২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / সন্ধ্যা ৭:১৩/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৭:১৩ অপরাহ্ণ

সিএমপির বন্দর জোনে কতিপয় দারোগার এক থানায় পাঁচ বছর, বাড়ছে অপরাধীদের সাথে সখ্যতা

     

অনুসন্ধ্যানী রির্পোট

বানিজ্যিক রাজধানী সিএমপির গুরুত্বপূর্ণ বন্দর জোনে কয়েকজন সাব ইন্সেপেক্টর এর বিরুদ্ধে বিগত পাঁচ বছর আগে বদলী হয়ে আসা এক থানাতেই এখনো পর্যন্ত বহাল তবিয়তে থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃততার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, বন্দর জোনের পতেঙ্গা, বন্দর, ইপিজেড ও কর্ণফুলী থানার কিছু সংখ্যক সাব ইন্সেপেক্টর ৫/৬ বছর পূর্বে সচরাচর নিয়মে বদলী হয়ে আসা এখনো পর্যন্ত এক থানাতেই বহাল তবিয়তে থেকে বিভিন্ন অনিয়ম ও অপারেধের সাথে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ তুলেছেন একটি সুশীল মহল।জানা যায়, এ সমস্ত সাব ইন্সেপেক্টর তালিকায় রয়েছেন বন্দর জোনের এসআই বাবুল আক্তার, এসআই সালাউদ্দিন, এসআই মনিরুল ইসলাম ও এসআই আব্দুর রহিম মিয়াসহ এসআই আলমগীর। এরা কোন কারণে বদলী হলেও একই থানার অধীনে পুলিশ ফাড়িঁ পর্যন্ত তাদের সীমানা।

বন্দর জোন প্রিয়ভূমি হওয়ার কারণ হলো বন্দর ইপিজেডর বন্ডের চোরাই পণ্য, বিমানবন্দর রোডে স্বর্ণ চোরাচালান, পদ্মা মেঘনার তেলচুরিসহ আনোয়ারা গহিরা মইজ্যাটেক দিয়ে ইয়াবা ও মাদক পাচারকারী সম্পর্কে তাদের নক দর্পন আর বঙ্গোপসাগরতো  রয়েছেই।তবে তাদের পারফরমেন্স খাতায় তেমন ভালো কিছু নেই।তবুও দীর্ঘদিন কিভাবে এক থানা বা জোনে কাবাডি খেলোয়াড়ের মতো শু মেরে থাকা লাগে তা তাদের ভালোই জানা । তাছাড়া ওসি থেকে ডিসি পর্যন্ত কোথায় কি করতে হয় সে বিষয়ে তাদের রয়েছে অভিজ্ঞতা।

এক সাধারণ ভূক্তভোগী নাম প্রকাশনা না করা শর্তে জানায় ,এদের কথাবার্তায় এমনভাব দেখায় সাধারণ লোক কিংবা অন্য অফিসারা পর্যন্ত    হতবাক হয়। তিনি আরো জানান, কোন কোন এসআই দামী চেয়ারে বসে বলে আমি মন্ত্রীর লোক,আমার বাড়ি গোপালগঞ্জ, আমি এমপি সাহেবের কাছের লোক, আমার হাত অনেক লম্বা, আমাকে এই থানা বা জোন থেকে কেঊ সরাতে পারবে না। নেতা কেতা দেখার টাইম নাই এরকম বহু পাকা বাক্য সাধারণ লোক ও ভুক্তভোগির মুখের উপর ছুঁড়ে দেয়। ৪/৫ বছর একই থানা থেকে অনেকে লেটেস মডেলের গাড়ি বাড়ির মালিক হয়েছে আবার কেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে বৌ- শ্যালকের নামে বেনামে ব্যাংক ব্যালেন্সসহ গ্রামের বাড়ি ও ঢাকাতে রয়েছে প্রচুর অর্থ সম্পদ।

কর্ণফুলী থানার এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশনা না করার শর্তে জানায়, এ সমস্ত জৌলশপূর্ণ দারোগাদের দামী গাড়ি, দামী বাইকসহ দামী মোবাইল সেটের সামনে অন্যরা কিছুই না। থানার ওসি ও ডিসি মহোদয় অফিসে আসেন সরকারী গাড়ি দিয়ে আর কথিত গুনধর দারোগারা আসেন নিজস্ব লেটেস মডেলের পরিবহণ দিয়ে।তা ছাড়া তাদের অনেকেই রয়েছে গ্রামে ও শহরের অলিগলিতে লাখ টাকা দামের সিএনজি ও মাক্রোবাসসহ ভাড়াচালিত গাড়ি।যা অনুসন্ধান করলে সত্যতা মিলবে। বন্দর ফকিরহাটের দোকানদার পরিচয় গোপন শর্তে বলেন দীর্ঘদিন এক থানা বা জোনে থাকার কারণে বিভিন্ন অপরাধীদের সঙ্গে তাদের সু সম্পর্ক গড়ে উঠে। আবার কেউ কেউ অজান্তেই জড়িয়ে পড়ে মাদক কারবারীদের জালে ও ব্যবসায়।

অভিজ্ঞমহল মনে করেন সিএমপি যে কোন থানায় হোকনা কেন দীর্ঘমেয়াদি যদি কোন পুলিশ এক থানাতে দায়িত্ব বা আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকে তাহলে বিভিন্ন অপরাধীদের সাথে তাদের একটা সখ্যতা গড়ে উঠে এবং অপারাধীরাও বাড়তি একটু সহানুভুতি পাওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। যার ফলে অপরাধী চক্রের সাহস অনেক বেড়ে যায়।তা ছাড়া এই জোনে রয়েছে দেশের একমাত্র কর্ণদ্বার  চট্টগ্রাম বন্দর, সিইপিজেড, তেল সেক্টর, বিমান বন্দরসহ বঙ্গোপসাগরের প্রবেশমুখ কর্ণফুলী। এ সমস্ত স্পট থেকে বিভিন্ন চোরাকারবারি সিন্ডিকেট ও মাদক ব্যবসায়ীরা লক্ষ কোটি টাকার অবৈধ মালামাল নিরাপদে পাচার করে। তাই কাস্টমস, কোস্টগার্ড আর পুলিশ বলেন কেউ বদলী হয়ে আসে সুনাম অর্জনের জন্য আর কেউ আসে স্বর্ণের সিঁড়িতে পা রাখার মনোভাব নিয়ে।

এই ব্যাপারে মুঠোফোনে দীর্ঘদিন এক থানায় থাকা দারোগারাদের কারণে আগামী সিটি কর্পোরেশন নিবার্চনে কোন প্রভাব ফেলবে কিনা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মহোদয় খোরশেদ আলম সুজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নির্বাচনের বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন এই বিষয়ে কথা বলবে নির্বাচন অফিস। তা ছাড়া সাংবাদিকরা ফোন করলে আমার কলিজা নড়ে যায়। আমার দায়িত্ব সময় আর বেশী দিন নেই। তবে আমি যতদিন বেচেঁ থাকি চট্টগ্রামবাসীঁর স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার প্রয়াত চট্টল বীর নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কর্মী হিসাবে কাজ করে যাব। এই প্রসঙ্গে বন্দর জোনের ডিসি মিলন মাহমুদ এর সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এই প্রসঙ্গে আমাদের পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নিকট যোগাযোগ করলে ভালো হয়।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply