২৬ এপ্রিল ২০২৪ / ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ৪:৪৬/ শুক্রবার
এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বিএনপি মানুষের দুর্ভোগ ও গুজব নিয়ে রাজনীতি করে: সেতুমন্ত্রী

     

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি দুর্ভোগ এবং গুজবের রাজনীতি করে। তারা পেঁয়াজ , চাল ও লবণ নিয়ে রাজনীতি করেছে। এখন আবার সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে আন্দোলনের ইস্যু খুঁজছে। বুধবার দুপরে নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপি তাদের সব ঘাঁটি একে একে হারিয়ে ফেলছে। তারা আন্দোলনে ব্যর্থ, তারা নির্বাচনেও ব্যর্থ। তাদের আছে কি? তাদের আছে প্রেস ব্রিফিং, তাদের আছে গলাবাজি, তাদের আছে মিথ্যাচার, তাদের আছে ষড়যন্ত্র। আমরা জানি ষড়যন্ত্র কোথা থেকে আসে? তারা এখন ইস্যু খুঁজে বেড়ায়, পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি সেখান থেকে ইস্যু। কি লাভ হয়েছে? পেঁয়াজের আমদানি হচ্ছে এবং ক্ষেতের পেঁয়াজ কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে আসবে। কাজেই ওই সংকট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে। কিছু লোক অস্বাভাবিকভাবে সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি এখন গুজবের দল হয়ে গেছে। ফেসবুকে গুজব ছড়ায়। চালের বাজারে অস্থিতিশীল সৃষ্টি করতে সেখানেও গুজব। অথচ আমাদের মুজদই আছে ১৪ লাখ মেট্রিক টন চাল। আমরা কিছুদিন ধরে ভাবছিলাম উদ্বৃত্ত চাল বিদেশে রফতানি করবো। আমরা বাজার খুঁজে বেড়াচ্ছি। সেখানে তারা চালের বাজার অস্থিতিশীল করার জন্য চক্রান্ত করছে। সেই সিন্ডিকেটের পেছনে বিএনপি উস্কানিদাতা। মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের পর লবণ। দেশে লবণের প্রয়োজন দেড় লাখ টন। সরকারের কাছেই মজুদ আছে ৬ লাখ টন। কিন্তু হঠাৎ ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে লবণের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। এর পর জানা গেল সব ভুয়া।

তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ পরিবহন শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে যে কর্মবিরতি করছে, সেখানেও বিএনপি আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে এখান যদি কোনো ইস্যু খুঁজে পাওয়া যায়। ফখরুল সাহেব উস্কানি দিয়ে লাভ হবে না। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে আমাদের টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করছেন। আমি আশা করি এ ব্যাপারে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

তিনি বলেন,আমরা সড়কে শৃঙ্খলার জন্য এ আইন করেছি। কাউকে জেল-জরিমানা করতে নয়, শাস্তি দিতে নয়। সড়ক পরিবহনের শৃঙ্খলা চাই। এ শৃঙ্খলার জন্য আইন মেনে চলবেন- এটাই আমি সবার কাছে আশা করবো। আমি মালিক-শ্রমিক সবাইকে আবারো অনুরোধ করবো- প্লিজ আপনারা জনগণকে শাস্তি দেবেন না, জনগণকে দুর্ভোগে ফেলবেন না। আমি আশা করি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে অর্থবহ আলোচনা শেষে তারা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবেন, কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেবেন- এটাই আমি তাদের কাছে আশা করছি।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বিএনপি হচ্ছে বাংলাদেশ ভুয়া পার্টি। বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। কথায় কথায় নালিশ করে। দেশের মানুষ সাড়া দেয় না, বিদেশিদের কাছে নালিশ করে। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে সরানো যাবে না। আওয়ামী লীগের শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ, কোনো বিদেশি শক্তি নয়। তিনি বিএনপির উদ্দেশে বলেন, কথায় কথায় ভারত। ভারতের আনুগত্য লাভের জন্য গত নির্বাচনের আগে ঘুরে বেড়ান দিল্লিতে, কোলকাতায়। আনুগত্য পাননি, আনুগত্য ভিক্ষা করেন আপনারা। আমরা বন্ধুত্ব চাই, ভারতের সাথে আমরা আনুগত্য চাই না।চুক্তি আর সমঝোতা স্মারকের মধ্যে পার্থক্য তারা জানে না। সমঝোতা স্মারককে তারা বলছে আমরা চুক্তি করেছি। ফখরুল সাহেব পড়াশোনা কী করেন না। ইচ্ছে করে এসব বলছেন? একটা চুক্তিও এই সফরে হয়নি। চারটি এম ও ইউ স্বাক্ষর হয়েছে, তিনটি উদ্বোধন হয়েছে। কোনো চুক্তি হয়নি। অথচ চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে স্মারকলিপি দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাজনীতিতে অস্থিরতার কোনো মূল্য নেই। সৎ এবং আদর্শ ব্যক্তিরাই রাজনীতিতে সফল হবেন। বঙ্গবন্ধুর সততা ও সাহসিকতা তার সাফল্যের চাবিকাঠি। শেখ হাসিনার সততা, সাহস, পরিশ্রম ও কমিটমেন্ট তার সাফল্যের চাবিকাঠি। ত্যাগ করলে, পরিশ্রম করলে স্বীকৃতি পাওয়া যায়। আজ না হয় কাল মূল্যায়ন হবেই হবে। যদি আপনি ত্যাগ করেন, ত্যাগ বৃথা যাবে না। আমাদের নেত্রী বারবার এ কথাই বলেন, জোর করে, স্লোগান দিয়ে, বিশৃঙ্খলা করে নেতৃত্ব পাওয়া যায় না। এ নেতৃত্বের আবেদন জনগণের কাছে নেই। এটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে।

তিনি বলেন,আমাদের গর্ব হয় পৃথিবীর সেরা দু’জন প্রধানমন্ত্রীর একজন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের গর্ব হয় বিশ্বের ১০ জন প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়কের মধ্যে তিনি একজন। আমাদের আজকে গর্ব হয়, বঙ্গবন্ধুর রক্তাক্ত বিদায়ের পর গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সাহসী, বিচক্ষণ কূটনীতিক ও দক্ষ প্রশাসক শেখ হাসিনা। আমি আবারো বলবো, বারবার বলবো গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা শেখ হাসিনা। আমরা তার কর্মী, আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। আমাকে দিয়ে বিচার করুন- নোয়াখালী মরুভূমি থেকে মরূদ্যান হয়েছিল, অনেক কষ্টে মরূদ্যানকে সুজলা-সুফলা করা হয়েছে, তা রাখতেই হবে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম। এতে অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামিম,আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি সম্পাদক অসিম কুমার উকিল ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আজম।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী এমপি। বক্তব্য রাখেন এইচ এম ইব্রাহিম এমপি, মামুনুর রশিদ কিরন, এমপি, মোর্শেদ আলমএমপি ও আয়েশা ফেরদাউস এমপি প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু।

সম্মেলনে শেষে ওবায়দুল কাদের পুনরায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে খায়রুল আনাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী নাম ঘোষণা করেন। ইত্তেফাক এর সৌজন্য

 

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply