রাঙ্গনিয়ায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার
জাহেদুর রহমান সোহাগ, (রাঙ্গুনিয়া) চট্টগ্রাম
সপ্তাহ পেরোলে ঈদ।প্রিয়জনের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিতে রমজানের শুরু থেকেই বাজারমুখি ক্রেতারা। ঈদ সামনে রেখে ক্রেতাদের মন জয় করতে রমজানের প্রথম থেকেই চোখ ধাঁধানো রং আর মনকাড়া কারু কাজে নানা রঙে;নানা ঢংয়ের কাপড়ে সেজেছেউপজেলার বিভিন্ন বাজারগুলো।
এ বছর বিদ্যুৎব্যবহারের উপর সরকারী নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়ায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য রাঙ্গুনিয়ায় বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে তেমন আলোকসজ্জা করা হয়নি। তবে কেউ কেউ নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে সামান্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা রেখেছে। শুধুমাত্র ক্রেতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণ সিকিউরিটির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে মার্কেট সূত্রে জানা গেছে।
সরেজমিনে উপজেলার শান্তিরহাট, গোচরা, সরফভাটা, রোয়াজারহাট, চন্দ্রঘোনা, রানীরহাট, ধামারহাট, পদুয়ার রাজারহাট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন এলাকার ফুটপাত সহ ইতিমধ্যে মার্কেটের সব দোকানগুলোতে বিভিন্ন কাপড় দিয়ে দৃষ্টিনন্দন সাজে সাজিয়েছে। প্রতিটি মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্যণীয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ঈদের বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন পছন্দের জিনিসটি কেনার জন্য।
রমজানে সবাই ঈদের কেনাকাটায় যেমন ব্যস্ত তেমন উপভোগ করছে। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের যাবতীয় ব্যবস্থা করেছেন দোকানীরা। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়। পুরো রাত অবধি চলে কেনাকাটা। অন্য বছরের তুলনায় কাপড়ের দাম দ্বিগুনেরও বেশি হওয়ায় ক্রেতারা অর্থ সংকটে পড়েছেন অনেকেই। এ বছর পুরুষের চেয়ে মেয়েদের কাপড়ের আমদানি বেশি বলে জানালেন একজন ব্যবসায়ী। ঈদ বাজারে তৈরি পোশাক লুঙ্গি, শার্ট, প্যান্ট, কসমেটিকস ইত্যাদি বিক্রি হলেও কিছুটা বেকায়দায় আছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। তারপরও ব্যবসার সুনাম রক্ষার কারণে দোকান খোলা রাখছেন তারাও।
অন্য বছরে রতুলনায় এ বছর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল থাকায় গভীর রাত পর্যন্ত দোকান খোলা থাকছে। ক্রেতারা কেনা কাটা করছেন নির্ধিদ্বায়। ঈদকে সামনে রেখে মুদির দোকানীরাও সেজেছে অন্যভাবে। তারাও গভীর রাত পর্যন্ত খোলা রাখছে সেমাই, চিনি, ছোলা ইত্যাদি বিক্রির জন্য।
দোকানীদের মধ্যে কয়েকজন বললেন, এবারের ঈদ বাজারে শাড়ির মধ্যে নেটকাথান, জামদানি, লেহেঙ্গা, মেয়েদের জন্য ফ্রক, থ্রিপিসের মধ্যে নেটকাতান, টিসুকাতান, চারুলতা, জলপরী বেশ দামি হলেও ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে প্রতিনিয়ত।
সকাল ১০ টা থেকে শুরু হয় বেচাকেনা। একটানা বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। মাঝকানে বিরতি দিয়ে ইফতারের পর থেকে আবার বেড়ে যায় ক্রেতাদের আনাগোনা। চন্দ্রঘোনায় দোকানের এক বিক্রেতা জানায়, ক্রেতারা আর আগের মতো বিশেষ কোন নামের কাপড়ে মজছেন না। তবে ভারতীয় ও পাকিস্তানি বিভিন্ন কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। রোয়াজারহাটের একটি কসমেটিক্স দোকানের বিক্রেতা ফরহাদ জানায়, দোকানে বিভিন্ন কাপড়ের সাথে মিলিয়ে মেয়েরা বিভিন্ন কসমেটিক্স কিনছে। দোকানে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভীড় থাকে বলে সে জানায়।
উপজেলার ধামাইরহাট থেকে ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, পরিবারকে নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে কেনাকাটা করতে এসেছি। পছন্দ অনুযায়ী সকলের জন্য কাপড় পাওয়া গেলেও দাম একটু বাড়তি বলে তিনি জানান।
এদিকে উপজেলার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন মার্কেটে সকাল থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ের সৃষ্টিহয়। এসময় রাস্তায় অপরিকল্পীত ও অবৈধগাড়ি পাকিং করার কারণে সৃষ্ট হয় তীব্র যানজটের। এতে উপজেলাবাসীর চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।