২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:০৮/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৮:০৮ অপরাহ্ণ

ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা হাশেমীর ইন্তেকাল: আজ রাতে দাফন, দেশজুড়ে শোকের ছায়া

     

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম, শাইখুল হাদিস, লেখক, গবেষক, হাজার হাজার আলেমের উস্তাদ, রাহনুমায়ে শরীয়ত, পীরে তরিকত, ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা কাযী মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম হাশেমী (৯৫) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি …ওয়া ইলাইহি রাজেউন)।আজ মঙ্গলবার (২ জুন) ভোর পাঁচটার দিকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেন। তিনি জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়া আলিয়া ও আহসানুল উলুম কামিল মাদ্রাসাসহ দেশখ্যাত অসংখ্য মাদ্রাসায় পবিত্র হাদিস শরীফের দরস প্রদান করেন। সুন্নী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠা করেন ধর্মীয় সংস্থা আনজুমানে মুহিব্বানে রাসূল গাউছিয়া জিলানী কমিটি। এ সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে সারাদেশে অসংখ্য মাদ্রাসা পরিচালিত হয়।
এদিকে ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা হাশেমীর ইন্তেকালে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর ইন্তেকালে পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক, শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিয়েছেন- আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস শেরে মিল্লাত মুফতি ওবাইদুল নঈমী, মহাসচিব পীরে তরীকত সৈয়দ মুহাম্মদ মছিহুদ্দৌলা, শাইখুল হাদিস আল্লামা সোলাইমান আনসারী, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নীয়ার অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ অছিয়র রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান, মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন, আহলে সুন্নাতের মুখপাত্র এডভোকেট মোছাহেব উদ্দীন বখতিয়ার, পীরে তরীকত সৈয়দ  সাইফুদ্দীন আলহাসানী মাইজভাণ্ডারী, পীরে তরীকত বদরুদ্দোজা বারী, পীরে তরীকত আবদুশ শাকুর রায়হান নকশবন্দী, অধ্যক্ষ মাওলানা স.উ.ম আবদুস সামাদ, আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহাবুদ্দীন চৌধুরী, ছোবহানিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি হারুনুর রশিদ, আল-আমিন বারিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইছমাঈল নোমানী, ঢাকা কাদেরিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল আলিম রেজভী, উপাধ্যক্ষ মুফতি আবুল কাশেম ফজলুল হক, চাঁদপুর আলিয়া অধ্যক্ষ আল্লামা মাহবুবুর রহমান আলকাদেরী, মুফতি আবদুল ওয়াজেদ, আল্লামা জুলফিকার আলী চৌধুরী, মুহাদ্দিস  শরাফুজ্জামান আলকাদেরী, অধ্যক্ষ আল্লাম তৈয়্যব আলী, পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, অধ্যক্ষ মুফতি মহিউদ্দীন হাশেমী, অধ্যক্ষ বদিউল আলম রেজভী, শহীদ হালিম-লিয়াকত স্মৃতি বৃত্তি পরিচালনা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আখতার হোসেন চৌধুরী, আহলে সুন্নাত চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মাওলানা শাহ নূর মোহাম্মদ আলকাদেরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ জামেউল আখতার আশরাফী, চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ আল্লামা শাহ খলিলুর রহমান নিজামী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মুফতি জসিম উদ্দীন আলকাদেরী, ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর নেতৃবৃন্দ,বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি জিএম শাহাদত হোছাইন মানিক, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইমরান হুসাইন তুষার, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলামসহ বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, আহলে সুন্নাত, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ, ইমাম হাশেমী ইসলামী মিশন, যুবসেনা, ছাত্রসেনার বিভিন্ন শাখাসহ বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীন, তরিকতের শায়খ, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির সুন্নি সংগঠনের জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
জানাজার আগে ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা হাশেমীর কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তারা বলেন, তিনি দেশজুড়ে ইসলামের শাশ্বত মূলধারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের প্রচার প্রসারে, সুন্নীয়তের সাংগঠনিক অবস্থান সুদৃঢ় করণে এবং দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর অনুপম অতুলনীয় আদর্শ চরিত্র, ধর্মীয় জ্ঞানের দক্ষতা ও প্রজ্ঞাগুণে সুন্নীয়তের ইমাম হিসেবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ছিলেন। ইমাম শেরে বাংলা (রহ.) এরপর থেকে তিনি ইমামতের এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সুন্নীয়তকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। দেশব্যাপি ছাত্রসমাজকে সুন্নীয়তের উদার মতাদর্শে উজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা প্রতিষ্ঠায় তিনি পৃষ্ঠপোষকতা দেন। একইভাবে সুন্নী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করেন। ইলমে হাদিসের খেদমতের জন্যও তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি হাদিসের দরস দিয়েছেন দেশের সেরা প্রতিষ্ঠানসমূহে। বর্তমানে প্রায় সুন্নী প্রতিষ্ঠানের প্রায় শিক্ষক বিভিন্নভাবে তাঁর ছাত্র। এছাড়াও লিখেছেন অসংখ্য ধর্মীয় কিতাব। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছিলেন।

বক্তারা বলেন, সুন্নি জনতা একজন যোগ্য অভিভাবককে হারিয়েছে। তাঁর ইন্তেকালে সুন্নি অঙ্গনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা অপূরণীয়। সুন্নি জনতা তাঁর অবদান চিরদিন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবে।এ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক শোকবার্তায়
বলেন, শান্ত,শিষ্ট ও ইলেমের সমুদ্র আজ চলে গেলেন। সুন্নি জনতা তাদের অভিভাবক হারালো। অভিভাবকের দাবী নিয়েআর কেউ সুন্নি  মুসলমানদের সামনে আসবে না। ইমামে আহলে সুন্নাত বিদায় নিলেন এই উপাধি শুধু তারই ছিলো আর কেউ এই উপাধির অধিকারী হতে পারেন না। আল্লামা গাজী শেরে বাংলা (রহঃ) এর পরে এই উপাধির মালিক ছিলেন আল্লামা কাজী নুরুল ইসলাম হাশেমী সাহেব। হুজুরের পর আর কেউ এই উপাধি পাওয়ার সুযোগ নাই। ইমামে আহলে সুন্নাতের বিদায় সুন্নি মুসলমানদের জন্য অনেক বড় আঘাত।
উল্লেখ্য যে, আজ মঙ্গলবার রাত ৯ টায় কুলগাওস্থ দরবারে হাশেমিয়া আলিয়াতে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত
হবে এবং জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হবে।

 

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply