২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ২:৪৬/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ২:৪৬ পূর্বাহ্ণ

তারাবি অনিশ্চয়তায় হাফেজদের করুন কান্না!

     

আরমান হোসেন

রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস,ইবাদত বন্দেগীর পবিত্র মাস।রমজানে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা খতমে তারাবি আদায় করে তাকে।খতমে তারাবির হাদিয়ার মাধ্যমে চলে হাফেজ-মাওলানাদের সংসার।মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ফলে খতমে তারাবি যৌথভাবে আদায়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় হাফেজরা আর্থিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে। বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ আলেম ও হাফেজে কোরআন রয়েছে।গ্রামে-গঞ্জে পরিবারের একজন সদস্যকে হাফেজ অথবা আলেম শিক্ষা দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।শিশুকাল থেকে ৫-১০ বছর লেগে যায় একজন কোরআনে হাফেজ হতে।

প্রতি বছর মাহে রমজানে আসলে তাদের মাঝে আনন্দের ঢেউ উঠে।রমজানের এককালিন হাদিয়ায় তাদের বড় প্রাপ্তি।রমজানের শুরুতে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে খতমে তারাবিতে যোগ দেন তারা।১মাসে,১৫দিনে,১সপ্তাহে খতমে তারাবি শেষ করে ১০হাজার,২০ হাজার,৫০ হাজার টাকা হাদিয়া পান।রমজানের হাদিয়া দিয়ে চলে তাদের সংসার, ঈদ উৎসবসহ অন্যান্য অভাব পূরণ।

সম্প্রতি দেশে করোনা ভাইরাস (কোভিড -১৯) সংক্রমণের ফলে সরকার দেশের বিভিন্ন স্হান লকডাইনের আওতায় এনেছে।সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিভিন্ন উদ্যােগ গ্রহণ করা হচ্ছে।ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক দৈনিক নামাজে ৫জন ও জুমার নামাজে ১০জন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।সরকার কর্তৃক যৌথভাবে তারাবি আদায়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে।তারাবির নামাজ ঘরে আদায়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।সরকারের নির্দেশনা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতসহ বিভিন্ন ইসলামী দল এটিকে সমর্থন দিয়েছে।তাই, খতমে তারাবি নিয়ে দেখা দিয়েছে শংকা ।বন্ধ হওয়ার সম্ভবনা হাফেজ ও মাওলানাদের আয়ের পথ। দেশের আলেম সমাজের বিরাট একটি অংশ মধ্যবিত্ত ও গরিব ফলে এরা সংসার চালাতে হিমশিম খাবে।

হাফেজ মাওলানা আহম্মদ নুর জানান,রমজানে খতমে তারাবির মাধ্যমে আমি যে হাদিয়া পায় তা দিয়ে আমার সংসার চলে।ঈদ উৎসবসহ নানা অভাব পূরণ করি।আমার ঘরে দুটি ছোট সন্তান।রমজানে তারাবি বন্ধ হলে আমার আয় রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।আমার ছোট বাচ্চাদের ঈদের কাপড় কিনে দিতে পারব কিনা জানিনা।সরকার যদি আমাদের প্রণোদানের ব্যবস্হা করে তাহলে আমাদের বেশ উপকার হবে। জানা যায়,শহরে ও গ্রামে গঞ্জের প্রায় মসজিদে খতমে তারাবির প্রচলন রয়েছে।দেশে মোট মসজিদের সংখ্যা দুই লাখ ৫০ হাজার ৩৯৯টির মতো।

সেই হিসেবে প্রায় দুই লক্ষ হাফেজে কোরআন খতমে তারাবির হাদিয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাদের ভোবা কান্না শোনার কেউ নেই।অনিশ্চিত তাদের ভবিষ্যৎ,সরকারসহ কোন মহলের চিন্তা নেই তাদের নিয়ে। ছোট হাফেজ আবু তাহের কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,অনেক ইচ্ছে ছিল তারাবির হাদিয়া দিয়ে আমার ঘরের ছোট ভাইদের ঈদের কাপড় কিনে দিব। কিন্তু গতবার যেখানে তারাবি পড়িয়েছিলাম তারা সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমাকে রাখতে পারবেনা বলেছে।ছোট ভাইদের মুখে কিভাবে হাসি ফুটাব জানিনা।তারাবি পড়াতে পারবনা জেনে খুব খারাপ লাগল। মহামারি করোনা ভাইরাস দেশের অর্থনৈতিক দিয়ে ক্ষতি করছে তাই নয়।এই মহামারিতে কষ্ট পাচ্ছে দেশের লক্ষ লক্ষ হাফেজ,মাওলানা,চাকরিজীবি,ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply