২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৯:১১/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৯:১১ পূর্বাহ্ণ

রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বাচ্চাকে উদ্ধার করে মানবতার পরিচয় দিলেন মোস্তফা

     

রাজশাহী ব্যুরোচীফ
রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘনায় অপরিচিত এক আহত বাচ্চাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ভর্তি ও চিকিৎসার সার্বিক সহযোগিতা করে চরম মনবিকতার পরিচয় দিয়েছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মোস্তফা। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, সময় ঠিক আনুমানিক দুপুর ১.৩০ মিনিট। স্থান, তালাইমারি নর্দানমোড়। হঠাৎ বরফ ওয়ালার ঝুনঝুনির শব্দ পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসে রিয়া(৮) নামের একটি বাচ্চা। রাস্তায় আসার পর রাস্তার এপাশ থেকে ঐ পাশে পার হতে গিয়ে অটোরিক্সার সাথে ধাক্কা লেগে যায় অর্থাৎ রোড এক্সিডেন্ট করে বাচ্চাটি।

দেখা যায় বাচ্চাটি অটোরিক্সার তলে পড়ে রয়েছে এবং বাচ্চাটির বাম পাঁ ভেঙ্গে যায় । এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর ক্ষতি সাধিত হয়। সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মোস্তফা এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশল পরিষদ রাজশাহী জেলা কমিটির জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক, আলিফ আনোয়ারুল। ঘটনাটি দেখে থেমে থাকতে পারেননি তারা। তাদের নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজকে উপেক্ষা করে বাচ্চাটিতে উদ্ধার করে চিকিৎসার উদ্দেশ্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান এবং ভর্তি করেন। মোস্তফা ও আলিফ জানেনা কে তার (রিয়ার) বাবা কে তার মা। প্রায় ঘন্টা খানেক পরে ছুটে আসেন বাচ্চাটির মা সহ আত্নীয় স্বজন।

তারপর তাদেরকে জিজ্ঞাসা বাদ করে জানা যায়, বাচ্চাটির নাম নুসরাত জাহান রিয়া (৮) পিতার নাম সাকিল হোসেন, সাং- বিনোদপুর ( মির্জাপুর)। বাবা কাঠমিস্ত্রী কাজ করেন। বাচ্চাটি মির্জাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ১ম স্থান অধিকারি কৃতীছাত্রী। অবশেষে রামেক হাসপাতালের ১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় মানবতার বিষয় হলো, মহিদুল ইসলাম মোস্তফা তৎক্ষনাত ঐ বাচ্চাটির পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে বাচ্চটির পরিবার খুব দরিদ্র। তাই বাচ্চটির সকল চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করেন। এবং বাচ্চাটির পরিবারকে নগদ ৫০০০ টাকা সহযোগিতাও করেন। এ বিষয়ে বাচ্চাটির মা এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার বাবার বাড়ি তালাইমারি। আমি আমার বাবার বাসাতে বেড়াতে এসেছি। আমার ভীষন জ্বর, তাই সুয়েই ছিলাম। হঠাৎ বরফ ওয়ালার শব্দ পেয়ে দৌড়ে বের হয়ে যায় আমার মেয়ে। এর আর বলতে পারবো না। পরে জানতে পারি আমার মেয়ে এক্সিডেন্ট করেছে। তাই আমি ছুটে এসেছি হাসপাতালে। এখানে এসে জানতে পারি মোস্তফা নামের এক লোক আমার বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে এবং নিজের খরচে চিকিৎসা করেছে। এছাড়াও আমার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছে।

পরে আমাকে চিকিৎসার জন্য নগদ ৫০০০ টাকাও দিয়েছে। কান্না জড়িত কন্ঠে বাচ্চাটির মা বলেন, আল্লাহ যেন এই মোস্তফা ভাইয়ের ভাল করেন এবং প্রতিটি ঘরে ঘরে এই রকম মোস্তফার মত সন্তান দেন। তবে বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন মন্তব্য করেন মহিদুল ইসলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমার চোখের সামনে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে আর আমি চুপ থাকবো এটা কিভাবে হয়? বাচ্চাটিকে দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছে বিধায় আমি ও আমার বন্ধু আলিফ ভাইকে সাথে নিয়ে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছি। আমি সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, তাদের সহযোগিতা করে এসেছি। আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রেখেছে ততদিন যেন মানুষের সেবা করতে পারি। তবে সব মানুষের টাকা পয়সা আছে কিন্তু উপকার কয়জন করে আর করতে পারে? তাই বলবো সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে একদিন সত্যিকারের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সেই কাঙ্খিত সোনার বাংলা ঠিক গড়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply