১৬ এপ্রিল ২০২৪ / ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১১:৩৯/ মঙ্গলবার
এপ্রিল ১৬, ২০২৪ ১১:৩৯ অপরাহ্ণ

পুলিশ বাহিনী সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ,চোর, ডাকাত,মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি,অসাধু ও চাঁদাবাজদেরকে কঠিনভাবে দমন করেন

     

কাজী অমিত হাসান
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্হিতিশীল রাখায় পুলিশের অবদান অনস্বীকার্য। মানুষের জান-মাল,সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে।সচেতন মহলরা অবশ্যই স্বীকার করতে বাধ্য যে প্রায় এক-দেড় শতক পূর্বেও এদেশে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত ছিলেন,প্রতিনিয়ত চাদা দিতে হতো শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরকে।বিশেষ করে,আমাদের পদ্মা কবলিত নিকটবর্তী অঞ্চলে (শরীয়তপুর, মাদারীপুর)শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ঘাটি ছিল।এই সন্ত্রাসীরা মানুষের জীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছিল।(আমি যখন ছোট ছিলাম,তখন ওই সন্ত্রাসীরা আমাদের গ্রামে এসে চাদা তুলতো,কেউ চাদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার জীবনে বিপর্যয় নেমে আসত,এভাবে অনেক দেশপ্রেমিক মহৎ ব্যাক্তিকে জীবন দিতেও হয়েছে)ওই সকল শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে সন্ধ্যার পর কোন মানুষ ঘর থেকে বের হতো না এবং তাদের থেকে জনসাধারণকে মুক্তি দিয়েছে একমাত্র বাংলাদেশ পুলিশ।অবশ্য,এই মহান আত্ন ত্যাগের জন্য অনেক পুলিশ সদস্যকে জীবন দিতে হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা সন্ত্রাস,চুরি ডাকাতি নিয়ন্ত্রণ,গ্রেপ্তার ও আইনি প্রক্রিয়ায় সফল হয়েছেন।দেশের যেকোন দুর্যোগ-কালীন সময়ে মানুষের কল্যাণে যে প্রতিষ্ঠানটি সর্বদা নিঃস্বার্থভাবে নিয়োজিত থাকে,সেটি হলো বাংলাদেশ পুলিশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় পিছনে সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ায়- জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত নির্ভীক ও সফলতার সাথে এই জঙ্গি গোষ্ঠীকে কঠোরভাবে দমন করেন।অন্যথায়, আমাদের সোনার বাংলাদেশ একটি কলঙ্কময় ভঙ্গুর জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হত।
বর্তমানে করোনা মহামারিতে পুলিশের অবদান অনস্বীকার্য।যেখানে দেশের মানুষ আতঙ্কিত এবং চারদিকে মৃত্যুর মিছিল সেখানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সাহসিকতার সাথে মানুষের সেবায় সারাক্ষণ নিয়োজিত আছে।কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে পরিবারের বা আত্নীয়-স্বজন কেউ পাশে থাকে না এবং দাফনের সময়ও কাউকে পাওয়া যায় না।সেখানে করোনায় আক্রান্ত মৃত্যুবরণকারীদের দাফন কার্য সমাপ্ত করেন বাংলাদেশ পুলিশ।এই মহান আত্নত্যাগের জন্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেক পুলিশ সদস্য মৃত্যুবরণ করেন।এই মহৎ ত্যাগ স্বীকার করার জন্য জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান পুলিশ বাহিনীকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সালাম এবং সম্মান প্রদর্শন করি।
অতিসম্প্রতি কক্সবাজারে একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা পুলিশের হাতে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে নিহত হন।কিন্তু ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, সাংবাদিক ভাইদের কল্যাণে বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় যেভাবে প্রকাশিত হচ্ছে তাতে বিশেষ করে সমগ্র পুলিশ বাহিনীকে দায়ী করা হচ্ছে।পুলিশকে জনগনের অনাস্থার জায়গায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।আসলে কক্সবাজারের ঘটনাটি পুলিশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও কলঙ্কময়।যারা কক্সবাজারের ঘটনাকে নিয়ে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে হেয় করতে চান,বাংলাদেশ পুলিশের কর্ম পরিধিকে ছোট করতে চান,দেশের সাধারণ মানুষকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন এবং বাংলাদেশের স্বনামধন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন,আসলে তাদের মূখ্য উদেশ্যটা কি?
বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান বেনজির আহমেদ বিপিএম (বার),পুলিশ প্রধান হিসেবে যোগদান দেওয়ার পর পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দূর্নীতি বন্ধ করা এবং বাংলাদেশকে আরো জনমুখী করার পদক্ষেপ নিয়েছেন।সেই সাথে বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করার একটি বড় চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। বাংলাদেশের সকল পুলিশ কর্মকর্তা মাদকমুক্ত চ্যালেঞ্জের কার্যক্রম শুরু করেন।এমতাবস্থায়,কক্সবাজারের দূর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি বাংলাদেশের পুলিশের জন্য খুব বড় একটি ধাক্কা।তবে এই ঘটনাকে নিয়ে যারা দেশের অভ্যন্তরীণ সম্প্রতি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।প্রকৃতপক্ষে, তারা কি পক্ষান্তরে মাদক ব্যবসায়ী,চোরাকারবারি,অসাধু ব্যাক্তি,চাদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের উস্কানী দিচ্ছে?
পরিশেষে বলি,পুলিশ হল আস্হা ও জনতার প্রতীক। পুলিশ ও সাধারণ মানুষের সাথে এক নিবিড় ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। জনসাধারণ সর্বক্ষেত্রেই পুলিশের সহায়তা পান।বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ,চোর, ডাকাত,মাদক ব্যবসায়ী,চোরাকারবারি,অসাধু ও চাদাবাজদেরকে কঠিনভাবে দমন করেন এবং নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেন।করোনা-কালীন সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যে আত্নত্যাগ স্বীকার করেছে তা বাংলাদেশের মানুষ কোন দিন ভুলবে না।আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।বিশেষ করে কক্সবাজারের ঘটনাটি খুবেই মর্মান্তিক একটি ঘটনা।অবশ্যই আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তণয়া অত্যন্ত বিচক্ষণ তিনি অপরাধীর সঠিক বিচার কার্যক্রম করবেন।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে(মুজিববর্ষ),’মুজিববর্ষের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতা’এই শপথে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী মাদকমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছে।এতএব যারা দেশের সার্বভৌম অভ্যন্তরীণ সম্প্রতি নষ্ট করার লক্ষ্য বাংলাদেশ পুলিশ ও জনতার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়,তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য কখনো ইতিবাচক হতে পারে?
লেখকঃ কাজী অমিত হাসান শিক্ষার্থীঃ ঢাকা কলেজ

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply