স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও শহীদ মিনার নেই লামায়
মো: ফরিদ উদ্দিন,লামা.
বান্দরবানের লামায় ৫২’র ভাষা আন্দোলনে শহীদ ও অমর একুশের স্মৃতিতে শহীদ মিনার নেই। বায়ান্ন থেকে শুরু হয়েছিল বাঙালীর জাতিস্বত্তার আন্দোলন সংগ্রাম। মায়ের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাঙালী সেদিন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি রাষ্ট্রভাষা উর্দু করে, বাঙালীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে তাদের পদানত রাখতে চেয়েছিল। শহীদ মিণারের গায়ে লিখা“সংসপ্তক” এসব গৌরবময় ইতিহাস জানতে প্রজম্ম,রা আগ্রহী এবং জানেনও। লামায় কোন শহীদ মিণার নেই। ৭০’র দশক থেকে লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের করিডোর ঘেসে তিনটি আরসিসি পিলারে ফুল দিয়ে শহীদদের স্বরণ করে আসছেন লামার প্রজম্মর পর প্রজম্ম। গত একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্যাপন উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পূর্ব-প্রস্তুতী সভায় দিবসটির চেতণায় উজ্জীবিত হওয়ার আহবান জানিয়ে, হালনাগাদ শহীদ মিণার না হওয়ায়, বক্তরা দু:খ প্রকাশ করেন। লামা পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে টাউন হল চত্বরে একটি আধুনিক মানের শহীদ মিণার নির্মাণের দাবী জানানো হয় প্রস্তুতী সভা থেকে।
২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে যারা জীবন দিয়েছিলেন, শহীদ হয়েছিলেন তারা এই বাংলার অমর সন্তান। সে দিন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠির বুলেটে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া সেই রক্তাক্ত স্মৃতি আমরা স্বরণ করে চলছি, ফুলে ফুলে সাজিয়ে দেই তাদের কবর ও তাদের স্বরণে নির্মিত শহীদ মিণার। শ্রদ্ধায় ভালবাসায় পবিত্রতায় আমরা এক নতুনতর চেতণায় ও দীপ্ততায় আবার শক্তি অর্জন করি। একুশের শোককে আমরা জাতীয় জীবনে শক্তি হিসেবে ধারণ করে চলেছি বলে যে কোন অন্যায়- অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারি। বাঙালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল একত্তরেও পাকিস্তানি সামরিক শাসক গোষ্ঠির দমন-পীড়ন, বৈষম্য-বঞ্চনার বিরুদ্ধে। বাংলার ছাত্র-জনতা রক্তাক্ত গেরিলা মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিজয় অর্জন করেছিল। বায়ান্ন থেকে শুরু হয়েছিল বাঙালীর জাতিস্বত্তার আন্দোলন সংগ্রাম।
মায়ের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাঙালী সেদিন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি রাষ্ট্রভাষা উর্দু করে, বাঙালীর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে তাদের পদানত রাখতে চেয়েছিল। সেই পাকিস্তানিদের অন্যায় সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বুকের তাজারক্ত ঢেলে দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করে যারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। সারা বিশ্বে আজ ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। এই দিনটির রক্তাক্ত ইতিহাসের বিবরণ ও অমর শহীদদের নাম শুনে- শ্রদ্ধায়-ভলোবাসায় পবিত্রতায় দুনিয়ার অন্যরাও শক্তি অর্জন করে। আমরা বাঙালীরাসহ সারা বিশ্বে স্বরণ করে চলছি, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালাম, শফিউর রহমান, অলিউল্লাহ, আবদুল আওয়াল, একজন অজ্ঞাতনামা বালকসহ আরো অনেককে।
সুন্দর সুন্দর শহীদ মিণার স্থাপন করে দেশের প্রতিটি জেলায়-উপজেলায় তথা সারা দুনিয়া ব্যপি বাঙলার অস্তিত্ব-বাঙালীর অস্তিত্বদানে যারা অকাতরে প্রাণ দিয়েছে, তাদেরকে স্বরণ করছেন, শ্রদ্ধা ও মর্যাদার সাথে। দু:খের নয় শুধু, লজ্জারও বিষয় সাবেক মহকুমা লামা উপজেলা সদর, পৌর শহরে আজ অবধি একটি শহীদ মিণার নির্মিত হয়নি। ভাষা শহীদদের স্বরণে লামা পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র টাউন হল চত্বরে একটি আধুনিক মানের শহীদ মিণার নির্মানের জন্য স্থানীয়রা পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের আসু হস্তক্ষেপ কামণা করছেন। “লামায় একটি সুন্দর শহীদ মিণার স্থাপন” প্রজম্মের এই প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসবে একুশের ও স্বাধীনতা চেতণা লালনকারীরা।
লামা সচেতন নাগরিক কমিটির নেতারা ক্ষোভ ও দু:খ প্রকাশ করে বলেন,আমাদের বান্দরবান জেলার সাংসদ বীর বাহাদুর এমপি। তিনি ৫ বার নিবার্চিত হয়ে ও তিনি একবার জন্য স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর ও লামায় শহীদ নেই এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহন করেনি।বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পক্ষের সরকার এ সরকারের আমলে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়নি দু:খ জনক ।আশা করি সরকার দ্রুত লামায় শহীদ মিনার নিমার্ন করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এদিকে লামা উপজেলা নিবার্হীন অফিসার খিংওয়ান নু বলেন,শহীদ মিনার নেই সত্য।তবে মহীদ মিনানের নিমার্নের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তার পাঠানো হয়েছে।