২৫ এপ্রিল ২০২৪ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:৪১/ বৃহস্পতিবার
এপ্রিল ২৫, ২০২৪ ৫:৪১ অপরাহ্ণ

চালসহ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বাসদের মিছিল ও সমাবেশ

     

অবিলম্বে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা রুখতে ও জনগণের ঘাড়ে ভ্যাটের বোঝা চাপানোর বাজেট প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা শাখা ৫জুন সোমবার বিকাল ৪ টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। দোস্ত বিল্ডিং প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউ মার্কেট মোড়ে এসে শেষ হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সদস্য সচিব কমরেড অপু দাশ গুপ্ত’র সভাপতিত্বে ও সদস্য শফি উদ্দিন কবির আবিদের পরিচালনায় মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদস্য রফিকুল হাসান, ডাঃ রতœা বৈষ্ণব তনু ও ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য সোমা।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “বর্ধিত কর ও ভ্যাট আরোপ করে মহাজোট সরকার ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যে বাজেট পেশ করেছে তা দরিদ্র-সাধারণ মানুষের জীবনকে আরো দুর্বিসহ করে তুলবে। এমনিতেই গত কয়েকমাস ধরে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় কয়েক হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কষ্ট লাঘবের কোন উদ্যোগ বাজেটে পরিলক্ষিত হয়নি। উল্টো ব্যাংকে রাখা আমানতের উপর সুদের হার কমিয়েই সরকার ক্ষান্ত হয়নি, নজিরবিহীনভাবে আবগারী শুল্ক আরোপ করেছে। এতে দুদিক থেকে জনগণের পকেট কাটা যাবে। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কৃষি-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমিয়ে সামরিক খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি সামগ্রিক উৎপাদকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং পুনঃমূল্যস্ফিতি ঘটবে। আয়কর দেয়ার সীমা আড়াই লাখ টাকা নির্ধারণ নিু মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাপনকে আরো কঠিন করে তুলবে। অন্যদিকে কালোটাকা সাদা করার সুযোগদান, লুটপাটকারী দূর্নীতিবাজদের কেবল প্রশ্রয় দিবে না; বিদ্যমান শোষণ-লুটপাটকে আরো তীব্র করে তুলবে। কার্যত সাধারণ মানুষের অর্থ স¤পদ নিংড়ে ধনীদের আরো ধনী করার লক্ষ্যেই এ বাজেট প্রণীত হয়েছে।”
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অন্য বছরের তুলনায় সব পণ্যের যথেষ্ট মজুদ আছে। সুতরাং সরবরাহ ঘাটতি দেখিয়ে দাম বাড়ানোর কোন যুক্তি নেই। কিন্তু বাস্তব চিত্র হল বাজারে মোটা-সরু সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা। শুধুমাত্র চাল কেনা বাবদ একটি পরিবারকে মাসে অন্ততঃ ৫০০-৬০০ টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিু আয়ের মানুষেরা। তাই অবিলম্বে চালের দাম কমিয়ে জনগণের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে গত ১ বছরে চাল, গম, চিনি, তেল, ডাল, ছোলা, পেয়াজ, রসুনসহ অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। এটা ¯পষ্ট যে, সরকারই ব্যবসায়ীদের অবাধ মুনাফার সুযোগ করে দিয়েছে। সরকার এক দফা গ্যাসের দাম বাড়ানোর পর এখন নতুন করে আরেক দফা গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কয়েকগুণ কমার পরও সরকার যেটুকু দাম কমিয়েছে তাতে তেলে উৎপাদিত বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ৩৪ পয়সা কমেছে। আবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে ইউনিট প্রতি ৩৪ পয়সা। আর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যে পরিমাণ কমেছে, তাতে বিদ্যুতের দাম আরো কমানোই যৌক্তিক। প্রকৃতপক্ষে বেসরকারী বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বেশী দামে বিদ্যুৎ কেনার কারণে পিডিবির লোকসান বাড়ছে। স¤পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে এর দায় চাপানো হচ্ছে জনগণের কাঁধে।”
নেতৃবৃন্দ সমাবেশ থেকে গ্যাস-বিদ্যুৎ ও চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর এবং বর্ধিত কর ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং জনগণকে সরকারের ফ্যাসিবাদী আক্রমণ প্রতিহত করতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply