১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৩:০৬/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৩:০৬ অপরাহ্ণ

পতেঙ্গায় চলছে প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা, জুয়ার আসর ও অসামাজিক কাজ

     

নিজস্ব প্রতিনিধি
পতেঙ্গার পাড়া-মহল্লায় ও অলিতে গলিতে প্রকাশ্যে চলছে মাদক বেচাকেনা,  দেহ ব্যবসা ও জুয়ার আসর। বহু ভাড়া বাসায়  ও আবাসিক হোটেলে ইয়াবা বেচা বিক্রি চলছে, চলছে অসামাজিক কাজও। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, স্টিলমিল মুন বেকারি গলি,  হাউজিং কলোনি ও কাঠগর মুসলিমাবাদ পুরো এলাকা জুড়ে, খালপাড়, চড়িহালদা, নাজির পাড়া , বিজয় নগরে  চলছে অবাধে এইসব অপকর্ম। এলাকার স্থানীয় লোকদের ধারনা , পুলিশ জঙ্গি বিরোধী অভিযান নিয়ে ব্যস্ত,  এই ব্যস্ততার সুযোগে মাদক বেচাকেনা বেড়েছে এবং কোনো কোনো এলাকায় জুয়ার আসরও বসানো হয়েছে।
এখানে দিনের চেয়ে রাতের চিত্র ভয়াবহ। মুসলিমাবাদ এলাকার জনৈক মসজিদের ইমাম নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই এলাকায় থানার সোর্সরা আসামি ধরার নামে পুলিশের সঙ্গে গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। ওই  সোর্সরাই টাকার বিনিময়ে মাদক, দেহ ব্যবসা ও জুয়া খেলার সুযোগ করে দেয়।
 আবার কেউ এসব কাজে বাঁধা দিলে সোর্সরা তাদেরকে কৌশলে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর নাম ভাঙ্গিয়েও এই সব অপকর্ম চালাচ্ছে তারা।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আরো বলেন পতেঙ্গা এলাকার কালোবাজারী ব্যবসায়ীরা যেন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।
 এ বিষয় নিয়ে ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার এর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে ফোনে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ফোন রিসিভ করে পরিচয় দেন কমিশনার সাহেবের পিএস হিসেবে।  কমিশনার সাহেবের পিএস এ বিষয়ে সব অস্বীকার করেন এবং তিনি বলেন আমাদের চোখে এমন কিছু পড়েনি। তবে এলাকায় এমন কিছু হলে অবশ্যই আমরা পদক্ষেপ নেব।
 পূর্ব বাংলার অনুসন্ধানে এসেছে, এইসব অপকর্মের পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করছে থানা পুলিশের কতিপয় সোর্সরা, স্থানীয় দূর্নীতিবাজ হাইব্রীড পাতি নেতা, কয়েকজন অসৎ ও ভুয়া সাংবাদিক  এবং  তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা।
 অনুসন্ধানে দেখা যায়, কাঠগর এলাকার মুজাফফর বিল্ডিং নামে এলাকায় অতি পরিচিত সেই বিল্ডিংয়ে দ্বিতীয় তলায় ও তৃতীয় তলায় চলছে দেহ ব্যবসা । সেখানে পরিচালক হিসেবে আছেন রুপা নামের এক মধ্য বয়সী মহিলা।  তার হাত ধরেই কাস্টমারেরা এখানে আসা যাওয়া করে । তার মোবাইল নাম্বারে ০১৭২৫ ২৮৯৭১১ যোগাযোগ করলে এই প্রতিনিধিকে মোজাফফর বিল্ডিং এর দ্বিতীয় তলায় আসতে বলে ও বলেন ‘ভাই ভালো নতুন জিনিস আছে আসেন’।এই বিল্ডিং এর তয় তলায় সুন্দরী তানিয়া পরিচালনা করে থাকে। ০১৮৪৩ ৭৭৯২২৬ নাম্বারে তানিয়া সকল খদ্দের এর সাথে যোগাযোগ করে থাকে। তারা সদর্পে বলে বেড়ায় পুলিশের বড় বড় কর্তাদের সাথে তাদের রয়েছে শাররীক ও আর্থিক লেনদেন । তাই তারা কাউকে ভয় করে না। বরিশাল হোটেল ( বিএসএফ )নামের আবাসিক হোটেলেও  চলে মাদক বিক্রি ও অসামাজিক কাজ। উল্লেখিত এই নাম্বার দুটোর কল রেকর্ড দেখলে এসব ঘটনার সত্যতা মিলবে। মুজাফফর বিল্ডিং এর মালিক হলেন আকবর। মুজাফফর হলেন আকবরের পিতা।
আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্টিল মিল এলাকায় নিপা নামের এক হিজরা যেন গড়ে তুলেছেন অপরাধ সম্রাজ্য। তার অপরাধের সাম্রাজ্যের সীমানা হলো খালপাড়, হাউজিং কলোনি,  স্টিলমিল এলাকার মুন বেকারি গলি। সে যেন কাউকে তোয়াক্কা করছে না। তার ভয়ে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে থাকে সব সময়। প্রশ্ন একটাই একজন হিজড়ার এত শক্তি কোথা থেকে পায় ? তার ০১৮৩৭০৯২০৭০ এই নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি যেন অন্য কৌশল অবলম্বন করেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ সে ইয়াবা গাঁজা মদসহ নারী ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে সব সময়। এলাকার লোকেরা বলেছেন তাকে এই এলাকা থেকে তাড়ানো গেল এসব অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে।
 এদিকে বাংলাদেশের সব জায়গায়  এখন ক্যাসিনো ব্যবসা বন্ধ রয়েছে । এমন সময়েও চড়িহালদা , চরপাড়া  ও নাজির পাড়া এলাকায় চলছে এক বিশাল আকারে জুয়ার আসর ।চড়িহালদায় জনৈক জামাল দুই কমিশনারের নাম বিক্রি করে জুয়ার আসর চালায়।
 নাজিরপাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের জানান, এই জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করেন আরমান নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। কিন্তু তার সাথে সহযোগী হিসেবে রয়েছে আরও অনেক হাইব্রীড পাতি নেতা।   সবকিছু ম্যানেজ করেন আরমান নামের ওই ব্যাক্তি। আরমান নামের ওই ব্যক্তির সাথে ফোনে কথা বললে প্রথমে সবকিছু অস্বীকার করেন। পরে তিনি হুট করে বলে বসেন ভাই একটু আসেন আপনার সাথে মুখোমুখি কথা বলি।
 এলাকার জনগণ এ বিষয় নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে ।।স্থানীয়দের অভিযোগ এভাবে জুয়ার আসর বসিয়ে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। উঠতি বয়সে যুবকরা জুয়ার আসরে গিয়ে টাকা পয়সা হারিয়ে দিন দিন নিঃস্ব হচ্ছে। পরিবারে অশান্তি তৈরী হচ্ছে। স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলেরার মা বাপকে ফাঁকি দিয়ে এসব আসরে যাচ্ছে। যা নিয়ে এলাকায় ক্রোভ বাড়ছে।
 এইসব কিছুর পেছনে রয়েছে পুলিশের আশ্রয়ে থানার সোর্সদের হাত । অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায় রিফাত নামের এক সোর্স রয়েছে এখানে ।তার নামে একাধিক মামলাও রয়েছে।  তারপরেও দেখা যায় পুলিশের সাথে আড্ডায় মেতে থাকে সে সব সময়।কয়েকজন নামধারী সোর্সও রয়েছে তাদের সাথে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীও।
এ বিষয় নিয়ে পতেঙ্গা থানার ওসি তদন্ত মনিরুজ্জামান সাহেব এর সাথে কথা হয় । তিনি বলেন আমরা প্রতিদিন এ বিষয়ে অভিযান চালাচ্ছি। আমরা সব সময় প্রস্তুত আমাদেরকে ইনফরমেশন দিন। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে এবং প্রতিনিয়ত এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলাও হচ্ছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply