২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১:৩২/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ১:৩২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে সরকারী উদ্যোগে আইসিইউসহ ৫ শত বেডের দুইটি করোনা চিকিৎসার পরিপূর্ণ ফিল্ড হাসপাতাল চালু করুন – মনোয়ার হোসেন

     

চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যরিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেছেন, দেশে নোবেল করোনা ভাইরাস সংক্রামণ আশংকাজনক বাড়ছে প্রতিদিন এবং এই সাথে বাড়ছে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হাসপাতালে রোগীর ভিড়।  অনেক স্থানে হাসপাতাল বেড না পাওয়ায় হাহাকার চলছে। এতে একটা নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার থেকে বাঁচাতে জাতীয় অর্থিনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রামের জন্য আর কাল বিলম্ব না করে সরকারী উদ্যোগে আইসিইউ সহ ৫ শত বেডের অন্তত দুইটি করোনা চিকিৎসার পরিপূর্ণ ফিল্ড হাসপাতাল চালুর জন্য আহবান জানিয়েছেন। এর জন্য সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের সহায়তা নেয়া যেতে পারে যেমন ঢাকায় তাদের তত্ত্বাবধানে ১ হাজার বেডের একটি করোনা চিকিৎসার ফিল্ড হাসপাতাল  অতি সত্বর চালু হতে যাচ্ছে। ঢাকায় এখন করোনা রুগীদের জন্য এত হাজারেরও বেশি বেড রয়েছে বলে গতকাল স্বাস্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। এর পরেও চট্টগ্রামে এধরণের একটি ফিল্ড হাসপাতাল জরুরি ভিত্তিতে চালু না করার কোন কারণ নাই।  তিনি এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ঢাকায় এর মধ্যে সরকারের এবং বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য সেন্টার চালু হয়েছে। অথচ জনসংখ্যা, গুরুত্ব ও ঝুঁকি বিবেচনায় চট্টগ্রামের অগ্রাধিকার থাকলেও এ ব্যপারে অবহেলা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। এবং বারবার এই বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম থেকে দাবি দেওয়া সত্ত্বেও এটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে যাওয়ার আগেই জরুরী ভিত্তিতে এ ব্যপারে সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

আজ (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যার চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের বর্তমান সংক্রামণ এর  উদ্বেকজনকে পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় এবং পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ কল্পে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যরিস্টার মনোয়ার হোসেন উপরোক্ত আহবান জানান।

ব্যরিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেন, আধুনিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বেশ পিছিয়ে আছে। যার ফলশ্রুতিতে এখন করোনাভাইরাসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের চরম সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এটি জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ কেন্দ্র কিংবা দ্বিতীয় রাজধানীর বলে খ্যাত চট্টগ্রামের মানুষের জন্য খুবই লজ্জাজনক।

চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় এই ভার্চুয়াল সভায় আলোচনায় অংশ নেন যথাক্রমে কাজী গোলাপ রহমান, ডাক্তার নাহিদা খানম, ডাক্তার সাঈদ আহমেদ, ডাক্তার শেখ জাহেদ, একরাম হোসেন, ডাক্তার শোয়েব, এজিএম জাহাঙ্গীর আলম, কামরুল ইসলাম, অধাপক ড: শ্যামল কান্তি দত্ত, কানিজ ফাতিমা লিমা, তসলিম খাঁ, ইমতিয়াজ আহমেদ, কাওসার হোসেন বাপ্পি, সোহেল মাহমুদ প্রমূখ।

সভায় সর্বসম্মতিক্রমে  চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে  করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সাহায্যার্থে “টেলিফোন হেল্প মেডিকেল টিম” গঠন করা হয় এবং এতে যুক্ত হওয়ার জন্য চট্টগ্রামের উৎসাহী চিকিৎসকদেরকে আহবান জানানো হয়। সভায় বাংলাদেশের সংসদ সদস্য চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান সাবেক চিত্রনায়িকা কবরী সরওয়ারের এবং সাম্প্রতিক যাঁরা করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং তাঁদের পরিবার পরিজনদের প্রতি শোক এবং সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।

সভায় এছাড়া এক প্রস্তাবে বলা হয় যে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ব্যবসায়ী মহল শংকিত হয়ে পড়েছে লগডাউনের কারণে। ফোরাম মনে করে লকডাউন মানুষের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন এবং  সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেটা মেনে চলা উচিত। তার পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের বিশেষ করে তাদের কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে অর্থ সাহায্য দেওয়া উচিত ।

এছাড়া ফোরাম করোনাভাইরাসের ভাক্সিন নেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান এবং বলেন যে, এই ভ্যাক্সিনের বিষয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কোন কারণ নেই। ভাক্সিন নিলে মানুযের নিরাপত্তা বাড়বে। এছাড়া তাঁরা জনসাধারণের প্রতি করোনাভাইরাসের যেসব বিধিনিষেধ যেমন সামাজিক দুরত্ব ইত্যাদি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যেহেতু করোনাভাইরাস আমাদের বিশ্ব থেকে অতি সহজে এখনি বিতাড়িত হচ্ছে না। আমাদের সচেতন এবং এ বিযয়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনে কঠোর নিয়ম অনুসরণ এবং সাবধানতা অবলম্বনের কোন বিকল্প নেই। মানুষের অবহেলা মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। এই সাথে চিকিৎসা ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি এবং আরো সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন বলে মনে করেন এবং এই ক্ষেত্রে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল গুলোকে আরো এগিয়ে আসার জন্য তাঁরা অনুরোধ জানান। তাঁরা সিটি করপোরেশন এবং বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোগে আরো আইশোলেসন সেন্টার এবং সাময়িক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন।
নাগরিক ফোরাম চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তদের সহায়তার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি  টেলি মেডিকেল সহায়তা টিম গঠন করেছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply