২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১:১৪/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ১:১৪ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনতার মাসে স্বাধীন ভাবনা

     

মাহমুদুল হক আনসারী
আমার গর্ব, আমার চেতনা মহান স্বাধীনতা। স্বাধীনতা সেটা যে সে কথা নয়। কেউ কাউকে স্বাধীনতা এমনিতেই দিয়ে দেয় না। আর কেউ অধীনস্থদের জুলুম নির্যাতন নিপীড়ন থেকে মুক্তি চাইলে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় না। স্বাধীনতা অর্জন সেটা বিশাল একটি বিষয়। বাংলার মানুষ তাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জনের জন্য স্বাধীনতার স্থপতি শহিদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক সাগর তাজা রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীন মানচিত্র সেদিন ফিরিয়ে আনে। একাত্তরের সে ইতিহাস সারা পৃথিবীর মানুষকে নাড়া দিয়েছিল। দীর্ঘ নয় মাস স্বসস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানচিত্র প্রতিষ্টিত হয়। পক্ষে বিপক্ষে বহু দেশ সেসময় ভূমিকা রেখেছিল। পর্যায় ক্রমে যেসব দেশ ও গোষ্ঠী বাংলার স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল তারাও এদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। জাতির জনকের নেতৃত্ব বুদ্ধিমত্তা এবং তাঁর সাহসী পদক্ষেপেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার সুফল অর্জন করেছে। স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দীতে আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশনেত্রী গণ মানুষের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে উন্নয়ন, অগ্রগতি, শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্টার মাধ্যমে বিশ্বের শাসকদের মধ্যে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। ধীরে ধীরে বাংলার আপামর জনগণের সুখ শান্তি অধিকার প্রতিষ্টার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। দেশের সবগুলো রাষ্ট্রীয় জন প্রশাসনকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনবান্ধব করে তুলছেন। প্রশাসনকে জনগণের সেবক হিসেবে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিকেন্দ্রীকরণ করেছেন। তথ্য প্রযুক্তি, চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসেবা তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের ধারে ধারে পৌছে গেছে। কৃষক ও কৃষি খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। জন প্রশাসনকে জনগণের নাগালের মধ্যে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে। কৃষকের ছেলৈ সন্তান এখন সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করে মাথা তুলে দাড়াচ্ছে। শিক্ষার ব্যাপক বিস্তারে শিক্ষার হার প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সার্বজনীন শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে স্কুল থেকে ঝরে পড়া অনেকটা কমে আসছে। প্রাথমিক শিক্ষাকে বিজ্ঞানভিত্তিক যুগোপোযুগি করে তোলা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির সব ধরনের সুবিধা দেশে এখন বিদ্যমান। ঘরে বসে শিক্ষক শিক্ষার্থী কৃষক ও পিছে পড়ে থাকা মানুষগুলো তার উপকার ভোগ করছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রায় ১৮ কোটি জনগণের এদেশের খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এখন সহজেই জনগণের নাগালে। কৃষক, শ্রমিক মেহনতি মানুষগুলো তাদের দৈনন্দিন রুজি রোজগার সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সামর্থ্যের মধ্যে আছে। জনগণ আয় রোজগার আর দৈনন্দিন জীবন জীবিকার জন্য উৎকন্ঠার মধ্যে নেই। যার যে পেশা যোগ্যতার মাপকাঠিতে সে তার জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে রাষ্ট্র সার্বিকভাবে সহযোগীতা করছে। শিক্ষার হার বৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর দায়িত্বকালীন এ সময়ে সারাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠছে। রাস্তা ঘাটের অবকাঠামো উন্নয়ন উন্নত বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সারাদেশের সড়ক পরিবহন উন্নয়ন একসাথেই চলছে। কোটি কোটি মানুষের দৈনন্দিন পরিবহনে যাতায়াত এখন সবগুলো পথেই সহজ থেকে সহজতর হয়েছে। লাখো কোটি টাকার সড়কের উন্নয়ন সারাদেশে চলমান দেখা যাচ্ছে। শিল্প কারখানা, ব্যবসা বাণিজ্য দিন দিন নতুন নতুন গতি ফিরে পাচ্ছে। দেশের মানুষের গড় আয়ু ও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত আছে। পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় বাংলাদেশ মাত্র অর্ধ শতাব্দীর ম্বাধীনতা অর্জনের বয়সে অসংখ্য উন্নয়ন অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মহান আল্লাহর অসীম দয়া আর মেহেরবানিতে দেশ সঠিক নেতৃত্ব ও কর্মসূচীতে এগিয়ে চলছে। দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র চক্রান্ত আর রাজনৈতিক অপ কৌশল দেখা গেলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতায় তাদের ষড়যন্ত্র সফল করতে পারছে না। জনগণ চায়, মানুষের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রগতি ও কল্যাণ সাধিত হোক। দেশ যেভাবে উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে চলছে তা চলমান থাকুক। বার বার ক্ষমতার পালাবদল রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা জনগণের কাম্য নয়। জনগণ চায় শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হোক। কিন্তু কোনো ধরনের অন্ধকারের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের রাজনীতি জন প্রত্যাশা নয়। দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষ শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার চর্চা আশা করে। বিশৃঙ্খল হানাহানি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেশের মানুষ মোটেও ভালো চোখে দেখে না। বহু রক্ত অনেক জীবনের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা কোনো অবস্থায় শঙ্কায় ঠেলে দেয়া যাবে না। ষড়যন্ত্র স্বাধীনতার সূর্য উদয়ের পর থেকে ছিল, সে ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত এখনো থেমে নেই। বাংলাদেশকে যারা শাসন উন্নয়ন অগ্রগতিতে পিছিয়ে রাখতে তৎপর ছিল তারা এখনো সক্রিয়। সে সকল ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা চক্রান্ত সম্পর্কে সর্বদা রাষ্ট্রীয় সবগুলো সেক্টরকে সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীন মানচিত্র ও নিরাপত্তা কোনো অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ রাখা যাবে না। বাংলার প্রতিটি ইঞ্চি মাটি ও বর্ডার সর্বাত্মক সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রাখতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশের কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূ খন্ড ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না। সর্বদা বর্ডার নিরাপদ রাখতে হবে। অবৈধ অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণভাবে দমন করতে হবে। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও আইন শৃঙ্খলা বিরোধী তৎপরতা কঠোরভাবে দমন করতে হবে। ধর্মীয় উগ্রবাদী জঙ্গি তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বাংলাদেশ সব শ্রেণী পেশার মানুষের সমান ভাবে অধিকার পাওয়ার দেশ। এখানে কোনো প্রকারের নাগরিক বৈষম্য গ্রহণযোগ্য নয়। সমান তালে সব মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সবগুলো সেবা প্রতিষ্টানকে নাগরিক প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয় উগ্রতা রাষ্ট্রকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। একটি গোষ্ঠী ধর্মীয় হানাহানির মাধ্যমে গোত্রে গোত্রে বিভাজন ও ফ্যাসাদ সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত দেখা যাচ্ছে। তাদের কঠোরভাবে রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সব ধর্ম গোত্রের নীতি আদর্শ ও ধর্মীয় অনুষ্টান পালনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। স্বাধীনতার আজকের এ দিনে বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে যাওয়ার দৃপ্ত শপথ গ্রহণ করতে হবে। দেশ মাটি মানুষের সার্বিক অধিকার প্রতিষ্টায় সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকতে হবে। শুধুমাত্র ক্ষমতার চেয়ার দখলের রাজনীতি জনগণ প্রত্যাশা করে না। জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে থাকতে হবে। স্বাধীন মানচিত্র স্বাধীন জাতি রক্ষায় জাতীয় ঐক্য রাখতে হবে। অঙ্গীকার করতে হবে এ দিনে দেশ ও মানচিত্র বিরোধী সব ধরনের ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়ার।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply