২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:২৯/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৫:২৯ অপরাহ্ণ

বাবুর স্বাধীনতা পদক ও জাবেদের জাতি সংঘ পদক এবং ‘ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ড’ চট্টগ্রামবাসীর দূর্লভ সম্মান

     

এম. আলী হোসেন

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এবার মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পুরুষ্কার পেলেন। এটি রাস্ট্রের স্বীকৃত সেরা পুরুষ্কার । এবার আরো ১ প্রতিষ্ঠান ৯ খ্যাতিবান ব্যাক্তিও এই পদকে ভুষিত হন। আনোয়ারায় জন্ম নিয়েছেন এমন কোন ব্যাক্তি’র ভাগ্যে এমন দূর্লভ পদক আগে আর জুটেনি। এটি সত্যিই আনোয়ারা তথা গোটা চট্টগ্রামবাসীর জন্য খুশী ও মহা আনন্দেের খবর। বলা যায় ‘২১ সালে বাবু ভক্তদের জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন। এই অর্জন ঐতিহাসিক ও চির জাগরুক।

অন্যদিকে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর  বড় ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ভুমি প্রতিমন্ত্রীতে সফলতা দেখিয়ে পূর্ণ মন্ত্রী হলেন গেলবার সরকার গঠনের সময়। আনোয়ারায় এই প্রথম প্রতিমন্ত্রী ও পরে পূর্ণমন্ত্রী হবার দূর্লভ গৌরব অর্জন করলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এর আগে দক্ষিণ চট্টগ্রামে কর্ণেল অলি আহমেদ ও মন্জুর মোরশেদ খান বিএনপি সরকার আমলে পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক নুরুল ইসলাম  চৌধুরী   ও জাফরুল ইসলাম চৌধুুরী দুইজন দুইদলের আধা মন্ত্রী আর পরে পুরো মন্ত্রী হতে পারেননি। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৭০ সালে তৎকালীন জাতীয় পরিষদের সদস্য ও ১৯৭৩-৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে জাফরুল ইসলাম চৌধুুরী বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি আমলে। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম  চৌধুরী  পটিয়া ও জাফরুল ইসলাম চৌধুুরী বাঁশখালীতে জন্ম গ্রহণ করেন।

নুরুল ইসলাম চৌধুরী ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৪৬-৪৭ সালে তিনি তদানীন্তন বঙ্গীয় মুসলিম ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারীদের ধর্মঘটের সময় সলিমুল্লাহ মুসলিম ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কৃত হন। ১৯৫১ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে মহান ভাষা আন্দোলনে তিনি অগ্রসৈনিক ছিলেন। ১৯৫২-৫৪ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি । ১৯৫৩-৫৮ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৫৫-৫৮ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সদর মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজনৈতিক কারণে কারাবরণও করেন।

১৯৫২-৭১ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করেন এবং মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত ঢাকা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন পূর্বাঞ্চলীয় ১ নম্বর জোনাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং ১৯৭১ সালে পূর্বাঞ্চল যুবশিবির ১ নম্বর সেক্টরের পরিচালক ছিলেন।

তিনি ১৯২৫ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার গোবিন্দরখীল গ্রামের সম্ভ্রান্ত হাদু চৌধুরী বংশে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯৫ সালের ৩ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের মন্ত্রীর ইতিহাস খুঁজলেই  অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কর্ণেল অলি আহমদ, মন্জুর মোরশেদ খান, জাফরুল ইসলাম চৌধুুরী ও সর্বশেষ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নাম চলে আসবে।

অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কর্ণেল অলি আহমদ, মন্জুর মোরশেদ খান, জাফরুল ইসলাম চৌধুুরীরা কেউ জাতি সংঘ পদক পাননি। পারেননি ‘ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ড’ এ নিজেকে সম্পৃত্ত করতে । ভুমি মন্ত্রণালয় ও সম্পৃত্ত জনসাধারণের কল্যাণে বিশেষ বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ এসব পদকে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ভুষিত হন। এ সম্মান দেশবাসীর জন্য গৌরব বয়ে এনেছে। বয়ে এনেছে আনোয়ারার মানুষের জন্য মাথা উচু করে দাঁড়াবার মহা মনোবল।

 

 

 

 

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply