২৩ এপ্রিল ২০২৪ / ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৩:০৭/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ২৩, ২০২৪ ৩:০৭ অপরাহ্ণ

সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামী দিদারুল আলম মাসুম ও তার ক্যাডারদের গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

     

কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৪নং লালখান বাজার ওয়ার্ডে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী বিএনপি জামাতের এজেন্ট, সিএমপি’র তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামী দিদারুল আলম মাসুম ও তার ক্যাডারদের গ্রেফতারের দাবীতে আজ ১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এস রহমান হলে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আবুল হাসনাত মো: বেলাল বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা রাজনীতিতে সততা, মেধা, কর্মদক্ষতা বিবেচনায় জনসম্পৃক্ত ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি তৈরী করার যে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন তারই প্রতিফলন ১৪নং লালখান বাজার ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আমার এই মনোনয়ন প্রাপ্তি। রাজনীতিতে আমার এই অর্জনকে অর্থবহ করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগরীতে নেতিবাচক লালখান বাজারের পরিবর্তে একটি ইতিবাচক লালখান বাজার গড়ার প্রত্যয়ে “আগামীতে সবার জন্য নিরাপদ লালখান বাজার” শ্লোগান নিয়ে আমি জনগণের কাছে হাজির হই। গত ২৯ মার্চ ২০২০ অনুষ্ঠিতব্য নিবার্চন মহামারী করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থগিত হলে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমার ওয়ার্ডের জনগণের পাশে থেকে এই মহামারী মোকাবিলায় নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। শুরুতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৫ হাজার পরিবারের ঘরে ঘরে গিয়ে নেতাকর্মীরা সুরক্ষা সামগ্রীসহ জনসচেতনতামূলক লিফলেট পৌঁছে দেয়। করোনা পরিস্থিতির শুরুতে সম্মূখসারির যোদ্ধা হিসাবে বিবেচিত ডাক্তার, পুলিশ, মিডিয়া কর্মী, লাশ দাফনে নিয়োজিত বিভিন্ন সংগঠনের মাঝে ২হাজার ৫শত পিপিই ও অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করে তাদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করি। লালখান বাজার ওয়ার্ডে ১০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করে তাদের পাশে দাড়ানোর পাশাপাশি রোজার সময় সেহেরীতে প্রতিরাতে ৬শত রোজাদারের জন্য সেহেরীর ব্যবস্থা করি। এই কার্যμম পরিচালনা করতে গিয়ে আমি নিজেও করোনায় আকান্ত্র হই। আমি যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র আস্থা ও বিশ^াসের প্রতিদান ও মনোনয়নের যৌক্তিকতা প্রমান করতে একের পর এক গণমূখী কার্যμম চালাচ্ছি ঠিক তখন মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার যাতনায় প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস স হত্যা মামলার আসামী সিএমপি’র তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী, গডফাদার দিদারুল আলম মাসুম ও তার ক্যাডাররা আমাকে আমার পরিবারকে টার্গেট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকী-ধমকী, অপপ্রচার চালানোসহ একের পর এক নেতাকর্মীদের মামলা দিয়ে, হামলা করে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ সংক্রন্ত্র থানায় জিডি, মাননীয় পুলিশ কমিশনার ও র‌্যাবের কাছে দরখাস্ত দিয়ে আমি ও আমার নেতা-কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আশংকার কথা জানায়। ২৭ জানুয়ারী ২০২১ নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষনার পর মাসুমের এই আগ্রাসী পদক্ষেপ আরও ভয়ংকর রূপ নেয়। তার নির্দেশে তার অনুগত বাহিনী আমার নেতাকর্মীদের ছুরিকাঘাত করে হত্যা চেষ্টাসহ নির্বাচনী কর্মকান্ডে আমাকে কর্মীশূন্য করতে নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে হামলা করে। এ সংμান্তে খুলশী থানায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ করোনায় আμান্ত হয়ে আমার মা ইন্তেকাল করেন। মায়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে আমি ২য় বারের মতো করোনায় আμান্ত হই। এরমধ্যে আমার একটি শারীরিক অস্ত্রোপচারও হয়। শোক ও শারীরিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে আমার বিলম্ব হয়। নির্বাচণী প্রচারণা শুরুর পর মাসুম ও তার ক্যাডার বাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন সভা সমাবেশে আমাকে উদ্দেশ্য করে আμমনাত্বক বক্তব্য প্রদান করে। এ সংμান্ত একটি জিডি করতে আমি খুলশী থানায় গেলে কোন এক অদৃশ্য কারণে তা গ্রহণ করা হয়নি। সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি রক্ষায় আমরা নির্বাচন কমিশনকেও মাসুম ও তার বাহিনীর কার্যμম সর্ম্পকে অবহিত করি। আমার সকল আশংকাকে সত্য প্রমাণিত করে নির্বাচনের দিনে মাসুম ও তার ক্যাডার বাহিনীর নেতৃত্বে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শাহ আলম, বিদ্রোহী প্রার্থী মানিক, টাইগার পাশের জোড়া খুন মামলার আসামী লিমন বাহিনী আমার নেতাকর্মীদের উপর বিভিন্ন কেন্দ্রে যুগপথ হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমার বিভিন্ন কেন্দ্র কমিটির আহবায়ক, সচিবসহ ২২জন নেতাকর্মী আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীণ আছে। এসময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করলেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত সেই অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। আরো উদ্বেগ ও আশংকার বিষয় হলো যে কেন্দ্রটিকে চট্টগ্রামের সবচেয়ে নিরাপদ কেন্দ্র বলে বিবেচনা করা হয় যেখানে মাননীয় পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়সহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কার্যালয় আছে সেই পুলিশ লাইন কেন্দ্রে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী শাহ আলম ও তার ছোট ভাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী কামালের নেতৃত্বে দুই শতাধিক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের ছেলে তানভীর ফয়সাল ইভানসহ আমার ৪জন নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করে। এই চিহ্নিত তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী কামাল সম্পর্কে আমরা নির্বাচনের পূর্বে প্রশাসনকে অবহিত করলেও প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে সে নির্বাচনের দিনে পুলিশ লাইন কেন্দ্রে হামলা চালাতে সাহস করে। সে শুধু হামলা চালায়নি এই কেন্দ্রের অভ্যন্তরে সে ২ রাউন্ড গুলিবর্ষণও করে। অতএব এই কেন্দ্রের পরিস্থিতি অনুধাবন করে আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন লালখান বাজারের অন্যান্য কেন্দ্রে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ ছিলো। তিনি আরো  বলেন মাসুমের নেতৃত্বে বিভিন্ন কেন্দ্রে যে যুগপথ হামলা চালানো হয়েছিলো আমি মনে করি তা নির্বাচনী প্রμিয়াকে প্রশ্নবৃদ্ধ করতে একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ। সহিংসতার মাধ্যমে নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কমিয়ে আন্তর্জাতিক বিশে^র কাছে বিএনপি জামাত সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার যে প্রμিয়া গ্রহন করেছে সেই এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাসুম বিএনপি জামাতের এজেন্টের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে আজ এই বিএনপি জামাতের এজেন্ট মাসুমের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করতে ও বিভিনড়ব তদন্ত সংস্থাকে নির্বাচনের দিনে তার সরকার বিরোধী ভূমিকা তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন জানায় মাসুম নিজ সংগঠনের ৮জন নেতাকর্মীর হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী ছিলেন। একটি মামলায় সে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তও হয়। বাকি মামলায় প্রভাব প্রতিপত্তি কাজে লাগিয়ে সে পার পেয়ে যায়। এই চিহ্নিত সন্ত্রাসী দলের সুসময়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে নানা অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে আর দলের দু:সময়ে বিদেশে পাড়ি দেয়। বারবার হত্যা করে পার পেয়ে যাওয়ায় সে আজ অপ্রতিরোধ্য। তাঁর নির্দেশে ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে হত্যা করা হলেও কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে আজ অবধি সেই মামলার চার্জশীট প্রদান করা হয়নি। আমি আজকের এই সংবাদ সম্মেলন থেকে ন্যায় বিচারের স্বার্থে অবিলম্বে সুদীপ্ত হত্যা মামলার চার্জশীট প্রদান করে মাসুম ও তার ক্যাডার বাহিনীকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি লালখান বাজারের শান্তি শৃংখলা রক্ষায় অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন-১৪, ১৫ ও ২১নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা, দেলোয়ার হোসেন দেলু, কাউসারুজ্জামান, আবু সায়েদ সুমন, নিজামুল বারী, মোজাম্মেল হোসেন সোহাগ, জামমেদ আলম, সৈয়দ শওকত হোসেন, শওকত আলম, নাজমুল হাসান রুমী, সীমা আহমেদ, রুমা ইসলাম, কুলসুম মজুমদার প্রমুখ।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply