গানকে ভালোবাসুন, নোবেলকে নয়
আজহার মাহমুদ
বর্তমান সময়ে একটি নাম বারবার সংবাদপত্রে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসছে সেটি হচ্ছে নোবেল। তবে এই নামটির সাথে নেতিবাচক মন্তব্যই বেশি আসছে। মানুষ তাকে এখন ভালোবাসার বদলে ঘৃণা করছে। তার পেইজে ঘুরে আসার পর বুঝলাম তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি শুধু সে এখন নোংরা মানুষ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তার যে কোনো পোস্ট এবং ছবির নিচে হাজার হাজার মানুষ নোংরা ভাষায়, অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিয়ে কমেন্ট করছে। এই কমেন্ট করার কারণ? কারণ আমরা ইতোমধ্যেই জানি।
তবুও পাঠকদের সুবিধার্তে তার পোস্টটি তুলে ধরলাম, দু-বছর আগে জন্ম নিয়েছি আপনাদের ভালবাসা নিয়ে। দু-বছরে ফ্লপ/হিট গানের সংখ্যা দুই। তোমার মনের ভেতর – অনুপম রায় ( National Award winne )। আগুনপাখি – শান্তুনু মৈত্র ( National Award winne )। তোমাদের লেজেন্ড গত দশ বছর ধরে কয়টা ফ্লপ অথবা হিট রিলিজ করেছে কমেন্টস্ সেকশানে জানাও। থুক্কু বাংলাদেশে তো গত ১০ বছরে ভালো করে কেউ মিউজিকই করেনি। দাঁড়াও তোমার লেজেন্ডদের না হয় আমিই শিখাবো, কিভাবে ২০২০ সালে মিউজিক করতে হয়। ইতি/নোবেল।
এমন পোস্ট দিয়ে নোবেল শুধু দেশের গায়কদের নয় দেশের মানুষদেরও আঘাত করেছে। তার প্রমাণ স্বরূপ মানুষের নেতিবাচক মন্তব্য। তবে বিষয়টা এখানেই থেমে গেলে গতো। কিন্তু তার এই পোস্ট যখন দেশের একটি দৈনিক নিউজ করে তখন সেই নিউজ শেয়ার করে নোবেল লিখে ইদানীং আমি বিছনায় শুয়ে বসে কিছু লিখলেই নিউজ হয়ে যায়। আরও কিছু সংবাদপত্রে বলেছে সে নাকি তামাশা করেছে। এরপর এই মানুষটিকে নিয়ে কি বলবো আমি ভেবে পাচ্ছি না। একজন শিল্পীর ব্যবহার, আচরণ, লেখনী এমন হয় কি করে!
শুধু কি তাই, তাকে ভালো মানুষ হওয়ার উপদেশ দিলে সে বলে, ভালো মানুষ হওয়ার সময় অনেক আছে। আগে ভালো গায়ক হয়ে নিই। এর অর্থ দাঁড়ায় তার কাছে ভালো মানুষ হওয়ার চাইতে ভালো গায়ক হওয়া জরুরী। অথচ ভালো মানুষ না হলে যে ভালো শিল্পীর কোনো সম্মান নেই, কোনো দাম নেই এটাও নোবেল জানে না। আসলে আমাদেরও কিছু ভুল আছে। আমরা কিভাবে এই মানুষটাকে ফলো করছি? আমি তার গান শুনতে না করছি না। শিল্পীকে নয় শিল্পকে ভালোবাসুন। শিল্পের শিল্পীকে তখনই ভালোবাসবেন যখন তার ভেতর ভালো মানুষের বৈশিষ্ট্য থাকবে।যে অন্যকে সম্মান করতে জানে না, তাকে সম্মান দেওয়ার কোনো যুক্তিই আমি খুঁজে পাই না।
এ-বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক ও কলাম লেখক অজয় দাশগুপ্ত লেখেন, কানের নীচে থাপ্পড়ের রীতি উঠে গেছে? তাই এতো বাচালতা। কাল সকালে গান গাইতে আসা পোলা। কলকাতার টিভির কল্যাণে বলা ভালো বাংলাদেশে তাদের বানিজ্যের কারণে লাই পেয়ে জাতির কাঁধে চড়ে বসতে চায়। সারেগামাপা গাইতে জানা আর সা রে গা মা পা’ য় গান গাওয়া এক বিষয় না রে পাগল। বাড়ী যা। হারমোনিয়াম নিয়া ভালো কইরা, আয় তবে সহচরী নয়তো প্রজাপতি প্রজাপতি কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা গাইতে থাক…। গানের গ বোঝার আগে কিংবদন্তীদের সমালোচনা করার কারণে এর শাস্তি এখন জরুরী।
এরকম অনেক বড় বড় সাংবাদিকই এই বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। র্যাব কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষমা চাওয়ার পরও সে যেন এটাকে তামাশা ভাবেই নিলো। র্যাবের কাছে ক্ষমা চাওয়ার বিষযটি শেয়ার করে লিখেছে তামাশা। তার কাছে লেজেন্ডদের নিয়ে তামাশা করার পুরো ঘটনাটাই তামাশা। শুধু তাই নয় এর আগে জাতীয় সংগীত নিয়ে মন্তব্য করে সে তার ফলোযার বাড়িয়েছে। এবার নাকি দুই মিলিয়ন হবে তামাশা করে। এর মানেই বুঝা যায় আমাদের দেশের মানুষদের সে কতটা গরু-ছাগল ভাবে। এতোকিছুর পর আমি নতুন করে কিছু বলতে চাই না। শুধু এতোটুকুই বলবো মানুষকে ভালোবাসতে শিখুন। গায়ক, লেখক, নায়ক পরে আসবে, এদের আড়ালে মানুষের ছাপ আছে কি না যাচাই করুন। যার ভেতর মনুষ্যত্ব নেই, শ্রদ্ধা-ভক্তি নেই, সম্মানবোধ নেই, আদব নেই তাকে ভালোবাসার, অনুকরণ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। প্রয়োজনে তার কাজগুলোকেও বয়কট করা জরুরী। যে দেশকে আঘাত দিবে তাকেও পাল্টা আঘাত দিতে হবে। এটা দেশের মানুষেরই কর্তব্য। তাই এসব মানুষকে বয়কট করে তার প্রপ্য জবাব দিতে হবে। তবেই ভুল শুধরে মানুষ হওয়ার চেষ্টা করবে। নয়তো একের পর এক ভুল করে এরা দেশের মানুষকে নিয়ে তামাশা করবে।