২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:০৬/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৫:০৬ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু শিগগিরই

     

চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু হচ্ছে শিগগিরই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আগ্রহে এই মেট্রোরেল প্রকল্প গতি পেলো বলে জানা যায়।

সুত্র জানায়, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানিয়েছেন। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জন্য মেট্রোরেল বা এমআরটি লাইনের ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করার জন্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মেট্রোরেলের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রায় ছয় মাস আগে মেট্রোরেল চালুর ব্যাপারে মতামত চেয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)কে পত্র দিয়েছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। চট্টগ্রাম শহরে মেট্রোরেল চালু করা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছিল চসিক।

পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন শহরে এমআরটি নির্মাণের প্রাক যোগ্যতা সমীক্ষার জন্য বাসস্থান ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালটেন্টস লিমিটেড নামের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে ২০ লাখ টাকার ওয়ার্ক অর্ডার দেয় চসিক। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা প্রতিবেদনে তিনটি এমআরটি লাইনের প্রস্তাবনা করা হয়েছে। সাড়ে ২৬ কিলোমিটারের এমআরটি লাইন-১ (কালুরঘাট-বহদ্দারহাট-চকবাজার-লালখানবাজার- দেওয়ানহাট-পতেঙ্গা-বিমানবন্দর), সাড়ে ১৩ মিলোমিটারের এমআরটি লাইন-২ (সিটি গেট-একে খান বাসস্টপ-নিমতলী বাসস্টপ-সদরঘাট-ফিরিঙ্গিবাজার-শহীদ বশিরউজ্জামান স্কয়ার) এবং সাড়ে ১৪ কিলোমিটারের এমআরটি লাইন-৩ (অক্সিজেন-মুরাদপুর-পাঁচলাইশ-আন্দরকিল্লাহ-কোতোয়ালি-ফিরিঙ্গিবাজার এবং পাঁচলাইশ-একে খান বাসস্টপ লিঙ্ক।

লাইন-১ এ ২০টি স্টেশনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এগুলো হলো- কালুরঘাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, চান্দগাঁও সিএনবি বাসস্টপ, হাজেরা-তজু ডিগ্রি কলেজ, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, চকবাজার, জহুর আহমেদ চৌধুরী রোড, লালখানবাজার, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, বারিক বিল্ডিং, নিমতলী, সল্টগোলা ক্রসিং, সিইপিজেড, সিমেন্ট ক্রসিং, স্টিল মিল বাসস্টপ, পতেঙ্গা, পতেঙ্গা বীচ এবং এয়ারপোর্ট।

লাইন-২ এ ১২টি স্টেশনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হলো- সিটি গেট, কর্নেল হাট গেট, একে খান বাসস্টপ, সরাইপাড়া, নয়াবাজার, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, পোর্ট নিউ মার্কেট, নিমতলী, বারিক বিল্ডিং, সদরঘাট, ফিরিঙ্গিবাজার এবং শহীদ বশিরউজ্জামান স্কয়ার।

লাইন-৩ এ ১৫ স্টেশনের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো-অক্সিজেন, হাশেম বাজার রোড, মুরাদপুর, চকবাজার, চন্দনপুরা, আন্দরকিল্লাহ, কোতোয়ালি, ফিরিঙ্গিবাজার এবং পাঁচলাইশ-একে খান বাসস্টপ লিঙ্কে পাঁচলাইশ, মেডিকেল, জিইসি স্কয়ার, বিজিএমইএ ইনস্টিটিউট, ফয়’স লেক, পাহাড়তলী লিঙ্ক রোড এবং একে খান বাসস্টপ।

প্রতিটি এমআরটি লাইনের জন্য একটি ডিপো স্থাপন করতে হবে। প্রতিটি ডিপোর জন্য প্রায় ৬০ একর জমির প্রয়োজন হবে। ডিপোতে রোলিং স্টকের (রেল-কার) বিরতিকালীন বিশ্রাম, প্রাত্যহিক পরিষ্কারকরণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, অপারেশনাল কন্ট্রোল রুম সেন্টার (ওসিসি), স্টেব্লিং ইয়ার্ড, বহুমুখী ওয়ার্কশপ, পাওয়ার সাব-স্টেশন, ওয়াশিং ইউনিট এবং আনুষঙ্গিক অফিস ও ডরমিটরি, উদ্ধারকারী ক্রেইন স্টেশন, এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি টেস্ট ট্র্যাক।

লাইন-১ এ বহদ্দারহাট-লালখানবাজার সড়কে সিডিএর ফ্লাইওভার এবং লালখানবাজার-বিমানবন্দর সড়কে পতেঙ্গা থেকে ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজকে প্রকল্প সমপাদনে প্রতিবন্ধকতা ধরা হয়েছে। এ প্রতিবন্ধকতা সমাধান বিকল্প পথে বহদ্দারহাট-বাদুরতলা-কাপাসগোলা-চকবাজার-কাজীর দেউড়ি-লালখানবাজার লাইনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর জন্য লালখানবাজার-বিমানবন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভার কাজ স্থগিত অথবা ডিজাইন পুনর্বিবেচনা করে সমন্বয় করে অথবা ফ্লাইওভারের পাশ দিয়ে এমআরটি নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।

তিনটি লাইনের মোট দৈর্ঘ্য উল্লেখ করা হয়েছে সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার। স্টেশন থাকবে মোট ৪৭টি। প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রস্তাবে। ফলে সাড়ে ৫৪ কিলোমিটারে তিনটি মেট্রোরেল লাইনে সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৮৪ হাজার ২০২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

সমীক্ষায় বলা হয়, প্রতিটি মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার এবং গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার। একটি ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটির মাধ্যমে ঘণ্টায় এর দুই প্রান্তের মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী উভয়দিকে পরিবহন করা সম্ভব। প্রতি ১০ মিনিটে একটি মেট্রোরেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া যথেষ্ট বলে মনে করছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। – মানব জমিন

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply