২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১২:০২/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ১২:০২ অপরাহ্ণ

নিউ ইয়র্কে দিনাজপুর জেলা সমিতির নির্বাচন ভুন্ডুল!

     

বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক
নির্বাচন কমিশনের অবহেলা স্বজনপ্রীতি ও অদক্ষতার ফলে ভুন্ডুল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কস্থ দিনাজপুর জেলা সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনের দিন উপস্থিত ভোটারদের কেন্দ্রে বসিয়ে রেখে নির্বাচন স্থগিতের ঘোষনা দিয়ে কেন্দ্র ত্যাগ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আসিফ করিম। খবর বার্তা সংস্থা বাংলা প্রেস’র।
নিউ ইয়র্কস্থ দিনাজপুর জেলা সমিতির কার্যকরী কমিটির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন গত ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল।গত ১৪ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারন সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনোনীত হন আসিফ করিম।একই সাথে সহকারি কমিশনার মনোনীত হন সারোয়ার রাফি ও মোহাঃ রাজ্জাকুল ইসলাম।
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ঘোষনা মোতাবেক ১৮ জানুয়ারি নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে দু’টি প্যানেল অংশ নেবার কথা থাকলেও শুধুমাত্র সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ ও নির্বাহী সদস্য পদে দুটি করে মনোনয়নসহ মোট ১১টি পদে মনোনয়ন জমা পড়ে। বিধি মোতাবেক দ্বৈত মনোনয়নের ৩টি পদে নির্বাচন হবার কথা ছিলো। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষনা দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আসিফ করিম ১৮ জানুয়ারি জ্যামাইকার একটি নির্বাচন কেন্দ্রে আসেন।সেখানে উপস্থিত ভোটারদের উদ্দেশ্যে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ নয় এবং দু’টি প্যানেলের একটিতেও সবগুলো পদের জন্য মনোনয়ন জমা পড়েনি এমন অজুহাত দেখিয়ে তিনি নির্বাচন স্থগিত ঘোষনা করেন। এতে উত্তেজিত ভোটাররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।     নির্বাচনের দিনকে একটি সভা বলে বক্তব্য দেওয়ায় সাবেক সভাপতি আনোয়ার সুবহানীর উপর ক্ষিপ্ত হন সাধারন ভোটাররা। উপস্থিত অনেকেই অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের দিনকে কেন তিনি সভা বলে চালিয়ে দেবেন? দিনাজপুর জেলা সমিতিকে দ্বিখন্ডিত করার সুপরিকল্পিত দুরভিসন্ধি বলে উল্লেখ করেছেন অনেকেই।
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আসিফ করিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতাকারী একজন সভাপতি বাসায় তিনি দাওয়াত খেয়েছেন। সেই থেকে তিনি ওই প্রার্থীর জন্য পক্ষপাতিত্ব করে আসছেন।তিনি সংগঠনের সংবিধান লংঘন করে নিজের ইচ্ছায় ভোট স্থগিত করেছেন। তবে অনেকেই মনে করছেন দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ঐক্যবদ্ধ দিনাজপুর জেলা সমিতিকে ভেঙ্গে দেবার পরিকল্পনা করেছেন একটি স্বার্থানেষী মহল।
উল্লেখ্য, ভোট স্থগিত হবার পর উপস্থিত ভোটারদের হাজিরা সংক্রান্ত একটি কাগজে সবার স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়েছিল।স্বাক্ষরযুক্ত সেই কাগজটি কেবা কারা সেখান থেকে চুরি করে নিয়া যায়। কাগজটির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সাবেক সাধারন সম্পাদক জাবেদ চৌধুরী ভুট্টু ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়।উভয়ের মধ্যে উত্তেজিত ভাব দেখা দিলে পরে পরিস্থিতি শান্ত করেন উপস্থিত সদস্যরা।
সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, নির্বাচনকে বদ্ধ করতে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে এ কাজটি করেছে। নির্বাচন কমিশনের চরম অবহেলা ও অদক্ষতার ফলে দিনাজপুর জেলা সমিতির নির্বাচন বন্ধ হওয়ায় সাধারন সদস্যদের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ সংকটের সুষ্ঠ সমাধান দাবি করেছেন। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্য উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করতে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবু তাহের, তারেক জাহেরি ও রেজাউল করিমকে মনোনীত হয়েছেন। তারা উভয় গ্রুপের সাথে কথা বলে দ্রুত একটি সমাধানের ব্যবস্থা করবেন বলে জানা গেছে। গত দুই সপ্তাহেও এর কোন অগ্রগতি হয়নি বলে জানান আবু তাহের। তিনি বলেন উভয় পক্ষকে এক সাথে বসানোর দায়িত্ব পাবার পর তিনি সকলের সাথে কয়েক দফায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু সাবেক সভাপতি আনোয়ার সুবহানী ও সাবেক সাধারন সম্পাদক জাবেদ চৌধুরী ভুট্টু তার ফোন ধরেনি। ভূট্টু ফোন ধরে নিজের ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে ফোন দিবেন বলে আর ফোন করেননি। এছাড়াও অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে দিনাজপুর জেলা সমিতির নির্বাচন সংক্রান্ত জটিলতার কোন সমাধান হবে না বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, যাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে তিনি সমিতির কোন সদস্য নন। যেহেতু তিনি সমিতির সদস্য নন তাকে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন করাটাই ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এতে সংবিধান লংঘিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply