২৫ এপ্রিল ২০২৪ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১০:৩৬/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ১০:৩৬ অপরাহ্ণ

লেইঙ্গা খাল খননে অনিয়ম ও দূর্নীতি

     

  লেইঙ্গা খাল খননে সিডিউল মানা হচ্ছে না।খনন কাজে দরপত্রে বর্ণিত সিডিউল অনুসারে গভীরতা ও চওড়া করা হচ্ছে না বলে এলাকাবাসী সুত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 কর্ণফুলী উপজেলার লেইঙ্গা খালের প্রায় ৯ কিলোমিটার খনন কাজে অনিয়ম  ও দূর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেৃ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।অতি পুরানো এই খাল খনন করা হচ্ছে প্রায় ৪১ বছর পর। চার ইউনিয়নের উপর দিয়ে এই খাল বেষ্ঠিত।

জানা যায়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল পুনঃখননের আওতায় খালটি পুনর্জীবিত ও ফসলি জমির চাষাবাদে কৃষকদের উপকারের উদ্দেশে খনন করা হচ্ছে।

চরলক্ষ্যা সুলতানুল আউলিয়া মাজার সংলগ্ন পাশের সড়ক ভেঙে খালে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে তেলের ড্রাম কেটে তাতে গাছ দিয়ে মাটি আটকিয়ে গাইডওয়াল তৈরি করছে। খাল শুকিয়ে খনন কিংবা টেকসই পাকা গাইডওয়াল ছাড়া যেনতেন ভাবে পুনঃ খনন চলছে।

এমনকি ঠিকাদার গভীর পানির মধ্যে খাল খননের কাজ করছেন এবং খনন কাজে দরপত্রে বর্ণিত সিডিউল অনুসারে গভীরতা ও চওড়া করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

নির্ধারিত নকশা অনুযায়ী খালটি খনন না করায় আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে, বিপাকে পড়তে পারে খালপারের মানুষ। এসব লোকজন আবার খালের জমি দখল করে বসতঘর ও গরুর খামার তৈরি করে রেখেছেন। করা হয়নি উচ্ছেদ।

কার্যাদেশ অনুযায়ী খালটির জিরো পয়েন্ট থেকে উপরিভাগে স্থানভেদে কোথাও ২৫ থেকে ৩৫ ও ৪০ ফুট প্রশস্ত আর তলদেশ কোথাও স্থানভেদে ১০ থেকে ১২ ফুট প্রশস্ত এবং খালের গভীরতা ১০ ফুট করে খনন করার কথা। কিন্তু সরেজমিন দেখা যায়, খাল খননের মাটি কোনো প্রকার ড্রেস করা ছাড়াই ছড়ানো ছিঁটানোভাবে দু’পাশে ফেলে রাখা হয়েছে।

কোনো কোনো স্থানে এক পারের মাটি আংশিক খনন করা হয়েছে। এর বিপরীত পারে খাস জমি থাকলেও সেখানে মাটি খনন করা হয়নি। খালের গভীরতাও কম। পার ধসে মাটি খালের মধ্যেই পড়েছে। কিন্তু মাটি সরানোর কোনো উদ্যোগ নেই। অদৃশ্য কারণে কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসনও নীরব।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, খননকাজে অনিয়ম পরিলক্ষিত হলেও সুকৌশলে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, কার্যাদেশ অনুযায়ী খাল পুনঃ খননের কাজ করা হচ্ছে না। খালের দু’পাশ থেকে আড়াআড়ি করে কিছু মাটি কেটে ড্রেস ছাড়াই পাশে ফেলা হয়। যার ফলে খালের পাশে রাখা মাটি খালেই ভেঙে পড়ছে।

খাল খনন করা হচ্ছে জলাবদ্ধতা ও কৃষকদের উপকারের জন্য। কিন্তু সঠিকভাবে খনন না করায় উপকারের চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হব বেশি এমন ধারণা করছেন এলাকাবাসী। তা ছাড়া যে পরিমাণ খাল খনন করার কথা তা করছে না। তাঁরা আরও বলেন, মাটি কাটার গাড়ি চলাচলের জন্য দু’পাশের অধিকাংশ কৃষকের ফসলি জমি বিনষ্ট ও কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই মালিকানাধীন লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ওদিকে,অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রকল্পের সাইনবোর্ডে টাঙানো খাল খনন কাজের ঠিকাদার মেসার্স গরীবে নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজের দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেই নাম্বরও ভুল বলে জানা যায়।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম পৌর বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী তন্ময় কুমার ত্রিপুরা জানান, লেইঙ্গা খালটি খনন করতে গেলে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে নকশা অনুযায়ী খালটি খনন করা না হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।।

গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে খালটির পুনঃখনন কাজ পরিদর্শন করেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক।

জানা গেছে, এ প্রকল্পে ২ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দের কাজটি পান মেসার্স গরীবে নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ২৭ জুন কাজ শুরু করলেও কার্যাদেশ অনুযায়ি কাজ সমাপ্তির সময় এ বছরের ৩১ মে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply