১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ভোর ৫:৩২/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবাদের নামে চলছে সন্ত্রাস : ট্রাম্প

     

বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক

মার্কিন শেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের পাশবিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সৃষ্ট বিক্ষোভে অংশ নেয়াদের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে লড়াই করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ জুন) এ কঠোর হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের আচরণ এখন আর শান্তিপূর্ণ নেই। এই অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ নিরপরাধ মানুষের রক্ত ঝরাচ্ছে এবং এটি মানবতার জন্য অবমাননাকর ও মারাত্মক অপরাধ।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যারা এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদেরকে কঠোর শাস্তি পেতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে কারাভোগ করতে হবে।
গত ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের শহর মিনিয়াপলিসে পুলিশের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড। প্রকাশ্যে শহরের রাস্তায় ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধে ফ্লয়েডকে হত্যা করে ৪৪ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার দেরেক।
যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় দেশটিতে ২০ হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সহিংসতা মোকাবেলায় কমপক্ষে ২৮টি রাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানী ওয়াশিংটনে সেখানকার জাতীয় গার্ড বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের গভর্নরদের সমালোচনা করেছেন বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব গ্রহণ না করায়। বিক্ষোভ চলাকালে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাম্প এই সমালোচনা করেন। এরপর থেকে পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভে আরও উত্তেজনা বেড়েছে। সোমবার শেষ রাতে নিউ ইয়র্কে বিক্ষোভকারীরা দোকানের জানালা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। লস অ্যাঞ্জেলসে একটি স্ট্রিপ মলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্ট লুইসে চার পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন এবং লাস ভেগাসে গুলিবিদ্ধ এক কর্মকর্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
টানা দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ানো বিক্ষোভ দমনে ডোনাল্ড ট্রাম্প সেনা মোতায়েনের হুমকি দিয়েছেন এবং গভর্নরসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছেন বিক্ষোভ দমনে তাদের ভূমিকার জন্য।
নিউ ইয়র্কের ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর অ্যান্ড্রিউ কৌমোর সমালোচনা করে ট্রাম্প টুইটে লিখেছেন, লুটপাট-কারী, ডাকাত, চরমপন্থী বাম এবং অন্যান্য নিম্নশ্রেণির কাছে হেরে গেছে নিউ ইয়র্ক। গভর্নর সেনাবাহিনী মোতায়েনে আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। নিউ ইয়র্ককে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভে বামপন্থীদের নেপথ্যে থাকার দাবির পক্ষে ট্রাম্প কোনও প্রমাণ হাজির করেননি।
কোমো বলেছেন, সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনায় তিনিও ক্ষুব্ধ এবং শহরের মেয়র ও পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেনি। মেয়র বিল ডে ব্ল্যাসিও সংকটের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেননি বলে তিনি মনে করেন বলেও জানিয়েছেন।
সেনা মোতায়েনে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে কৌমো বলেন, নিউ ইয়র্কের জমায়েত মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ না থাকা বাহিনী যদি হস্তক্ষেপ করে তাহলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে।
ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান জেনারেল জোসেফ লেঙ্গিয়েল বলেছেন, সোমবার রাতে বিভিন্ন শহরে সহিংসতা কমেছে। যদিও বিক্ষোভ আগের মতোই বা বেড়েছে। রাতে কোনও সেনা সদস্য আহত হয়নি।
সেনা কর্মকর্তা জানান, ২৯টি অঙ্গরাজ্যে ১৮ হাজার সেনা সদস্য স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীকে সহায়তা করছে এবং এই সংখ্যা বাড়ছে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply