২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৩:৩৮/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ

কুড়িগ্রামে বানভাসীদের হাতে কাজ না থাকায় খাদ্য সংকটে পড়লেও কোন সরকারী বা বেসরকারী ত্রান তৎপরতা শুরু হয়নি

     

 

সাইফুর রহমান শামীম
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি সামান্য হ্রাস পেলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ৪ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি ৩ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট, অষ্টমীর চর, রমনা, রানীগঞ্জ, চিলমারী ইউনিয়ন, উলিপুর উপজেলার হাতিয়া, বেগমগহ্ম, রৌমারী উপজেলার শৌলমারী, দাতভাঙ্গা, বন্দবের ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার যাত্রাপুরসহ ২০ ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলসহ চরাঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ গত ৫ দিন ধরে পানিবন্দী জীবন যাপন করছে। এসব এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গবাদি পশুর খাদ্য সংকটে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা। বানভাসীদের হাতে কাজ না থাকায় খাদ্য সংকটে পড়লেও এখনো কোন সরকারী বা বেসরকারী ত্রান তৎপরতা শুরু হয়নি।
অনেক পরিবারের ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় তারা ঘরের উচুঁ মাঁচানের পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। বন্যা কবলিত এলাকা গুলো কাঁচা সড়ক তলিয়ে থাকায় একমাত্র নৌকায় প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন মানুষজন।
হাতিয়া ইউনিয়নের চর অনন্তপুর গ্রামের আব্দুর রহমান, নজর আলী, ইসলাম মিয়া, আজাহার আলীসহ অনেকেই জানান, ঘরের ভিতর থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় কেউ চৌকি আবার কেউ বাঁশের মাচানের উপর পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। এ অবস্থায় ঘরে খাবার ও হাতে কাজ না থাকায় দুঃচিন্তায় আছি। মেম্বার চেয়ারম্যানও কোন সাহায্য করছে না। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বাঁচার উপায় থাকবে না।
চিলমারী উপজেলার নয়ারচর ইউনিয়নের রাবেয়া বেগম বলেন, গরু, ছাগল, হাস, মুরগী নিয়ে বিপদে আছি। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। ঠিক মতো রান্নাও করতে পারছি না। ছেলে মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।
উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও আমার ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার পরিবার পানিবন্দী জীবন যাপন করছে। উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে গেলেও এখনও কোন ত্রান সহায়তা পাওয়া যায়নি। এদিকে বন্যার্তদের জন্য ত্রান সহায়তা জরুরী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী চরাঞ্চলসহ নি¤œাঞ্চল গুলোতে পানি প্রবেশ করলেও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। গত ২৪ ঘন্টায় পানি কিছুটা কমেছে। আশা করছি দ্রুত পানি নেমে যাবে। আর বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য মেডিকেল টিমসহ আমাদের সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া আছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৪ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি হ্রাস পেয়েছে ৩ সেন্টিমিটার।

 

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply