২৪ এপ্রিল ২০২৪ / ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / রাত ১১:৩৭/ বুধবার
এপ্রিল ২৪, ২০২৪ ১১:৩৭ অপরাহ্ণ

লামা-ফাসিয়াখালী সড়কে সাড়ে তিন বছরে ১৬৬ দুর্ঘটনায় ৫৪ জনের মৃত্যু ফিটনেস গাড়ি, মৃত্যুর মিছিল থামানোর দাবী জানিয়ে সাধারণ ছাত্রদের স্মারকলিপি

     

 

মো.কামরুজ্জামান, লামা(বান্দরবান)

ধারণ ছাত্ররা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছে। লামা-আলীকদম ফাসিয়াখালী সড়কে ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬৬ টি দুর্ঘটনায় কমবেশি আহতের সংখ্যা জানা না গেলেও নিহতের সংখ্যা ৫৮ জন বলে জানাগেছে (!)। সড়ক কর্তৃপক্ষ ও পরিবহন সেক্টরের উদাসিনতাকে দায়ি করা হচ্ছে এসব দুর্ঘটনার জন্য।
সম্প্রতি লামা উপজেলার ৯৬ জন সাধারণ ছাত্রের স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরিত স্মারকলিপিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। স্মারকপত্রে প্রকাশ, এই অঞ্চলের জনগোষ্টি সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন। লামা উপজেলাটি একটি প্রাচীন জনপদ, সাবেক মহকুমা। এই উপজেলায় উৎপাদিত রাবার, শিল্পের একটি উল্লেখযোগ্য চাহিদা পূরণ করছে। হর্টিকালচার, ফলদ-বনজ ও মৎস্য সম্পদে পরিপূর্ণ এই জনপদ সাম্প্রতিক দশকে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘শুধুমাত্র পরিবহন সেক্টরের নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারণে লামাবাসীর কাঙ্খিত উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে’। ৩০-৪০ বছরের পুরনো বাস ও জীফে চড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লামা-চকরিয়া-চট্টগ্রাম যেতে হয় শতশত যাত্রীকে। এসব গাড়ি ও অদক্ষ চালক দ্বারা প্রতি বছরই অর্ধশত এর বেশি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে(!)। দিনে দিনে দূর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে চলছে। ২০১৬ সালে ৩৭টি দুর্ঘটনায় ২১ জন মানুষের প্রাণ হানী হয়, ২০১৭ সালে ২৪টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন মারা যায়, ২০১৮ সালে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন মারা যায় ও চলতি সালের হালনাগাদ ৪২টি দুর্ঘটনায় ৯জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছে(!)।
এই নিষ্ঠুর বাস্তবতায় জনগনের নিরাপদ যাতায়তের লক্ষে স্মারকলিপিতে তিনটি বিষয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামণা করছেন সাধারণ ছাত্ররা। এর মধ্যে ১। লামা থেকে সরাসরী চট্টগ্রামে বাস সার্ভিস চালু করণ। ২। মেয়াদোত্তীর্ণ ও অউপযোগি গাড়ি বা যানবাহন সমুহ নিষিদ্ধ করণ ও লাইসেন্সবিহীন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক/ অপেশাদার ড্রাইভার সনাক্ত করে, তাদের অপসারণ। ৩। লামা-চকরিয়া সড়কে বিপদজনক স্থানগুলো চিহ্নিত করে দুর্ঘটনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন।

এদিকে ২০ আগষ্ট লামা উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মােস্তফা জামাল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মাসহ সকল ইউপি চেয়ারম্যান, সংবাদ কর্মিরাসহ সকলে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিবহন সেক্টরের নেতৃবৃন্দদের আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, সড়ক দুর্ঘনা এড়ানোর লক্ষে ভালোমানের গাড়ি ও দক্ষ চালক দিতে হবে। অতিরিক্ত মালামাল ও ছাদে যাত্রী নেয়ার বিষয়েও হুশিয়ারী দেয়া হয়। সভায় পরিবহন সেক্টরের নেতারাও নিয়ম মেনে চলার আশ্বাস দিয়ে বলেন, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট ভেঙ্গে ঝুকিপূর্ন অবস্থা বিরাজ করছে। চালকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ঝুকিপূর্ন মোড়গুলোতে বড় আকারের সাইন ও কয়েকটি স্থানে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণের জন্য সভায় অন্যান্য সদস্যরা অনুরোধ জানান।

লামা-আলীকদম- ফাসিয়াখালী সড়কের দ্রুত সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে দুর্ঘটনার অন্য কারনগুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর দেয়া দরকার।

About The Author

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply