২৪ এপ্রিল ২০২৪ / ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সন্ধ্যা ৭:৫০/ বুধবার
এপ্রিল ২৪, ২০২৪ ৭:৫০ অপরাহ্ণ

লালখান বাজার-টাইগারপাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি

     

চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার-টাইগারপাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে দেওয়ান হাট হতে নির্মানাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও জরাজীর্ণ মেয়াদোত্তীর্ণ দেওয়ান হাট সেতু ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের দাবিতে দেওয়ানহাট, শেখ মুজিব রোড, পোস্তার পাড় এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। আজ সোমবার দুপুরে এলাকাবাসী ও ব্যাবসায়ীবৃন্দের পক্ষে বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব ও বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রামের সহ সভাপতি আলহাজ্ব এইচএম মুজিবুল হক শুক্কুরের নেতৃত্ব ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল  দুপুরে বিভাগীয় কমিশনার জনাব মুহাম্মদ কামরুল হাসান ডিএনসির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী কবির আহমদ, প্রকৌশলী বিশ্বজিত চৌধুরী বাবু, সাব্বির হাসান চৌধুরী, সোহেল সরওয়ার, জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান মেয়াদোর্ত্তীণ ও জরাজীর্ণ দেওয়ানহাট সেতু ভেঙে নতুন করে ৮ লেইনের নতুন সেতু নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি।

দেশের একমাত্র বৃহত্তম বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের সকল মালামাল নিয়ে ভারী যানবাহন ট্রাক, ট্যাংক লরিগুলো ২৫ থেকে ৩০ টনেরও অধিক মালামাল বোঝাই নিয়ে নগরীর একমাত্র ভিআইপি সড়ক শেখ মুজিব রোড হয়ে দেওয়ান হাট সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে। বর্তমানে সেতুটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এটির উপর দিয়ে এরকম আধিক বোঝাইকৃত যানবাহন চলাচল করলে যে কোনো মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই দেওয়ানহাট সেতুটিও নতুন করে নির্মাণ করা আবশ্যক। উপরন্তু এক্সপ্রেসওয়েটি দেওয়ান হাট সেতুর উপর দিয়ে দ্বিতল ফ্লাইওভার ব্রিজ হিসেবে নিয়ে গেলে চট্টগ্রামের সৌন্দর্য ও নান্দনিকতা বৃদ্ধি পাবে। আর যদি এক্সপ্রেসওয়ে দেওয়ানহাট হতে শুরু করা যায়, তাহলে নির্মাণাধীন এক্ষপ্রেসওয়ের জন্য প্রস্তাবিত দেওয়ানহাট ব্রিজের পশ্চিম পাশের জায়গার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থেরও  সাশ্রয় হবে। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- এলিভেটেড এক্সপ্রেস নির্মাণ করতে গিয়ে কোথাও কোনো দোকান, ভবন বা মার্কেট সম্পূর্ণভাবে ভাঙতে হয়নি। কিন্তু দেওয়ানহাটের উপর দিয়ে এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করতে গেলে কয়েকটি মার্কেট ও ভবন ভাঙতে হবে। যার কারণে এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুইশত ব্যবসায়ী ও তাদের সঙ্গে  সম্পৃক্ত কর্মচারি-কর্মকর্তা মিলে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে বিধায় দেওয়ানহাট থেকে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হলে এ সমস্ত লোক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পাবে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, দেশের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের সুতিকাগার চট্টগ্রাম। বৃটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ঐতিহাসিক ছয় দফাসহ স্বাধীনতা সংগ্রামে অনন্য অবদান রয়েছে এ নগরের। কিন্তু উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সবসময় পিছিয়ে ছিল। ২০০৯ সাল থেকে আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ কাঁধে নিয়ে চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের শহরে রূপান্তরিত করতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বর্তমানে চট্টগ্রামে অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে এসব প্রকল্প পরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়নে বহুমাত্রিক সমস্যার সৃষ্টি করছে। বর্তমানে নগরীর বাস্তবায়নাধীন মেগাপ্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়িত হলে নান্দনিক চট্টলার শ্রীহানি ঘটবে। পর্যটন ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের নান্দনিক সৌন্দর্য বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। বিশেষ করে নগরীর টাইগারপাস-লালখান বাজারস্থ পাহাড়বেস্টিত এলাকাটি আগন্তুকদের চোখ এড়ায় না। যেটি পর্যটকদের জন্য অন্যতম উপভোগ্য। টাইগারপাস-লালখানবাজার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হলে জৌলুস হারাবে অত্র এলাকা। কারণ ফ্লাইওভারের কারণে সড়কের উভয় পাশে বিদ্যমান পাহাড়গুলো আড়াল হয়ে যাবে। ফলে উক্ত এলাকাটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। তাই এটি যদি দেওয়ানহাট এলাকা থেকে শুরু করা হয়, তাহলে জনস্বার্থ সুরক্ষিত হবে। সঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও রক্ষা হবে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply