২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৯:৫৫/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৯:৫৫ অপরাহ্ণ

কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যাই চলাচলের পথ বন্ধ, বন্দী দশায় নয় পরিবার

     

জাহাঙ্গীর আলম রিজভী
কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে দীর্ঘদিনের চলাচলের পথে পাঁকা খুঁটি দিয়ে জায়গা ঘেরাও করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ওজির আলী ফকিরের বাড়ী প্রকাশ মকবুল সওদাগরের বাড়ীতে এই ঘটনাটি ঘটে। কয়েকদিন ধরে চলাচলের পথ বন্ধ থাকার কারণে চরম দূর্ভোগে পড়ে ৯ পরিবার, যাতে রয়েছে শতাধিক বাসিন্দা। একই বাড়ীর মৃত আমীর হোসেনের পুত্র মোহাম্মদ কাশেম, মোহাম্মদ কাশেমের পুত্র যথাক্রমে আব্দুর রহমান, আব্দুস সালাম,আব্দুল মান্নান, আব্দুল হাকিম, আব্দুল হালিম, আবদুন নুর। মৃত আমির হোসেনের আরেক পুত্র মোহাম্মদ ইয়াছিন, মোহাম্মদ ইয়াছিনের পুত্র যথাক্রমে মোহাম্মদ নাসির, মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ আবছার। নামের উল্লেখিত ব্যক্তিরা চলাচলের পথে পাঁকা খুঁটি দিয়ে ঘেরাও করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে বলে জানা যায়। ২৪সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে সরজমীনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। ঘরবন্দি দূর দশা পতিত ব্যক্তি মোহাম্মদ জহুরুল আলম নামের এক ব্যক্তি বলেন, টাকা ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আমার প্রতিবেশীরা চলাচলের পথ দখল করে পাঁকা খুঁটি দিয়ে ঘেরাও করেছে। আমরা এখন নয় পরিবারের শতাধিক বাসিন্দা চলাচল করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি আরো জানান, রাস্তা প্রতিবন্ধকতা ব্যক্তিরা জালাল আহমদ ড্রাইভারের ইন্ধনে কাশেম বাহিনী রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযোক্ত এক ব্যক্তি জানান, জায়গার মালিকানা আমার একার না। আমার ভাই আমার চাচাতো ভাই-বোন দেরও রয়েছে। কে কোনদিকে হাটতে পারবে বা পারবে না সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে জহুরুল আলম নামক এক ব্যক্তি বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় গত ২৩ আগস্ট একটি অভিযোগ করে যার নাম্বার-১৬৬১। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জহুরুল আলম তাদের বাড়ীর মাঝ দিয়ে জহুরুল আলম পূর্ব পুরুষ হতে চলাচলের পুরনো একটি রাস্তা রয়েছে। উক্ত চলাচলের রাস্তা দিয়ে তাদের পূর্ব পুরুষ গণ বিগত ২০০ বছর ধরে বংশ পরম্পরাই চলাচল করে আসছে। হঠাৎ করে অভিযোক্ত ব্যক্তিগণ তাদের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে ঘর তৈরী করার জন্য পিলার বসিয়ে তাদের নয়টি পরিবারকে গৃহ বন্দী করে অসীম কষ্টের মধ্যে ফেলে দেয়। এমতাবস্থায় তারা একপ্রকার বন্দী দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। যে জায়গাটি বন্ধ করে তাদের এতগুলো পরিবারকে কষ্ট দিচ্ছে সেটি মূলত আর এস-৩৪৬৪ দাগের ১৬শতক সরকারী খাস জায়গা। যে জায়গার মাঝখান দিয়ে তাদের চলাচলের রাস্তাটির সাথে সংযোগ হয়। কিন্তু অভিযোক্ত ব্যক্তিরা ১৮ শতক ক্রয় করে ৩৪শতক জায়গা জোর পূর্বক একা দখল করে পুরো খাস জমি ভোগ করার পায়তারা চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তারা উক্ত রাস্তা দিয়ে চলাচলের চেষ্টা করিলে অভিযোক্তগণ তাদেরকে মারধরের হুমকি দেয়। এই বিষয়ে কর্ণফুলী থানার পুলিশ কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ জানান,এই বিষয়টি আমার জানা নেই তবে বিষয়টি জেনে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

অপরদিকে চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ রফিক জানান, আমার ৬৩ বছর বয়সে আমি দেখে আসতেছি এটি একটি চলাচলের রাস্তা। এই চলাচলের রাস্তাই যদি কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চাই এটা আমরা কোনোভাবে মেনে নিবো না। এই বিষয় নিয়ে যা যা ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন তা আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব ইনশাল্লাহ। অন্যদিকে আরেক ভোক্তভোগী মোহাম্মদ ইউছুপ জানান, সম্প্রতি উক্ত চলাচলের রাস্তাটি অভিযোক্ত ব্যক্তিরা নিজ নিজ ভিটা বাড়ীর সাথে মিলিয়ে অবৈধভাবে দখলের উপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। অথচ বিভিন্ন সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং ইউপি চেয়ারম্যান কে লিখিত এবং মৌখিকভাবে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এক আবেদন জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হইনি। এইভাবে বারবার আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করাই ভোক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। অপরদিকে মামলার বাদী জহুরুল আলম সহ আরেক ভোক্তভোগি আবুল হোসেন কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান এবং কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে লিখিতভাবে অভিযোক্ত ব্যক্তি কর্তৃক জবর দখলকৃত বাড়ীর চলাচলের রাস্তা উদ্ধারের আবেদন জানান। এই বিষয়ে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা জানান, এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলে বিষয়টির সুরেহা করব।

 

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply