২৯ মার্চ ২০২৪ / ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৩:৫১/ শুক্রবার
মার্চ ২৯, ২০২৪ ৩:৫১ অপরাহ্ণ

দ্রব্যমূল্য কমানো, ন্যায্য ভাড়ার তালিকা প্রদান ও রেশনিং চালুর দাবি

     

মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-২৪৫৩-এর কুলাউড়া উপজেলা শাখার এক সভা থেকে চাল, ডাল, তেল, লবন, ডিম, পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, বাজারদরের সাথে সঙ্গতি রেখে রিকশা শ্রমিকদের ন্যায্য ভাড়ার তালিকা প্রদান, স্থায়ী স্ট্যান্ড স্থাপন ও শ্রমজীবী জনগণের জন্য রেশনিং চালুর দাবি জানানো হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-২৪৫৩-এর কুলাউড়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার সন্ধ্যার সময় শহরের মাগুরা এলাকায় রিকশা শ্রমিক নেতা ইসলাম উদ্দিন খান আকাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-২৪৫৩-এর সভাপতি মে সোহেল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ দুলাল মিয়া। শ্রমিকনেতা আশিক খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শ্রমিকসভায় বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর সাবেক সভাপতি আবুল কালাম, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন কুলাউড়া উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ ছায়েদ মুন্সী, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিমউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মোঃ গিয়াস উদ্দিন, নির্মাণ শ্রমিক নেতা মেহেদী হাসান জলিল, রিকশা শ্রমিকনেতা আবু বক্কর সিদ্দিক, মোঃ মিজান মিয়া, এম ডি দুলাল, সুমন মিয়া প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন গ্রাম্য জোতদার মহাজনের শোষণে জমি-জমা হারিয়ে জীবিকার তাগিদে শহরে এসে মধ্যযুগীয় কায়দায় মানুষ হয়ে মানুষ টেনে নেওয়ার মত অমানবিক পেশার মাধ্যমে যাত্রী সাধারণের সেবা করলেও তার প্রতিদানে আমরা রিকশা শ্রমিকরা ন্যায্য ভাড়া পাই না। চাল, আটা, ডাল, তেল, লবন, ডিম, পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কয়েকগুণ বাড়লেও আমরা বাজারদরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ন্যায্য ভাড়া প্রদান করা না। এমতাবস্থায় বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আমরা মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছি। আমাদের জীবন ও জীবিকার প্রশ্নটি কখনও ভোট শিকারী প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গুরুত্ব পায়নি। ভোট আসলেই নানারকম মার্কা ও আর প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে তারা আমাদের কাছে আসেন, আর ভোট শেষ হলেই তারা আমাদের চিনতে পারেন না। তাই সরকারের পরিবর্তন ঘটলেও আমাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না, যারা ভোট নেন তারা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হলেও আমাদের অবস্থা দিন দিন শুধু খারাপই হয়। এর কারণ প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধারাবাহিকভাবে ধনিক-বনিক, শোষক-শাসক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করে চলে। বাংলাদেশ একটি নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী দেশ। এদেশের শ্রমিক-কৃষক-জনগণের ঘাড়ের উপর চেপে বসে আছে সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ-আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজিবাদের নির্মম শোষণ ও শাসন। তাই এর বিপরীতে শ্রমিক শ্রেণির দায়িত্ব হচ্ছে শোষণ মুক্তির লক্ষ্যে দাবি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে প্রচলিত শোষণমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রামকে অগ্রসর করা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে মোঃ ইসলাম উদ্দিন আকাশকে সভাপতি, মোঃ মিজান মিয়াকে সহ-সভাপতি, আবু বক্কর সিদ্দিককে সাধারণ সম্পাদক, মোক্তার মিয়াকে কোষাধ্যক্ষ, কাজী মোঃ মাসুদ মিয়াকে প্রচার সম্পাদক করে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-২৪৫৩-এর কুলাউড়া উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। একই সাথে মোঃ সবুজ মিয়াকে সভাপতি ও মোঃ মুক্তার হোসেনকে সহ-সভাপতি, আবু চাঁন মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ-২৪৫৩-এর কুলাউড়া পৌর কমিটি গঠন করা হয়।
সভা থেকে চাল, ডাল, তেল, লবন, ডিম, পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো, দফায় দফায় গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি গণবিরোধী পরিকল্পনা বাতিল এবং বছর বছর অযৌক্তিভাবে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি বন্ধ, বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ন্যায্য ভাড়ার তালিকা প্রদান, শহরের সুবিধাজনক স্থানে স্থায়ী স্ট্যান্ড স্থাপন, রিকশা শ্রমিকদের উপর জুলুম অত্যাচার বন্ধ, স্বল্পমূল্যে রেশনিং চালু, শ্রীমঙ্গলে স্থায়ী শ্রম আদালত স্থাপন ও সংশোধিত শ্রমআইন বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply