২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:৫৮/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৪:৫৮ অপরাহ্ণ

ঠাণ্ডা মিয়ার গরম কথা (২২৭) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ সুজন সমীপে

     

  মাননীয়,

  চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ সুজন সমীপে,

শ্রদ্ধেয় সুজন  ভাইজানরে,

গরম গরম কথার শুরুতে আমার লাখ কোটি সালাম জানিবেন।আশা করি, আল্লাহ মালিকের অপার মহিমায় ভালো থাকিয়া করোনা কালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব পালন করিয়া নানান কল্যাণকর কর্মসুচী ও দেশের ভবিষ্যত হরেক রকম চিন্তা করিয়া দিনাতিপাত করিতেছেন। আমিও গ্রাম বাংলার এক মফস্বল শহরে থাকিয়া দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবিয়া ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্ছার মতো খাইয়া না খাইয়া বাঁচিয়া আছি। গেলবারে জাতি সংঘ পদক প্রাপ্ত ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ  সমীপে ঠাণ্ডা মিয়ার গরম কথা লিখিবার সময় এইবার আপনার সমীপে লিখিব বলিয়াছিলাম, এইজন্য লিখিতেছি বলিয়া রাগ করিবেন না বরং শত ব্যস্ততার মধ্যেও গরম কথাটুকু পড়িয়া দেখিবেন ও যাহা প্রয়োজন তাহা করিবেন আর ভুল হইলে নিজ গুনে মাফও করিয়া দিবেন।

 ভাইজানরে,

আপনি হইলেন, দেশের পরীক্ষিত ও ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে খ্যাতিবান ব্যাক্তিত্ব। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি । সাবেক জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি । দক্ষ কর্মী সৃষ্টির কারিগর ও মুজিব রনাঙ্গনের অকুতোবয় সৈনিক।গোটা দেশের মধ্যে আপনার তুলনা আপনিই। হালে, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মনোনিত করিয়া আপনার যোগ্যতা ও কর্ম বিচার করিয়া দেখিবার একটা মহা সুযোগ করিয়া দিয়াছেন। ৪ জন সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকার লোকজন এখন আপনার সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দা। সাংসদ এম এ লতিফ, ডাক্তার আফসারুল আমিন, ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও মুছলেম উদ্দিন আহমদ এর নির্বাচনী এলাকার লোকজনকে সেবা করিবার মহা সুযোগ এখন আপনার হাতে আসিয়াছে। যাক, সেই সব কথা ।

 ভাইজানরে,

আপনি বৃষ্টির মধ্যে চট্টগ্রামের চকবাজারের কাপাসগোলা, বাদুরতলা ও মনসুরাবাদ সহ নিচু এলাকা পরিদর্শন করিয়া বলিয়াছেন সমন্বয়হীনতার জন্য এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হইয়াছে। সেই সাথে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করানোর  নির্দেশ দিয়াছেন। এই সময় আপনি বলিলেন, চসিকের সেবকেরা দিন-রাত পরিশ্রম করিয়া বাসায় বাসায় গিয়া ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করিয়া থাকেন। অনেকেই অসচেতনভাবে রাস্তা, ড্রেন ও খালে ময়লা আবর্জনা ফেলিয়া থাকে। এই কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হয়।আপনার নগরীতে প্রশাসনের চত্রছায়ায় শতাধিক অবৈধ পলিথিন ফ্যাক্টরী রহিয়াছে। বায়েজিদে জনৈক মান্নানের ফ্যাক্টরীটি কখনো কেউই বন্ধ করিতে পারেন নাই। এইসব পলিথিন নালা-নর্দমায় ঢুকিয়া জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করিয়া থাকে। মশা মারার লোকগুলোতো কোন কোন এলাকার লোকেরা কখনো দেখেন নাই বলিয়া শুনিতেছি। এই সু্যোগে কয়েল ফ্যাক্টরী রমরমা ব্যবসা করিতেছে। শুলিয়াছি আপনার চট্টগ্রামেই ৫টি অবৈধ কয়েল ফ্যাক্টরী রহিয়াছে। যা বাকলিয়া, আকবরশাহ ও ডবলমুরিং এলাকায় বলিয়া শুনিতেছি। পরিবেশ রক্ষার্থে পলিথিন ফ্যাক্টরী ও অবৈধ কয়েল ফ্যাক্টরী বন্ধ করিয়া মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করিলে আপনার জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়িয়া যাইবে।

 ভাইজানরে,

পরিবহণ সেক্টরে নৈরাজ্য চলিতেছে। স্বাস্থ্যবিধি মোটেই পালিত হইতেছে না। ভাড়া দ্বিগুন নিতেছে। যাত্রীও ঠাসাঠাসি।। এই কেমন কথা ! চট্টগ্রামের সকল সড়কে একই দশা। রোড পারমিট নাই এমন সড়কগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ। যেমন কোতোয়ালী টু নতুন ব্রীজ পর্যন্ত অবৈধ পারমিটবিহীন টমটম জাতীয় গাড়ীতে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়া কতিপয় লোক ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করিতেছে। ত্যাগী নেতারা এইসব হাইব্রীড ও দলবাজীর লোকগুলোর কথা শুনিয়া বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলিয়া থাকে। এইসব দুষ্টচক্রদের দমন করিবার আপনিই একমাত্র যোগ্য লোক বলিয়া জনগণ মনে করিয়া থাকেন। ফ্রিপোর্ট টু আনন্দ বাজার, কাঠগড় টু সী-বিচ, মিয়া খান নগর টু কালামিয়া বাজার রোডে এইসব অবৈধ গাড়ীতে যাত্রী হয়রানী হইতেছে বেশী। এইদিকে নজর দিবেন।

ভাইজানরে, 

কতিপয় আপনার বিরুদ্ধীবাদী লোকেরা এক সপ্তাহের জন্য হাক্কানী থেকে তেল কিনিবার জন্য আপনার সিন্ধান্ত লইয়া অনেক কিচ্ছা কাহিনী শুনিয়াছি।আপনি ঠিক করেন নাই বলিয়া লোকেরা বলিতেছে।তবে আপনি তাহাদের  জন্য হেদায়ত কামনা করিয়া কথা বলিবার পর পরিস্হিতি আপনার অনুকুলে আসিয়াছে।  তেল চোর শুধু সিটি করপোশনে নয় পদ্মা মেঘনা যমুনা থেকেও হয়।ইহাদের কারণে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হইতেছে ও রাষ্টও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাইতেছে।এই নিয়া সাপ্তাহিক পূর্ব বাংলা  গত ১৫ আগষ্ট সংখ্যায়   “বছরের শত কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসার ভাগ পায় অনেকেই! চট্টগ্রামে ১২ সিন্ডিকেটের চোরাই তেলের কারবার” শীর্ষক  শিরোনামে , গত ২২ জুলাই ২০২০ দেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক আজাদীও  “বছরে ৫শ কোটি টাকার চোরাই তেলের ব্যবসা”  শীর্ষক  শিরোনামে , গত ১৮ মে ২০১৯ সিটিজি সংবাদ অনলাইন পোর্টালে “কর্ণফুলীতে তেল চোরাকারাবারীদের পোয়া বারো, রাতারাতি বনছেন কোটিপতি !” শীর্ষক  শিরোনামে, গতবছর ২৭ আগস্ট দেশের সেরা অনলাইন পোর্টাল ঢাকা টাইমস এ “কর্ণফুলীতে তেল চুরির অবাধ রাজত্ব যার” শীর্ষক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় । তেল চোরের কাহিনীটা এক সাথে মিটমাট করিয়া আপনার কর্ম দক্ষতা প্রমাণ করিয়া আওয়ামী লীগের সুনাম ও রাজস্ব লোপাট বন্ধ করিয়া দিলে নগরবাসীর প্রিয় ভাজন হইবেন।

বুঝিয়া, শুনিয়া ও ভাবিয়া কাজ করিবেন।মনে রাখিবেন এই সামান্য কয়দিনের প্রশাসকের দায়িত্ব পালনের উপর আপনার ভবিষ্যত নির্ভর হইতেছে বলিয়া রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলিতেছে। আজ আর না ।আপনার মঙ্গল ও সুস্বাসহ্য কামনায়…

ইতি আপনারই গ্রাম বাংলার অখ্যাত ঠান্ডা মিয়া

                                                                                                                                                            গ্রন্হনা: ম আ হ

আগামী সংখ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমীপে ঠান্ডা মিয়ার গরম কথা ( ২২৮) সম্প্রচার করা হইবে।

 

 

 

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply