১৯ এপ্রিল ২০২৪ / ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৮:৩৪/ শুক্রবার
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৮:৩৪ অপরাহ্ণ

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে শিগগির যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমছে!

     

বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের চিহ্নিত স্থানগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসছে উল্লেখ করে শিগগিরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার (৫ এপ্রিল) করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সুড়ঙ্গের শেষে উঁকি দেওয়া আলোর ঝলক দেখতে পাচ্ছেন।
হোয়াইট হাউসে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। তবে সেখানে এরইমধ্যে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেলেও আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ৩৭ হাজার ৬৩৭। এর মধ্যে ৯ হাজার ৬৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবারের তুলনায় রবিবার নতুন সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা তুলনামূলক কমে এসেছে। আগের দিন শনিবার নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৪ হাজার ১২৩। এদিন মারা যান এক হাজার ৩৪৪ জন। আর রবিবার মারা গেছেন এক হাজার ১৪৭ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ, যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট প্রাণহানির ৪০ ভাগেরও বেশি। তবে রবিবার (৫ এপ্রিল) নিউ ইয়র্কে নতুন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমতে দেখা গেছে। এ কমাকে ‘শুভ লক্ষণ’ মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রবিবার করোনাসংক্রান্ত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করেছেন, সামনের দিনগুলোতে আরও অনেক মানুষের মৃত্যু হবে। যুক্তরাষ্ট্রের যেসব অঙ্গরাজ্যগুলো করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে, তাদের জন্য মাস্ক ও ভেন্টিলেটরসহ ও আরও বেশি চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর কথা জানান ট্রাম্প।
এর আগে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক সংবাদ সম্মেলনে সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সামনে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, ‘এই সপ্তাহ ও আগামী সপ্তাহের মধ্যবর্তী সময়টি সবচেয়ে কঠিন সময় হতে পারে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ সময়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ব্যবস্থা না নিলে যত মানুষের মৃত্যু হতে পারতো তার চেয়ে অনেক কম মানুষ মারা যাবে ঠিকই, তবে প্রাণহানি হবেই।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমাদের সামনে এমন সময় আসছে যা খুব ভয়ঙ্কর হতে পারে। আমরা কখনও এতো বেশি সংখ্যক মৃত্যু দেখিনি। সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কিংবা এ ধরনের যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও না।’
এদিকে করোনাভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের ফলে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মাস্কের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। ফলে বাজারে এর ঘাটতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এজন্য মাস্ক না পেলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘কাপড়ের ঘনত্বের বিচারে স্কার্ফ মাস্কের ভালো বিকল্প।’
বস্তুত ট্রাম্প প্রশাসনের হাতে মাস্ক বা এ সংক্রান্ত সরঞ্জামের পর্যাপ্ত মজুদ নেই। যা ছিল তাও প্রায় শেষ পর্যায়ে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিভিন্ন রাজ্যগুলো প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের জন্য বাজারে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে বাধ্য হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এ মহামারির কেন্দ্রস্থল নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্লাসিও-র ভাষায়, ‘আপনি এটা বলতে পারেন না যে প্রতিটি রাজ্য নিজেদের জন্য, প্রতিটি শহর নিজেদের জন্য। এটা আমেরিকার চিত্র হতে পারে না।’
উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হিমশিম খাচ্ছে বিভিন্ন শহরের কর্তৃপক্ষ। বিদ্যমান সংকট মুহূর্ত কাটিয়ে উঠতে নতুন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের দিকেও নজর দিচ্ছে অনেকে। নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্লাসিও-র আশঙ্কা, করোনা মহামারির সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি আছে। যুক্তরাষ্ট্রে তার রাজ্যেই এ ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বিল ডে ব্লাসিও বলেন, সময়ের বিরুদ্ধ স্রোতে লড়াই করছে নিউ ইয়র্ক। এ সময় করোনা মোকাবিলার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীকে যুক্ত করতে ফেডারেল সরকারের প্রতি নিজের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
বিল ডে ব্লাসিও বলেন, আমরা এমন এক শত্রুর মোকাবিলা করছি যা হাজার হাজার আমেরিকানকে হত্যা করছে। প্রচুর লোকজন মারা যাচ্ছে যাদের মরার দরকার নেই।
তিনি বলেন, আপনি এটা বলতে পারেন না যে প্রতিটি রাজ্য নিজেদের জন্য, প্রতিটি শহর নিজেদের জন্য। এটা আমেরিকা হতে পারে না।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply