২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / সকাল ৯:৫০/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

পাবনায় বাঁধ ভেঙ্গে তিন শতাধিক বিঘা জমির বোরো ধান পানির নিচে

     

পাবনার বেড়া উপজেলার রুপপুর ইউনিয়নে ঘোপশিলোন্দায় যমুনা নদীর তীরবর্তী একটি জোলার বাঁধ ভেঙ্গে আটটি গ্রামের প্রায় তিনশত বিঘার জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া পাকা আধাপাকা ধান নিয়ে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ধান কাটার জন্য কৃষকেরা শ্রমিক না পেয়ে অনেকে ধান কাটাতে পারছে না। ফলে পানির নিচে পরে ধানগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন যমুনা নদীতে অস্বাভিক পানি বৃদ্বির ফলে রুপপুর ইউনিয়নের ঘোপশিলেন্দা গ্রামের ১২০মিটার অংশে ভাঙন দেখা দিলে গ্রামবাসী পাউবো কর্তৃপক্ষকে জানান। পাউবো কর্তৃপক্ষ কোন কর্নপাত না করলে এলাকাবাসি মিলে যমুনা নদীর তীরবর্তী ঘোপশিলোন্দায় একটি জোলার মুখের বাঁধ দিয়ে পানি আকটিয়ে রাখে। যাতে জোলা দিয়ে পানি ঢুকে মাঠের ধান, তিল, পাটসহ অন্যান্য ফসল পানিতে তলিয়ে না যায়। যমুনা নদীতে অস্বাভিক পানি বৃদ্বির ফলে শনিবার (৩০মে) বিকেলে হঠাৎ করে জোলার মুখের বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। মুহুতের মধ্যে পানি ঢুকে জমিগুলোর ধান তিল, পাট পানিতে তলিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, ঘোপশিলোন্দায় একটি জোলার মুখের বাঁধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি ঢুকে প্রতাপপুর, রানীগ্রাম, রঘুনাথপুর, কৃষ্ণপুর, ঘোপসেলোন্দাসহ আটটি গ্রামের প্রায় তিনশত বিঘার জমির ধান, পাট তিল পানিতে তলিয়ে গেছে।
প্রতাপপুর গ্রামের কৃষক আতোয়ার আলী শেখ (৬৫) জানান, তিনি এ মাঠে ছয় বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিল। শনিবার জোলার মুখের বাঁধ ভেঙ্গে তার সমস্ত জমির ধান তলিয়ে গেছে। শ্রমিকের অভাবে ধানগুলো কেটে বাড়িতে আনতে পারলাম না। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল।
রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান  বলেন, এ মাঠে আমার প্রজেক্টে নিজের ৫ বিঘাসহ ১৮ বিঘা জমির বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেল চোখের পলকে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে ধানগুলো কাটতে পারলাম না। এবছর ছেলে সন্তান নিয়ে কষ্টে দিনাপাত করতে হবে। কৃষক রফিকুল ইসলাম, আজিজুল হক, জয়াদ আলী, মানিক মিয়াসহ অনেকেই আহাজারি করে বলেন, ভাই এত কষ্ঠে ফলানো ধানগুলো চোখের পলকে মহুর্ত্বের মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেল। ধান কাটার জন্য একটা শ্রমিক ৭শ থেকে ৮শ টাকা দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে না। তাছারা ডুবে যাওয়া ধানগুলো কেটে শ্রমিকের টাকাই যোগার হবে না। এ ছাড়া কাচা তিল, পাট পানিতে ডুবে নষ্ঠ হয়ে গেছে।
ঘোপশিলেন্দা গ্রামের (চার নম্বর ওয়ার্ড) স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীতে অস্বাভিক পানি বৃদ্বির ফলে শনিবার (৩০মে) হঠাৎ করে জোলার মুখের বাঁধটি ভেঙ্গে আট-দশটি গ্রামের কৃষকের প্রায় তিনশত বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে নষ্ঠ হয়েছে। তিনি বলেন, একদিকে নদী ভাঙ্গন অন্য দিকে পানিতে তলিয়ে ফসল নষ্ট হওয়ায় অনেকে নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
বেড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মসকর আলী জানান, গতকাল রোববার (৩১মে) সকালে ডুবে যাওয়া এলাকার পরিদর্শন করেছি। তা ছাড়া ক্ষতির পরিমান ও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা করা হচ্ছে। পরবর্তিতে সরকারি কোন সহযোগিতা এলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকে দেওয়া হবে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply