২৩ এপ্রিল ২০২৪ / ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:৪১/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ২৩, ২০২৪ ৫:৪১ অপরাহ্ণ

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৩০ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

     

বাংলা গদ্যের প্রথম স্বার্থক রূপকার, সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৩০তম প্রয়াণ দিবস স্মরনে চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র (সিএইচআরসি) এর আয়োজনে ২৯ জুলাই ২০২১ সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালে আলোচনা ইতিহাসবেত্তা সোহেল ফখরুদ-দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতে আগরতলার ঐতিহাসিক ড. আশিস কুমার বৈদ্য।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক জিতেন্দ্র লাল বড়ুয়া, প্রাবন্ধিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক অরুপ করমার বড়ুয়া প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বক্তার বলেন, ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছেলেবেলা থেকেই বিদ্যাসাগর অত্যন্ত প্রতিভাবান ছাত্র ছিলেন। ছাত্রজীবনে প্রতি বছর তিনি বৃত্তি এবং গ্রন্থ লাভ করেন। বাংলা ব্যাকরণ, সাহিত্য, অলঙ্কার, বেদান্ত, ন্যায়, দর্শন, তর্ক, জ্যোতির্বিজ্ঞান, হিন্দু আইন এবং ইংরেজি বিষয়ে তিনি অধ্যয়ন করেন। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃত কলেজ থেকে ১৮৩৯ সালে তিনি বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেন। একুশ বছর বয়সে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা ভাষার প্রধান পণ্ডিত পদে যোগ দেন। তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে ও সংস্কৃত কলেজে দীর্ঘদিন তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য নামমাত্র বেতনের ব্যবস্থা করেন। ঈশ্বরচন্দ্র নারী শিক্ষা বিস্তারে তিনি প্রায় তিনশত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষাক্ষেত্রে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো পাঠ্যপুস্তক রচনা ও প্রকাশ করা। ১৮৫৫ সালে প্রকাশিত তার ‘বর্ণপরিচয়’ বইটি অর্ধশতাব্দী পর্যন্ত বঙ্গদেশের সবার জন্য পাঠ্য ছিল। তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে তোলেন। তার  রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ৪৪টি। তাকে ‘বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী’ বলে অভিহিত করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা-বিবাহ চালু করা, বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করা এবং স্ত্রীশিক্ষা বিস্তারের জন্য আন্দোলন করেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি (কলকাতা) ও বেথুন সোসাইটিসহ আরও কিছু সংগঠনের সদস্য ছিলেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৮৫৬ সালে বিধবা-বিবাহ আইন পাস হয়। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত ছিলেন ‘দয়ার সাগর’ নামে। ১৮৫৮ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো নির্বাচিত হন। ১৮৬৪ সালে ইংল্যান্ডের রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি তাকে সাম্মানিক সদস্য নির্বাচিত করে। তিনি ১৮৭৭ সালে ইম্পেরিয়াল অ্যাসেমবিজের সম্মাননা-সনদ লাভ করেন এবং ১৮৮০ সালে সিআইই হন। বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply