২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:০২/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৫:০২ অপরাহ্ণ

রোগীর ঔষধ চোরাই পদে কিনে নেয় নুরু সিন্ডিকেট : আবার একই ঔষধ বিক্রি করে দেয় ওইসব রোগীদের কাছে

     

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) যত অনিয়ম দুনীতি, অপকর্ম সব অপকর্মের গুরু হচ্ছে মোহাম্মদ নুরু। নুরুর রয়েছে চমেক হাসপাতালকে ঘিরে বিশাল একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করে পুরো মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বাণিজ্য করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের সিন্ডিকেটে রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী ও সন্ত্রাসী, স্থানীয় পুলিশ, চমেকের চিকিৎসক, কর্মচারী,  ফার্মেসীর মালিক, এ্যাবুলেন্সের মালিক ও চালক, ব্লাড ব্যাংকের লোকজনসহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এমন কোন খাত নেই যেখানে নুরু সিন্ডিকেটের হাত নাই। নুরুর আপন দুই ভাইসহ এই সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছে। তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যরা অনেকে এখন  বিপুল টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ছে। অনেকের রয়েছে একাধিক বিশাল বহুল বাড়ি ও গাড়িও। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, বহু অপকর্মের গুরু মোহাম্মদ নুরুর পিতা মৃত নজির আহমদ চমেক হাসপাতালের এক সময়ে নাইট গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার লাকসামে। বিএনপির ক্ষমতায় আসলে বিএনপি নেতাদের সুপারিশে নুরুর ভাই মোহাম্মদ বাহার চমেকের ব্লাড ব্যাংকে এবং আরেক ভাই মাসুদ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়দের প্রধান হিসেবে চাকুরী পান। তারা দুই জনের নামে হোস্টেলের পাশে সরকারি কোয়াটার রয়েছে। এই কোয়াটার থেকে রোগীদের জন্য দেয়া সরকারি ওষুধগুলো বাইরে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। তারা দুই ভাইসহ মিলে গড়ে তোলেন চমকে ঘিরে বিশাল সিন্ডিকেট। তারা চমেকের চাকুরীর আড়ালে জড়িয়ে পড়েন অবৈধভাবে ওষুধ ও এ্যাম্বুলেন্স, অবৈধভাবে ব্লাড ব্যবসা, এমনকি নব জাতক শিশু চুরি সিন্ডিকেটের সাথেও যুক্ত রয়েছে। নুরুর রয়েছে চকেম হাসপাতালের পাশে বড় বড় চারটি ফার্মেসী এগুলো হলেন হিরা ফার্মেসী, মিশাত ফার্মেসী, রাজ ফার্মেসী, নোবা ফার্মেসীসহ অধিকাংশ ফার্মেসী নুরু ও তার ভাইদের মালিকানাধীন। ফার্মেসীগুলোতে হাসপাতালে রোগীর জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ওষুধগুলো অবৈধভাবে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নুরু ও তার ভাইদের রয়েছে হাসপাতালের এ্যামবুলেন্সের ব্যবসা ও এসি ননএসি ৭টি এ্যাবুলেন্সও রয়েছে তাদের। নুরু সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় চমেক হাসপাতালের হাজার হাজার রোগী ও চিকিৎসক। তারা যেভাবে চান সেভাবে চলতে বাধ্য হন চমেকের লোকজন। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম এ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, চমেক হাসপাতালে সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে কিছু করা সম্ভব না, আমি নিজেই নুরুসহ সিন্ডিকেটের মাধমে অনেক হয়রানির শিকার হয়েছি, সিন্ডিকেটটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে চট্টগ্রামবাসীর রক্ত চুষে চুৃষে খাবে তারা। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা রোগী কল্যাণ সমিতির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাফেজ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সিন্ডিকেটটি মেয়র মহোদয় ভেঙ্গে দিলেও তারা কৌশলে রোগীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করে আসছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ নুরু বলেন, আমি এক সময়ে মেডিকেলে কাজ করতাম এখন করি না, পরিচিতদের সহযোগিতা করতাম, তবে ফার্মেসী আর এ্যাম্বুলেন্স ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভুইয়া বলেন, হাসপাতালের সিন্ডিকেটের বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। নুরু সিন্ডিকেটের বিষয়ে চমেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনালের মোহসেন উদ্দীন আহমেদ জানান, সিন্ডিকেট করে রোগীদের জিম্মি করে কেউ কিছু করে থাকলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, ইতোমধ্যে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে আমরা রোগীদের শতভাগ স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। হাসপাতালে দায়িত্বরত যারা রয়েছে তারা সবাই রোগীদের সেবা দেয়ার বিষয়ে আন্তরিক বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply