চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল হাসানের ইন্তেকালে তথ্যমন্ত্রী ও ভুমিমন্ত্রীর শোক
ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৫ জুলাই
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল হাসানের ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) চট্টগ্রামে ৬৫ বছর বয়সে স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে শফিকুল হাসানের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের সংবাদে শোকাহত তথ্যমন্ত্রী প্রয়াতের আত্মার শান্তিকামনা করেন এবং তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। রাঙ্গুনিয়ার সন্তান তথ্যমন্ত্রী তার শোকবার্তায় বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আজীবন ধারণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল হাসান চট্টগ্রামে রাজনৈতিক অঙ্গণে ও এলাকাবাসীর সেবায় আত্মনিয়োগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছেন।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল হাসানের মৃত্যুতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি ভূমিমন্ত্রী গভীর শোক জানিয়েছেন। গণমাধ্যমে প্রেরিত এক শোক বার্তায় ভূমি মন্ত্রী উল্লেখ করেন, সদ্যপ্রয়াত শফিকুল হাসান ছিলেন আশৈশবকাল হতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশের প্রতি নিবেদিত প্রান। ১৯৬৯ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগে যোগদান করেন এবং চট্টগ্রামস্থ জে এম সেন স্কুল শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং মুজিব বাহিনীর হয়ে ফটিকছড়ি অঞ্চলে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মূখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম শহর ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক ও দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে মৌলভী সৈয়দের নেতৃত্বে প্রতিরোধ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এসময় রাজনৈতিকভাবে তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর মরহুম আখতারুজ্জামান চৌধুরীর নৈকট্য লাভ করেন এবং তাঁর প্রিয়ভাজনদের অন্যতম একজন হয়ে ওঠেন। ৭৫ পরবর্তী দু:সময়ের অন্ধকার সময় থেকে প্রিয় মাতৃভূমিকে আলোর পথে আনতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রতি অগাধ আনুগত্যে আন্দোলন সংগ্রামে অনবদ্য অবদান রেখেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল হাসান। বের করেন লক্ষ মুজিবের কন্ঠ শিরোনামে উদ্দীপনা মূলক প্রকাশনা। সাহস ও নিষ্ঠাভরে পালন করেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব। আন্দোল সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি স্বৈরাচারী সরকারের জেল, জুলুম, হুলিয়ার শিকার হন। এরপর তিনি পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য এবং তথ্য ও গবেষনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি তাঁর একটি বর্ণাঢ্য জীবন ধারা রচনা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সর্বশ্রেনী পেশার মানুষ ও নতুন প্রজন্মের কাছে ভালবাসা ও শ্রদ্ধার পাত্র হয়েছেন। দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাত আনুমানিক ৩টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সময়ের সাহসী সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল হাসান। আমি তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং মহান রাব্বুল আল আমিনের দরবারে ফরিয়াদ জানাই তিনি যেন দেশপ্রেমিক শফিকুল হাসান ভাইকে বেহেস্তের সর্বোচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত করেন। ৬৬ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে পরপারে যাত্রাকালে তিনি এক স্ত্রী, দুই পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয় পরিজন ও গুনগ্রাহী রেখে যান। আমি সকলের প্রতি জানাই আন্তরিক সমবেদনা। কামনা করি, মহান করুণাময় আল্লাহ্ যেন অচিরেই শোক কাটিয়ে ওঠার তওফিক দান করেন।