২০ এপ্রিল ২০২৪ / ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / দুপুর ১:০৩/ শনিবার
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ১:০৩ অপরাহ্ণ

মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ চট্টগ্রামে ৯

     

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ৯ ও কক্সবাজারে ৪ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে আবহাওয়াবিদ মো. রুহল কুদ্দুস এ তথ্য জানান।

আবহাওয়া অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজারে ৪ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

আবহাওয়াবিদ রুহল কুদ্দুস বলেন, শনিবার সকাল ৮টায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ৯ ও কক্সবাজার ৪ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে আবহাওয়া বিভাগ বলছে, এটি শনিবার সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা উপকূল (সুন্দরবনের নিকট দিয়ে) অতিক্রম করতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আজ ভোর থেকে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এর আগে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলের কাছাকাছি আসায় মোংলা ও পায়রায় ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়। পাশাপাশি কক্সবাজারে আগের ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়।

শুক্রবার আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, সন্ধ্যা ৬টায় নাগাদ এ ঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এ সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে সুন্দরবনের কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে শনিবার সকাল থেকেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে।

বুলবুলের প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে সারা দেশে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করায় নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল শনিবারের জেএসসি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া বিশেষ প্রস্তুতি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান শুক্রবার বিকেলে সচিবালয়ে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় ৭ জেলাকে ঝূঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি মাইকিং করে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হচ্ছে। এ জন্য ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply