২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৪:০২/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৪:০২ অপরাহ্ণ

শাসকের যাতাকলে পৃষ্ঠ শ্রমিক,অনিশ্চিত শ্রম অধিকার

     

 আরমান হোসেন

সাধারনত যিনি শ্রম দেন তিনিই শ্রমিক, তবে আইনের ভাষায়- যিনি মজুরী বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে শ্রম দেন তিনিই শ্রমিক।

আজ মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে স্মরণীয় দিনটি সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হয়ে আসছে। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের উপযুক্ত মজুরি আর দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন ওই শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা।পরবর্তি ১৮৯০ সাল থেকে পহেলা মে বিশ্বব্যাপী ‘মে দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসটি যখন ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে, তখন বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী শ্রমিক শ্রেণির অবস্থা ভালো নয়। করোনায় বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। আর এটার বড় ধাক্কা লেগেছে তৈরি পোশাক খাতে।উপযোক্ত বেতন-ভাতা পাচ্ছেনা শ্রমিকরা।দেশের অনেক জায়গায় বেতন-ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যাচ্ছে।অনেক কারখানায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করছেনা মালিকপক্ষ। করোনায় মহামারির মধ্যেও খোলে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কারখানা।একজন শ্রমিককে জীবন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে যা অমানবিক ও নিষ্ঠুর।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ি গার্মেন্টস শ্রমিকদের ৬০% বেতন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।কিন্তু এতে একজন শ্রমিকের পরিবার চালানোর মতো যথেস্ট নয়।সরকার ২০১৯ সালের নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ি পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি করে ৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে বেসিক ৪ হাজার ১০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া ২ হাজার ৫০ টাকা এবং অন্যান্য ১ হাজার ৮৫০।একজন শ্রমিকের বাড়িভাড়া, গ্যাস,বিদ্যুৎ, চিকিৎসা সেবাসহ পরিবার চালাতে সেটি অপ্রতুল্য। কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তাই নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা, বেতনের নিশ্চয়তা। আমাদের দেশে শ্রমিকের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত নয়, নানা ক্ষেত্রে নানাভাবে উপেক্ষিত। অনেক কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীন ও ন্যায্য মজুরি বঞ্চিত। দেশের সবচেয়ে শ্রমঘন শিল্প গার্মেন্টস খাতে শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারিত হলেও সর্বক্ষেত্রে তা অনুসৃত হচ্ছে না।দেশের অর্থনীতির আরেকটি বড় নিয়ামক বিদেশে কর্মরত অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স কিন্তু এদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনিয় সহযোগিতার অভাব বিদ্যমান এছাড়া অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রের অবস্থা আরো নাজুক। সুস্থ শিল্প বিকাশের স্বার্থে শ্রমিকের মর্যাদা ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রম আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা উচিত।প্রবাসে এবং স্বদেশে ওই শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার ব্যাপারে রাষ্ট্রকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply