২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:৪৩/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

সোয়াত জাহাজ অবরোধস্থলে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি

     

একাত্তরের ২৪ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নিরস্ত্র বাঙালি হত্যার উদ্দেশ্যে  পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে আসা অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ বোঝাই জাহাজ এমভি সোয়াত অবরোধ দিবস স্মরণে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ৫০ বছর আগে এই দিনে চট্টগ্রামের শ্রমিক কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ সুদৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে জনযুদ্ধের সূচনা করেছিল, যার সফলতা আসে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পন ও ১৬ ডিসেম্বরের চূড়ান্ত বিজয়ে। অর্জিত হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ। তারা বলেন পাকিস্তানী সৈন্যরা যখন এদেশের মুক্তিপাগল জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য অস্ত্র নিয়ে আসে তখন পাকিস্তানী সেনা অফিসার জানজুয়ার নির্দেশে বাঙালি সেনা অফিসার জিয়াউর রহমান সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে যান। তবে নগরীর আগ্রাবাদে জনতার প্রতিরোধের মুখে তিনি পিছু হটেন এবং ফিরে আসেন। এর পর পরই হানাদার বাহিনীর গুলিতে অনেক নিরস্ত্র বাঙালি হতাহত হয়। সেসব ইতিহাস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বন্দর এলাকার অবরোধস্থলে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য বক্তারা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন “হৃদয়ে বাংলাদেশ চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ” এর উদ্যোগে সংগঠনের সহ-সভাপতি যদু সিংহের সভাপতিত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা কিরণলাল আচার্যের সঞ্চালনায় অবরোধ দিবস পালনের এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধকালীন কমান্ডার ও বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ যে প্রতিবাদী জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে জনযুদ্ধে রূপ নিয়েছিল তার সূচনা হয়েছিল ২৪ মার্চের অবরোধ দিবসের মধ্য দিয়ে। নগরীর চেরাগী মোড়ে কদম মোবারক স্কুল প্রাঙ্গণে ২৪ মার্চের এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার চট্টগাম ব্যুরো প্রধান, বিশিষ্ট পেশাজীবী নেতা ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে জনগণ অকাতরে প্রাণ দিয়েছিল তা মহলবিশেষের ষড়যন্ত্রে আজ ভুলুষ্ঠিত হতে চলেছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বন্দর সিবিএ নেতা আবদুর রহমান সিকদার সোয়াত জাহাজ অবরোধস্থলে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানান। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক নেতা ভানু রঞ্জন চক্রবর্ত্তী, চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াসা সিবিএ সভাপতি, যুদ্ধকালীন গ্রæপ কমান্ডার মোঃ নুরুল ইসলাম, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর মানিক চৌধুরীর পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা দীপংকর চৌধুরী কাজল, অধ্যক্ষ আবদুল মালেক, বন্দর সিবিএ সদস্য ও শ্রমিক নেতা মুহাম্মদ নুরুল কাদের, সাংবাদিক আশীষ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সংগঠক সজল চৌধুরী, ব্যাংকার টিটো শীল, মুক্তিযোদ্ধাÑসাংবাদিক পংকজ কুমার দস্তিদার প্রমুখ। মুক্তিযোদ্ধা কিরণ লাল আচার্য সভার শুরুতে সোয়াত অবরোধ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply