২৮ মার্চ ২০২৪ / ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / বিকাল ৫:০৫/ বৃহস্পতিবার
মার্চ ২৮, ২০২৪ ৫:০৫ অপরাহ্ণ

একশো পার্সেন্ট অবৈধভাবে ভর্তি হয়েছে ঢাবির ৩৪ শিক্ষার্থী

     

মুহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন 

বৃহস্পতিবার(১৯ সেপ্টেম্বর) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়(ঢাবি) সাদা দলের শিক্ষকবৃন্দ। এই সময় তারা ঢাবিতে অবৈধভাবে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানোয় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে অবৈধ উপায়ে ভর্তি শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল এবং এর সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান এবং পরীক্ষা দেয়া ছাড়া ভর্তির কোনো সুযোগ নেই বলে জানান।  যে ৩৪ জন শিক্ষার্থী  ভর্তি হয়েছে তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া ১০০ পার্সেন্ট অবৈধ বলে দাবি করেন।

জানা গেছে, একটি শীর্ষ জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ডাকসু ও হল সংসদের আট নেতাসহ ছাত্রলীগের ৩৪ নেতার ছাত্রত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে। অভিযুক্তরা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ হওয়ায় নির্বাচনের কয়েকদিন আগে তারা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের একটি সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি হন। ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল ওই কোর্সে ভর্তি হওয়া গেলেও তাদের কেউই তাতে অংশ নেননি।

আর এভাবে অবৈধ পন্থায় ভর্তির প্রতিবাদে এই মানববন্ধনটিমঅনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বাণিজ্য অনুষদের তিনবার নির্বাচিত সাবেক ডিন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষা ছাড়া বাণিজ্য অনুষদের কোনো প্রোগ্রামে  ভর্তির সুযোগ নেই। যারা ভর্তি হয়েছেন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী  বলব ১০০℅ অবৈধভাবে ভর্তি হয়েছেন।’

তিনি বলেন,’ ভর্তির নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশের যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাজুয়েট হতে হয়। রেজাল্ট সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে ন্যূনতম ৩ থাকতে হয়। দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। আর এই শর্ত পূরণ করতে পারলেই একজন শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারে এরপর লিখিত পরীক্ষা এবং ভাইভায় পাশের মাধ্যমে মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভর্তি নেয়া হয়।’

তিনি বলেন,’আমি কোনো দলের জন্য কথা বলছিনা আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী কথা বলছি।’

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন,’ গত মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সমর্থক একটি ছাত্র সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান ৩৪ জন নেতাকে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধীনে পরিচালিত “মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে” বিনা ভর্তি পরীক্ষায় অবৈধ প্রক্রিয়ায় ভর্তি করা হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর আমাদের নজরে আসে। নজিরবিহীন ও অশ্রুতপূর্ব এ ঘটনায় আমরা দারুণভাবে মর্মাহত এবং ক্ষুব্ধ। আমরা এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন,’অবৈধভাবে ভর্তি শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল এবং অবৈধভাবে ভর্তি প্রক্রিয়ার সাথে যারা জড়িত তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।’

এসময় তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর বিভিন্ন সময়ে হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।

পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের সঞ্চালনায়  মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক লায়লা নুর ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন হাসানুজ্জামান প্রমুখ।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply