পাহাড়ে প্রতিষ্ঠার ১ বছর পার করলেন পিসিএনপি
সংবাদদাতা : ৫ ডিসেম্বর
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ প্রতিষ্ঠার ১ বছর পূর্তি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অটুট, পাহাড়ে একটি বৈষ্যম্যহীন পরিবেশ সৃষ্টি, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ, বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সংগঠনটি রাষ্ট্রের সহায়ক ভ‚মিকায় থেকে আজ ৩৬৫ দিনপঞ্জি পার করলেন। শুভ হোক পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের আগামী পথ চলা।
বিস্তৃত পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা পিসিএনপি’র দেশ প্রেমিক গর্বিত সদস্যরা চড়াই উৎরাই বর্ষপঞ্জিতে এক বছরের একটি দাগ টানলেন।
১৯৬৯ সালে ৫ ডিসেম্বর বঙ্গুবন্ধু পূর্ব পাকিস্তান নামের স্থলে ‘বাংলাদেশ’ নাম করণ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৭ লক্ষ বাঙ্গালীর বাঁশের লাঠির কাছে ৯ মাসে পরাজয় বরণ করলেন তৎকালীন শক্তিধর পাক বাহিনী এবং দেশীয় পাক দোসররা। এতে ৩০ লাখ বাঙ্গালী শহীদ হন। ৭১ এ যুদ্ধাবস্থায় পাহাড়ের কতিপয় লাটরা স্বাধীনতার বিরোধী শিবিরে ছিলো।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭২ সালে পার্বত্য ভ‚মিতে ওই সব দেশ বিরোধী শিবিরের নেতাদের প্রভাব নতুন কৌশলের আশ্রয় নেয়। শুরু করে রাষ্ট্র বিরোধী সংঘাত। ২০-২৩ বছর চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাত নিরসনে ২রা ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে সরকার বনাম জেএসএস শান্তি চুক্তি সম্পাদন হয়। কিন্তু উক্ত চুক্তির বিভিন্ন ধারা উপ ধারায় পাহাড়ে বসবাসরত বাঙ্গালী জনগোষ্ঠিকে সাংবিধানিক অধিকারচ্যুত করা হয়।
পার্বত্য ওই চুক্তির পর পাহাড়ে সিংহভাগ বাসিন্দা বাঙ্গালীরা বিরোধীতা করতে থাকে। কারণ জেলা পর্যায়ের সন্ত্রাসী বাহিনীর সর্দার সন্তু লারমার সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে এমন একটি চুক্তিতে কতটা শান্তি নিশ্চিত হবে এমন প্রশ্ন জাগে। তার পরেও চুক্তির কিছু ধারা উপধারা পরিবর্তন করার দাবীতে বিভিন্ন নাম করণে সংগঠন করে আন্দোলন করতে থাকে বীর বাঙ্গালীরা।
এদিকে চুক্তির পর থেকে সন্তু বাহিনী তাদের চাঁদাবাজী- সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করেনি। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়িতে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজী-সন্ত্রাসী, গুম-খুনের অব্যাহত ঘটনার শিকার হচ্ছেন সেখানকার বাঙ্গালী ও পাহাড়ী জনগোষ্ঠি।
সাম্প্রতিক সময়ে সন্তু লারমার অনুগত্যরা বান্দরবানেও একের পর এক হত্যা মিশন চালিয়ে তাদের স্বগোত্রের মানুষদেরকেও মেরে ফেলতেছে।
এছাড়া কিছুদিন আগে পার্বত্য চট্টগ্রামকে “জুম্ম ল্যান্ড” ঘোষণা করে একটি কাল্পনিক রাষ্ট্র গড়ার দু:স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টায় খসড়া প্রকাশ করেছে স্বাধীনতা বিরোধী সন্তু সমর্থকরা।
দেশদ্রোহি এই সন্ত্রাসী গ্রুপটিকে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন মহল ইঁন্দন জোগাচ্ছে। আর এসকল রাষ্ট্র বিরোধীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ঐক্য গড়ে তোলেন পাহাড়ে বিশাল জনগোষ্টির অংশ বাঙ্গালী ও পাহাড়িরা। পাহাড়ে ইতিপূর্বে গঠিত বাঙ্গালীদের অন্যান্য সকল সংগঠন বিলুপ্ত করেন।
৫ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে “পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল জাতি ধর্মের মানুষের স্বার্থ রক্ষায় ব্রতি হয়ে প্রতিষ্ঠা হয় পিসিএনপি (‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ’)।
গত এক বছরে পিসিএনপি এই জনপদের মানুষের স্বার্থানুকুল আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ থেকে সু-শৃঙ্খলতার পরিচয় দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো, বিশাল জনগোষ্ঠির স্বার্থ বিরোধী একতরফাভাবে গঠিত কতিথ পার্বত্য ভ‚মি কমিশনের বিরোধীতা। এছাড়া কোভিট-১৯ প্রেক্ষাপটে সংগঠনটি তিন জেলায় জনগোষ্ঠির পাশে থেকে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
ঝুঝুর ভয় এবং কোন রক্তচক্ষুকে তোয়াক্কা না করে দেশ প্রেমের মহান আদর্শে উজ্জীবিত পিসিএনপি’র প্রতিটি নেতা-কর্মী সততায়-নিষ্ঠায় বলিয়ান। জনগোষ্ঠির ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই সংগঠনের পাইওনিয়ার সৈনিকেরা অন্যায়ের প্রতিবাদে কখনো পিছপা হন না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ দেশ মাতৃকার স্বার্থে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আপোষ করেননা। হ্যাঁ আমরাও রাজনীতি করি, তবে সেক্ষেত্রে স্বাধীনতা- সার্বভৌমের বিরোধীদের সাথে দ্বিমত করি। আমাদের রাজনীতি দেশ-মা-মাটি ও মানুষের অধিকার আদায়ের রাজনীতি।