২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / রাত ৯:৩২/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৯:৩২ অপরাহ্ণ

মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা

     

ইরান ও মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাত সর্ম্পকে কম-বেশি হয়তো সকলেই অবগত আছেন। ড্রোন হামলায় ইরানের কুদস বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হয়েছেন। এরপর ইরান ইরাকের মার্কিন ঘাটিতে হামলা চালায়। ঘটনা হয়তো আরও বেশকিছু হতেও পারে। তবে এসব ঘটনার মাধ্যমে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের ক্ষতি হবে তা নয়, বরং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে পড়েছে।

তবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির ছাপ পড়েছে বাংলাদেশেও। কারণ বাগদাদসহ ইরাকের বিভিন্ন শহরে প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক রয়েছে। আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে যারা মা-মাটি-দেশ ছেড়ে বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করে দেশে পাঠায় তাদের চিন্তা আমাদেরও করতে হবে। এটাই নৈতিকতা এবং দায়িত্ববোধ। বাংলাদেশের সরকারের জন্য এটা একটা বড় দায় হয়ে উঠবে। যদি মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে। যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, উত্তেজনাকর পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ইরান ও ইরাকসহ আশপাশের দেশগুলোতে থাকা বাংলাদেশের নাগরিকরা যেনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেন সেজন্য দূতাবাসগুলোকে সহায়তা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এতেই সব শেষ হতে পারে না। দেশগুলোতে বাংলাদেশী যেসকল নাগরিক রয়েছে তারা যদি সেখানে অনিরাপদ বোধ করেন, তবে তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক।

ইরান এবং ইরাকে দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, এই দু’টি দেশে থাকা বাংলাদেশীদের সরিয়ে নেয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও হয়নি এবং এখনই তাদের তেমন চিন্তা নেই। কিন্তু বিবিসির সূত্র থেকে জানা যায় ভিন্ন খবর। মধ্যপ্রাচ্যে থাকা কয়েকজন শ্রমিক জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে উৎকন্ঠা কাজ করছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ চরম ক্ষতির মুখেও পড়বে। কারণ বাংলাদেশের বড় শ্রম বাজার কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোই। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই উদ্বিগ্ন থাকবে এমন ঘটনায়। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে সকল দেশেরই লোকজন রয়েছে।

আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে বাংলাদেশ কারো পক্ষে নয়। বরং বাংলাদেশ উভয় দেশের বন্ধু। তবে বাংলাদেশ চায় না কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী হোক। বাংলাদেশ মতো অন্য দেশগুলোও এমন প্রত্যশা করেন। তবে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র কি চায়? সেটাই এখন সবার মূল লক্ষ্য। সংঘাত কি এখানেই থামবে? নাকি চলবে! প্রশ্ন অনেক। তবে উত্তর দিবে সময়।

কিন্তু এ প্রশ্ন-উত্তরের মাঝখানে যেন বাংলাদেশের মানুষের কোনো ক্ষতি না হয় সেটাই কাম্য। আমাদের দেশের বিরাট সংখ্যক জনবল সেখানে কাজ করে, পরিস্থিতি খারাপ হলে তাদের অসুবিধা হবে। এবং তারা যদি দেশে ফিরে আসে তবে অচল হয়ে যাবে অর্থনীতির চাকা। বাংলাদেশে রেমিটেন্স ফাইটররাই অর্থনীতির চাকাকে সচল করে রেখেছে এখনও। তাই এদের যেমন নিরাপত্তাও দিতে হবে, তেমনী তাদের কর্মক্ষেত্র সচল রাখতে হবে। দুটোই একটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ন বিষয়।

যারা দেশের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করবে তাদের জন্য দেশের পক্ষ থেকেও কিছু করা উচিত বলে আমি মনে করি। সেই সাথে আমি বিশ্বাস করি, বিশ্বের অন্যতম দুই শক্তিধর দেশ তাদের যুদ্ধ থেকে বিরত রাখবে। এবং বিশ্বের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্টা করবে। কারণ পুরো বিশ্ব শান্তি চায়। অশান্তির বিরোদ্ধে বিশ্ব এক হলে অবশ্যই শান্তি ফিরে আসবে। তাই সকল দেশের উচিত এই সংঘাত এখানেই বন্ধ করার জন্য আহ্বান করা। বিশ্বনেতারা সকলেই চাইলে এটি সমাধান করতে পারে। যদিও জঠিল একটি বিষয়, তবুও অসম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, পুরো বিশ্বের কথা চিন্তা করে হলেও দু-দেশের থেমে যাওয়া উচিত।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply