২৪ এপ্রিল ২০২৪ / ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৬:৩৮/ বুধবার
এপ্রিল ২৪, ২০২৪ ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা

     

আজহার মাহমুদ

শিক্ষাই জাতির মেরুদ-। শিক্ষা ছাড়া কখনও একটি জাতি উন্নতির চরম শিখরে যেতে পারে না। সেই শিক্ষার প্রধান আলো যিনি দেখান তিনিই হলেন শিক্ষক। আমরা জানি পরিবারই হচ্ছে একটি শিশুর প্রথম শিক্ষা ক্ষেত্র, কিন্তু বৃহত্তর পরিবেশে শিক্ষা লাভের জন্য একজন শিক্ষার্থীর প্রধান অবলম্বন হলো একজন শিক্ষক। এই শিক্ষকরাই হচ্ছেন আমাদের জীবনের অমূল্য সম্পদ। প্রতিবছরের অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়। এবছর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের নিকট চাওয়া প্রতিটি শিক্ষার্থীদের যেন সন্তানের মতো করে শিক্ষা দিয়ে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেন। বড় দুঃখের সাথে বলতে হয়, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের সু-সম্পর্ক অনেকটাই কমে গেছে। শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যতামূলক আচরণ করতে এখনকার অনেক শিক্ষার্থীদের বুক কাঁপে না। নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবস্থানে আছি আমরা। এমন সময় শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সম্পর্ক আর কতটা শ্রদ্ধাময় থাকবে সেটা সকলেরই জানার কথা। তবে এর দায় যেমন বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার আছে, তার কিছুটা আমাদের শিক্ষকদেরও আছে। আমি সকল শিক্ষকদের নয়, কিছু কিছু শিক্ষকদের নিয়ে বলতে চাই যাদের মাধ্যমে আজ পুরো শিক্ষক-সমাজ অপমানিত হচ্ছে, অপদস্থ হচ্ছে। আজকাল অনেক শিক্ষক রয়েছে যারা প্রাইভেট পড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীদের অনেক অন্যায় আবদারও মেনে নেয়। পরীক্ষার আগেই তাদের হাতে প্রশ্ন দিয়ে দেয়। কিছু শিক্ষক আবার সরাসরি দুর্নীতির সাথেও সম্পৃক্ত থাকে। যা আমরা নিকট অতীতে বিভিন্ন খবরের কাগজে পড়েছি। শিক্ষকদের নিয়ে এমন সংবাদ দেখলে সত্যি কষ্ট পাই। কিন্তু বাস্তবতা বড় নিষ্ঠুর। আজকাল টাকার জন্য শিক্ষকরাও অবৈধ পথে হাঁটছেন এরচাইতে কষ্টের বিষয় আর কি হতে পারে! আমি কিন্তু আগেই বলে রেখেছি সকল শিক্ষকদের নিয়ে আমি বলছি না। কিন্তু বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ শিক্ষকদের চরিত্র এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের নিকট প্রত্যাশা প্রশ্নফাঁস, দুর্নীতি, অবৈধভাবে শিক্ষার্থীদের অবমূল্যায়ন করাসহ বিভিন্ন অপকর্ম থেকে শিক্ষকসমাজ দূরে থাকবেন। মনে রাখতে হবে একজন শিক্ষকের অপকর্মের কারণে সকল শিক্ষকগণ আজ আমাদের সমাজে ছোট হয়ে পড়ছে। ছাত্রীদের যৌন হয়রানী, টাকা দিয়ে প্রশ্ন বিক্রি, শ্রেণীকক্ষে সঠিকভাবে পাঠদান না করিয়ে প্রাইভেটে কিংবা কোচিংয়ে পাঠদান করাসহ নানান ধরনের অপকাজে লিপ্ত থাকেন কিছু কিছু শিক্ষক। আমরা কয়েকদিন আগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার সংবাদও পড়েছি পত্রিকায়। যেখানে একজন শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের উপর চালান অমানবিক নির্যাতন। যা শিক্ষার্থীরা মেনে নিতে না পেরে আন্দোলন শুরু করেছেন। অথচ শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক থাকবে মধুর। যেখানে থাকবে ভালোবাসা আর শাসন। এখন এসবের মাঝে ঢুকে পড়েছে টাকা। টাকার মাধ্যমেই আজকাল শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের সম্পর্ক হয়, মেধার মূল্যায়ণ খুব একটা হয় না। আমি যখন ছোট ছিলাম আমার একজন শিক্ষক রয়েছেন যিনি টাকা ছাড়াও অনেক শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন বছরের পর বছর। অথচ তারা যে টাকা দেয় না সেটা কেউই জানতে পারে না। এমন শিক্ষক বর্তমান সময়ে খুব একটা দেখা যায় না। এবার আসা যাক শিক্ষার্থীদের বিষয় নিয়ে। আজকাল শিক্ষার্থীদের আচরণ চালচলন কোনোটাই শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাময় নয়। তারা এখন শিক্ষকদের শিক্ষক মনেই করে না। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের নোংরা আচরণের কারণে শিক্ষকরা ভয়ে থাকেন। এই যখন আমাদের শিক্ষকদের সাথে আমাদের সম্পর্ক তখন একটা দেশের শিক্ষাখাত আর কতটা এগিয়ে যাবে? আসুন আমরা সকলে আমাদের শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করি, সম্মান জানাই। এটা মন থেকে করতে হয়। মুখ থেকে সম্মান নয়, মন থেকে শ্রদ্ধা করুন। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের প্রতি রইলো অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।লেখক: আজহার মাহমুদ, শিক্ষার্থী, বিবিএ অনার্স, তৃতীয় বর্ষ, ওমরগণি এমইএস কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply