২৪ এপ্রিল ২০২৪ / ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ১১:১২/ বুধবার
এপ্রিল ২৪, ২০২৪ ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

সেবা সংস্থার ওপর কর্তৃত্ব চান চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল

     

বন্দরনগরীর উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সেবা সংস্থাগুলোর ওপর কর্তৃত্ব চান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে শনিবার সকালে চট্টগ্রাম জার্নালিস্ট ফোরামের সংবর্ধনা ও মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

মেয়র রেজাউল বলেন, সমন্বয়ের অভাবে আগেও অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়নি। সিটি করপোরেশন উন্নয়নের জন্য যে সমন্বয় সভাগুলো করে সেখানে দেখা যায়, অনেক সময় সেবা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত থাকেন না। দায়িত্বশীল কেউ থাকেন না। তাদের প্রতিনিধি পাঠান। তারা কখনোই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

আর এ কারণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপও নেয়া যায় না। এসব সেবা সংস্থার ওপর মেয়রের কর্তৃত্ব থাকতে হবে। তাদের জবাবদিহিও নিশ্চিত করতে হবে। এটা না হলে টেকসই উন্নয়ন কখনোই বাস্তবায়ন করা যাবে না; বরং পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করবে।

উদাহরণ টেনে মেয়র বলেন, একটি সড়ক হয়তো সিটি করপোরেশন তৈরি করেছে। দেখা যাবে, দুই মাস পর সেবা সংস্থাগুলো খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দিল। এতে এ সড়ক নগরবাসীর কোনো কাজে এলো না, বরং মানুষের ট্যাক্সের টাকা অপচয় হলো।

দায়িত্ব নেয়ার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চট্টগ্রাম নগরীর মশা নিয়ন্ত্রণের কথা জানান মেয়র রেজাউল।

তিনি বলেন, ‘মশা নগরবাসীর জন্য একটি জটিল সমস্যা হিসেবে সামনে এসেছে। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনে পুরোটা না পারি অন্তত ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মশা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেব।

‘এ ছাড়াও নগরীর পরিবেশ রক্ষায় মনোযোগ দেব। নগরীর সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এগুলোতে ছোটখাটো মেরামত করে যতটুকু পারা যায় নগরবাসীকে স্বস্তি দেয়াই হবে আমার প্রথম কাজ।’

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনেও উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান তিনি। বলেন, ‘কেউ যদি বলে ছয় মাসের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান করে দেন, তা আমার জন্য সম্ভব না। সরকারের একটি প্রকল্প চলমান আছে, এটি শেষ হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।

‘এ সমস্যা থেকে পরিপূর্ণ মুক্তির জন্য নতুন খাল করতে হবে। এ ছাড়াও আমাদের অনেক খাল ভরাট হয়ে গেছে, প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছেন। তাদের কাছ থেকে খালগুলো উদ্ধার করার চেষ্টা আমি করব। এগুলোকে মুক্ত করে জল চলাচলের ব্যবস্থা করা গেলে আগামী পাঁচ বছরে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সমস্যা সমাধান হবে।’

মেয়র বলেন, ‘আমার চাওয়াপাওয়ার কিছু নেই। ৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কখনই কোনো অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত ছিলাম না। ভবিষ্যতেও শতভাগ সততার সঙ্গে কাজ করে চট্টগ্রামকে পরিপূর্ণ পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

‘এ শহরে শিশুদের খেলার জায়গা কমে আসছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে না পারি যেখানেই জায়গা পাওয়া যাবে, শিশুরা যেন একটু মুক্ত বাতাস নিতে পারে, সে ব্যবস্থা আমি করব। এ ছাড়াও মুক্তবুদ্ধির চর্চার জন্য শহরের কয়েকটি এলাকায় সাংস্কৃতিক জোন করে দেব যেন শিশু-কিশোরদের সংস্কৃতিক বিকাশ ঘটে।’

এ ছাড়াও পরিপূর্ণ নগর গড়ে তুলতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দেবেন বলেও জানান তিনি। রেজাউল করিম বলেন, ‘ব্যক্তি চিন্তায় অনেক সময় ভুল থেকে যায়, সামষ্টিক চিন্তায় ভুল কম হয়।’

ভোটের অধিকার কেউ হরণ করেনি

মিট দ্য প্রেসে চসিক নির্বাচনে কম ভোটার আসার প্রসঙ্গ তোলা হলে মেয়র বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার কেউ হরণ করেনি। যারা ভোট দিতে এসেছিল তারা কিন্তু ভোট দিতে পেরেছে। কেউ বাধা দেয়নি।’

নির্বাচনে জয় পাওয়া অন্তত ৫ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে; তাদের সঙ্গে সিটি করপোরেশন কীভাবে চালাবেন জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘তারা সবাই জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়েছে। কে সন্ত্রাসী, কে না এটা কীভাবে প্রমাণ হবে।’

তারা অপরাধী কি না, তা প্রমাণ হবে আদালতে। অভিযোগ থাকলেই কাউকে সাইড করে ফেলব এটা ঠিক না। তারা তো সাজাপ্রাপ্ত হয়নি।’

করোনার কারণে গত বছরের মার্চে স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ২৭ জানুয়ারি। কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, একজনের প্রাণহানি আর ভোটার খরার মধ্যেই জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

নগরীর ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩টির ফলাফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী পান ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২৪৮ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের ধানের শীষে ভোট পড়ে ৭ ভাগের ১ ভাগ মাত্র। তিনি পান ৫২ হাজার ৪৭৯ ভোট।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply