহত হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে হটাৎ বহিরাগতদের হামলায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
এর আগে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কিছু সময় পর সকাল ১০টার দিকে খাগরিয়া ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেন ও স্বতন্ত্র মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী জসিম উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়।
এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম রশিদুল হক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক। তারা কেন্দ্র দুটিতে সাময়িকভাবে ভোট বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক বলেন, দুই কেন্দ্রে সাময়িক ভোট বন্ধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেলে স্থায়ীভাবে ভোট বন্ধ করা হবে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুল জলিল জানান, ভোটকেন্দ্রে দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
এর আগে সোমবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয় সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা, পুরানগড়, বাজালিয়া, ধর্মপুর, কালিয়াইশ, কেঁওচিয়া, ঢেমশা, মাদার্শা, আমিলাইশ, কাঞ্চনা, নলুয়া, খাগরিয়া, চরতি, পশ্চিম ঢেমশা সোনাকানিয়া ও সদর ইউনিয়নে। এর মধ্যে পুরানগড়, মাদার্শা, কেঁওচিয়া ও সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন।