২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ১০:০০/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ১০:০০ অপরাহ্ণ

‘আ.লীগের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ নেই’

     

আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্থ পাচারের অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের কারো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অর্থ পাচারের কোনো অভিযোগ পাই নি।  সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদক মন্ডলীর সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার উদ্বেগজনক, কথাটা অসত্য নয়। এখনও হচ্ছে। ভারতেরও অনেক টাকা পাচার হচ্ছে। উদ্বেগজনক বলেতো আমরা তদন্ত করতে বলেছি। এখানে আমরা স্বচ্ছতা চাই।’

কারা কারা অর্থ পাচার করছে তা বের করতে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্বচ্ছতার প্রয়োজনে যা করার দরকার আমরা রাজি আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি দেখবে। ’

ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অর্থ পাচারের রেকর্ড বিএনপির আছে। তাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এফবিআই সাক্ষী দিয়ে গেছে। কোকোর টাকার কথা সিঙ্গাপুরে প্রমাণিত। তাদের মানিলন্ডারিং বিষয়টি সবার কাছে সুপরিচিত এবং আদালতে প্রমাণিত।

তিনি বলেন, সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচারের সঙ্গে রাজনৈতিক কোন সম্পর্ক নেই। রাজনীতি করে কেউ এমন কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর এবং কোনো আপোস হবে না।

এসময় নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারই সহায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেভাবেই আমাদের দেশেও আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকারই নির্বাচন সহায়ক সরকার হিসেবে কাজ করবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের একটি সংবিধান যেমন রয়েছে তেমনি একটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) রয়েছে। আর সংবিধান অনুযায়ী ইসি’র অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকার শুধু সরকারের রুটিন অনুযায়ী কাজ করবে। এ সরকার গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উপ-কমিটির সহসম্পাদক ও সদস্য মনোনয়নের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের ১৭টি উপ-কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য সচিব নির্বাচন করা হয়েছে। সভায় এ উপ-কমিটির সহসম্পাদক ও সদস্যদের নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী ৬ জুলাই সম্পাদক মন্ডলীর সভায় এ বিষয়ে আরো আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উপ-কমিটির সদস্য সচিবগণ যে নাম প্রস্তাব করবেন সেখান থেকে বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনে যারা রয়েছে তারা উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হতে পারবে না। তবে তাঁরা এ উপ-কমিটিগুলোর সদস্য হতে পারবে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, এ উপ-কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতাদের পাশাপাশি সংসদ সদস্য, নিজ নিজ বিষয়ে অভিজ্ঞরা থাকবেন। তবে সহ সম্পাদকের সংখ্যা একশ’র বেশী হবে না।

জেলা কমিটির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের জেলা কমিটিগুলোর মধ্যে আটটি জেলার সভাপতি সাধারণ সম্পাদকরা এখনও পূণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়নি। এ জেলাগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাদের সাথে আলোচনা করে এ কমিটিগুলোকে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ করা হবে।

পুরো জুলাই মাস আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকান্ড চালানো হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি এ সময় একটি গণমুখী ও জনবান্ধব বাজেট দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্পাদক মন্ডলীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মেজবাহউদ্দীন সিরাজ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানাসহ সম্পাদক মন্ডলীর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সম্পাদক মন্ডলীর এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা পরিচালনা করেন মাহবুব-উল-আলম হানিফ।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply