২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১:১২/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ১:১২ অপরাহ্ণ

রাজনীতিতে উচ্চাভিলাষী নয়

     

মাহমুদুল হক আনসারী

 

রাজনীতি, সমাজ পরিচালনা জনতার জন্য। রাজনীতি অর্থ দেশ জাতি পরিচালনা করা। ব্যক্তি রাজনীতি দলীয় রাজনীতি কেন্দ্রীয় রাজনীতি সবকিছুর মূল জনগণ। জনগণের শান্তি সমৃদ্ধি শৃংখলা প্রতিষ্ঠা রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে জনগণের সুখ শান্তির কর্মসূচি মূল টার্গেট । জনগণের সুবিধার কথা বলার জন্য রাজনৈতিক মাঠ। প্লাটফর্ম তৈরি করা হয় জনগণের পক্ষে কথা বলার জন্য। মিছিল মিটিং আন্দোলন সংগ্রাম র‌্যালি সবকিছু রাজনৈতিক কর্মসূচি। এসব হয় জনগণের সুখ শান্তি সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার জন্য। রাজনীতির মাঠে কর্মসূচি নিয়ে যারা ্আসেন তারা হলো মানব দরদী, জনদরদী,নির্লোভ মানুষ। যাদের মধ্যে কোনো প্রকারের লোভ লালসা থাকেনা তারাই রাজনীতি করার জন্য রাজনীতি প্লাটফর্মে আসে। তাদের মাধ্যমে দুনিয়াব্যাপী আম জনতার কল্যাণ উন্নতি অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। নিঃস্ব অসহায় দরিদ্র মজলুম মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা ওরাই যুগে যুগে বলে গেছেন। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ অনুকরণ করে গণতান্ত্রিক দুনিয়া জুড়েই বিভিন্ন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন নামে গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র জনতন্ত্র মানবতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত আছে। পৃথিবী যতদিন থাকবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক দলীয় কর্মসূচি কর্মপন্থা সংগ্রাম চলবে। রাজনীতিতে নিয়োগ বিয়োগ থাকবে। একদল ক্ষমতায় থাকবে অসংখ্যা দল বিরোধী দলে থাকবে। সেটাই গণতান্ত্রিক নিয়ম। এ নিয়মে গণতান্ত্রিক পৃথিবী চলে আসছে। তবে গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র একনায়কতন্ত্র দীর্ঘদিন পৃথিবীতে কোনোদেশেই চলতে দেখা যায়নি। গণতন্ত্রের নামে হয়তো কিছুদিন স্বৈরতন্ত্র জবরদখল করে জনঅধিকার খর্ব করার রাজনীতি দেখছি। তবে সেটা বেশিদিন টিকে থাকতে দেখা যায়না। এক দুই যুগের মধ্যেই তার পতন দুনিয়ার মানুষ দেখতে পায়। রাজনীতিতে উচ্চাভিলাষী নেতানেত্রী এখন অসংখ্য ভাবে তৈরি হচ্ছে। একসময় রাজনীতিতে ছিল নেতাদের বিলীন করে দেয়ার ইতিহাস। সহায় সম্পত্তি অর্থ উজাড় করে দেয়ার ইতিহাস নজির রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। আজকের পৃথিবীতে কতিপয় দেশ শাসক এবং দলের নেতা নেত্রীরা উচ্চাভিলাষী রাজনৈতিক চিন্তা চেতনায় নিজকে আবদ্ধ করে রেখেছে। দল এবং কর্মীর নামে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলছে। ক্ষমতার নামে চেয়ার পদপদবী ব্যবহার করে লাখ কোটি টাকার সহায় সম্পত্তির মালিক হচ্ছে। পৃথিবীর বহু দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও রাজনীতির পদপদবী ক্ষমতার চেয়ার দখল করে শূণ্য থেকে লাখ কোটি টাকার মালিক হচ্ছে। নিঃস্ব জনগণ চালডাল এর জন্য হাহাকার করছে। অন্ন বস্ত্রের জন্য দীর্ঘ লাইন ধরছে। চাকরীর জন্য বছরের পর বছর অফিসে অফিসে ধরণা দিচ্ছে । এক মুঠো আহারের জন্য একজন জনগণ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের ধারে ধারে ঘুরছে। জনগণ তার গণতান্ত্রিক ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। সাংবিধানিক অধিকার মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। গুম,খুন হত্যা রাহাজানী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। ন্যায্য বিচার সঠিক ভাবে জনগণ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত। যে জনগণের জন্য রাজনীতি , রাজনৈতিক প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে সেই জনগণের দুঃখ দুর্দশার কোনো কর্মসূচি এখন রাজনীতির মাঠে নেয়। আছে শূধু ভোগ বিলাসের রাজনীতি। দেখা যায় নেতাকর্মীদের উচ্চাভিলাষী রাজনৈতিক কর্মসূচি । তাদের গাড়ি বাড়ির বিশালত্ত দেখে মনে হয়না যে তারা দেশের জনগণের জন্য কিছু করছে। তাদের বেশ ভূষ দেখলে মনে হয় তারা দেশের মালিক। জনগণের সর্দার লিডার । শূণ্য থেকে অধিক অর্থের মালিক হয়ে তারা দেশ ও জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো বসে আছে। তাদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ কিছুই বরতে পারবেনা। কারণ এখন শূধূ নির্বাচন অনুষ্ঠান কর্মসূচী ঘোষণা করলেই হলো। জনগণকে লাইনে দাড়িয়ে আর অপেক্ষা করে রোদ বৃষ্টির মধ্যে ভোট প্রদানের জন্য কেন্দ্রে কেন্দ্রে অপেক্ষা করার দরকার হয়না। কর্মসূচী ঘোষণা হলেই সাথে সাথে ইচ্ছেমতো রাজনৈতিক দল এবং প্রতীকের পক্ষে বাক্স ভর্তি হয়ে যায়। এসংস্কৃতি যখন চালু হয়ে গেছে তখন আর ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার চেয়ার পরিবর্তনের দিন শেষ। যেসব দলের ক্ষমতা শক্তি রয়েছে তারাই ভোটকে অন্ধকার রাতে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তাই যারা শক্তিধর দলের পক্ষে অবস্থান নিতে পেরেছে তাদের জন্য ক্ষমতার চেয়ার পানির মতো। আর যারা এটা নিজের নাগালে আনতে পারেনি তাদের জন্য ক্ষমতার চেয়ার কঠিন। দেশের সংবিধান আইন শৃংখলা বাহিনী নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পর্যবেক্ষন কমিটি এবং জাতীয় আন্তর্জাতিক সবগুলো পর্যবেক্ষক কমিটিকে যারা আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে তাদের জন্য রাতের অন্ধকার ক্ষমতার চেয়ার তৈরি হয়ে বসে আছে। অবৈধ অপকর্মের তথাকথিত নির্বাচনী কর্মসূচীতে যারা জয় পেয়ে চেয়ার দখল করে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসে তাদের নিকট জনগণের কোনো দায়দায়িত্ব বাকী থাকেনা। তারা যা চায় তাই করে তাদের যা প্রয়োজন তাই তারা করে যায় এবং করছে। যার মধ্যে জনগণের জন্য ন্যুনতম শান্তি শৃংখলা প্রশান্তি পাওয়া যায়না। এভাবে পৃথিবীর অনেক দেশ চলছে বাংলাদেশ ও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানে এভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিঃস্ব থেকে যারা হাজার কোটি টাকার মালিক হচ্ছে তারা একসময় জনগণের কাতারের সাধারণ মানুষ ছিলো। আজকে তারা জনগণের অর্থ অধিকার খর্ব করে জাতীয় সম্পদ নিজের আয়ত্তে এনেছে। এসব সম্পদ জনগণ এবং রাষ্ট্রের । একদিন না একদিন এসম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে। তাদের রেহায় নেই। জনগণের মূল্যবোধের গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সরকার একদিন প্রতিষ্ঠা হবেই। সেই দিন বেশিদিন দূরে নয়। যেদিন জনগণের সম্পদের হিসেব পাইপাই করে দিতে হবে। তাই আসুন রাজনীতির নামে উচ্চাভিলাষী জীবন জনকাম্য নয়। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি তাদের পক্ষেই তাদের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচী প্লাটফর্ম থাকা চায়। তাদের জন্য সবধরনের গণতান্ত্রিক মানবাধিকার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করায় একটি দল সরকারের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply